রবিবার
০৯ নভেম্বর ২০২৫, ২৫ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
রবিবার
০৯ নভেম্বর ২০২৫, ২৫ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

২৬ সালের জুনের মধ্যে বাতিল হচ্ছে যেসব দলিল 

এনপিবি ডেস্ক
প্রকাশ : ০৮ নভেম্বর ২০২৫, ০৭:৫১ পিএম আপডেট : ০৮ নভেম্বর ২০২৫, ০৮:০৪ পিএম
সংগৃহীত ছবি
expand
সংগৃহীত ছবি

ভূমি ব্যবস্থাপনাকে স্বচ্ছ এবং জালিয়াতিমুক্ত করতে সরকার একটি বড় পদক্ষেপ নিয়েছে। ভূমি মন্ত্রণালয়ের উচ্চ পর্যায়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামী ২০২৬ সালের জুন মাসের মধ্যে ছয় ধরনের দলিল চিরতরে বাতিল ঘোষণা করা হবে। যেসব দলিলে জালিয়াতি, প্রতারণা বা আইনগত ত্রুটি রয়েছে, সেগুলো এরপর আর কোনোভাবেই বৈধ দলিল হিসেবে গণ্য হবে না।

সরকারের এই সিদ্ধান্তের ফলে জুলাই ২০২৬ থেকে সারাদেশে ‘ডিজিটাল ভূমিজরিপ বিডিএস’ (BDLand System) কার্যক্রম আরও জোরদার হবে। এর মাধ্যমে সকল বৈধ দলিল অনলাইনে সংরক্ষণ করা হবে।

ভূমি মন্ত্রণালয়ের সূত্রে জানা গেছে, কেবল বৈধ দলিলগুলোই স্ক্যানিং ও অনলাইনকরণের আওতায় অন্তর্ভুক্ত হবে। এর বিপরীতে, জালিয়াতি ও ত্রুটিপূর্ণ বলে চিহ্নিত নিম্নোক্ত ছয় ধরনের দলিল সম্পূর্ণভাবে বাতিল ঘোষণা করা হবে:

১. হেবা দলিল: যেসব হেবা দলিল প্রতারণা বা জালিয়াতির মাধ্যমে করা হয়েছে, কিংবা অসুস্থ বা অক্ষম ব্যক্তিকে ব্যবহার করে টিপসসহীহ নেওয়া হয়েছে—সেসব দলিল বাতিল করা হবে। হেবা দলিলের বৈধতা যাচাই করে প্রতারণার মাধ্যমে তৈরি দলিল চিহ্নিত করা হবে।

২. ওসিয়তনামা দলিল: আইন অনুযায়ী ওসিয়ত করতে হলে সর্বোচ্চ এক-তৃতীয়াংশ সম্পত্তি এবং ওয়ারিশের বাহিরে কারও নামে করা যায়। এই নিয়ম লঙ্ঘন করে তৈরি ওসিয়তনামা দলিলগুলো কার্যকর থাকবে না এবং বাতিল ঘোষণা করা হবে।

৩. রেজিস্ট্রেশনবিহীন দলিল: যেসব দলিল রেজিস্ট্রেশন না করেই মালিকানা দাবি করা হয়েছে, সেগুলো বাতিল বলে গণ্য হবে। রেজিস্ট্রেশনবিহীন দলিল কখনোই সরকার স্বীকৃত নয় এবং অনলাইনকরণের আওতায় আসবে না।

৪. জাল দলিল: প্রতারণা বা জালিয়াতির মাধ্যমে তৈরি দলিল চিহ্নিত করে বাতিল করা হবে। এসব দলিলের মাধ্যমে মালিকানা অর্জনকারীরা জমির অধিকার হারাবেন।

৫. ক্ষমতার অপব্যবহার করে অর্জিত দলিল: রাজনৈতিক প্রভাব বা পেশিশক্তি ব্যবহার করে যারা জমির মালিকানা নিয়েছেন, তাদের দলিল যাচাই করে বাতিল করা হবে।

৬. অংশের চেয়ে বেশি বিক্রিত দলিল: যারা পারিবারিক বা যৌথ সম্পত্তিতে নিজেদের অংশের চেয়ে বেশি পরিমাণ জমি বিক্রি করেছে, তাদের সেই দলিলও বাতিল করা হবে। আদালতের মাধ্যমে প্রকৃত ওয়ারিশদের অংশ ফেরত দেওয়া হবে।

সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই পুরো প্রক্রিয়াটি ২০২৬ সালের জুনের মধ্যেই শেষ করা হবে, যাতে জুলাই থেকে সম্পূর্ণ অনলাইনভিত্তিক ভূমি রেকর্ড ও দলিল ব্যবস্থাপনা কার্যকর হয়।

ভূমি বিশেষজ্ঞদের মতে, এই পদক্ষেপ বাস্তবায়িত হলে দেশের দীর্ঘদিনের ভূমি জালিয়াতি, দ্বৈত দলিল ও ওয়ারিশ জটিলতা অনেকাংশে দূর হবে।

google news সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন