

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


এইচআইভি বা এইডস একটি ভয়াবহ রোগ, যা এখনও বিশ্বের বহু দেশে বিস্তার লাভ করছে। বাংলাদেশসহ অনেক দেশেই এই ভাইরাস নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। প্রতি বছর অনেক মানুষ এই রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারাচ্ছেন।
চিকিৎসাবিজ্ঞান দীর্ঘদিন ধরে এই রোগ প্রতিরোধ ও চিকিৎসার উপায় খুঁজে যাচ্ছে। রোগ সম্পর্কে সঠিক ধারণা থাকলে প্রতিরোধ আরও সহজ হয়—এ কারণেই জানা জরুরি, কীভাবে এই ভাইরাস ছড়ায়।
অনেকের মনে ধারণা রয়েছে, কেবলমাত্র অনৈতিক বা ঝুঁকিপূর্ণ যৌন সম্পর্কের মাধ্যমেই এইচআইভি ছড়ায়। কিন্তু বাস্তবে ভাইরাসটি ছড়ানোর আরও কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পথ রয়েছে।
এইচআইভির মূল বাহক হলো হিউম্যান ইমিউনো ডেফিশিয়েন্সি ভাইরাস, যা মানুষের রক্ত ও দেহরসে টিকে থাকে। সংক্রমিত ব্যক্তির রক্ত, বীর্য বা অন্যান্য দেহরস অন্যের শরীরে প্রবেশ করলেই সংক্রমণের ঝুঁকি তৈরি হয়। তাই একে যৌনবাহিত রোগ হিসেবে উল্লেখ করা হলেও যৌন সম্পর্ক ছাড়াও ছড়ানোর উপায় রয়েছে।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ভাইরাস শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতাকে ধীরে ধীরে দুর্বল করে দেয়। ফলে সাধারণ সংক্রমণও প্রাণঘাতী হয়ে উঠতে পারে এবং শেষ পর্যন্ত এইডসের দিকে নিয়ে যায়।
যৌন সম্পর্ক ছাড়া আরও যেসব কারণে এইচআইভি সংক্রমণ হতে পারে ১. বিয়ের আগে রক্ত পরীক্ষা না করা
বর বা কনে যে কেউ একজন ভাইরাসের বাহক হলে, বিবাহের পর স্বাভাবিক দাম্পত্য সম্পর্ক থেকেই অন্যজন আক্রান্ত হতে পারেন। তাই বিয়ের আগে রক্ত পরীক্ষা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
২. ব্যবহৃত সিরিঞ্জ বা সূচ ব্যবহার
প্রতিবার ইনজেকশন নেওয়ার সময় নতুন ও স্টেরাইল সিরিঞ্জ ব্যবহার না করলে সংক্রমণের ঝুঁকি থাকে।
৩. দূষিত সূচ দিয়ে চিকিৎসা বা ইনজেকশন দেওয়া
এইডস আক্রান্ত ব্যক্তির ব্যবহৃত সূচ যদি অন্যের গায়ে লাগে, তাতেও ভাইরাস ছড়াতে পারে।
৪. মায়ের শরীরে ভাইরাস থাকলে শিশুর মধ্যে সংক্রমণ
গর্ভকাল, প্রসব অথবা স্তন্যপানের সময় শিশুর শরীরেও ভাইরাস পৌঁছে যেতে পারে।
৫. ব্যয়বহুল চিকিৎসার কারণে অনেক ক্ষেত্রে ঝুঁকি বেড়ে যায়
আধুনিক চিকিৎসা রোগীর আয়ু কিছুটা বাড়াতে পারে, তবে সেগুলো সবার নাগালের মধ্যে নয়—ফলে অনেক রোগী সঠিক চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত থাকেন।
৬. ঝুঁকিপূর্ণ যৌন আচরণের সঙ্গে যুক্ত পেশাজীবীরা
ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশে কাজ করা ব্যক্তিদের মধ্যে সংক্রমণ তুলনামূলক বেশি দেখা যায়।
৭. পরীক্ষা ছাড়া রক্ত গ্রহণ
জরুরি পরিস্থিতিতে রক্ত নেওয়ার আগে অবশ্যই এইচআইভি পরীক্ষিত নিরাপদ রক্ত ব্যবহার করা জরুরি।
এইচআইভির সম্ভাব্য লক্ষণ ১. ঘন ঘন জ্বর
দীর্ঘদিন ধরে হালকা বা মাঝারি মাত্রার জ্বর থাকতে পারে।
২. গলায় ব্যথা ও খাবার গিলতে অসুবিধা
গলার প্রদাহ বা ফোলা ব্যথা বাড়াতে পারে।
৩. ত্বকে র্যাশ বা লালচে দাগ
গলা বা মাথার ত্বকে র্যাশ হতে পারে, সঙ্গে অতিরিক্ত ঘাম হওয়া শুরু হয়।
৪. রাতের ঘামে ভিজে যাওয়া, পেটের সমস্যা
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়ায় বমি ভাব, ডায়রিয়া বা দুর্বলতা দেখা দিতে পারে।
কি করা উচিত?
এই লক্ষণগুলো দেখা দিলে নিজের শরীরের ঝুঁকি এড়িয়ে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াই সবচেয়ে ভালো উপায়। সময়মতো পরীক্ষা ও চিকিৎসা জীবন রক্ষা করতে পারে
মন্তব্য করুন

