রবিবার
০৯ নভেম্বর ২০২৫, ২৫ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
রবিবার
০৯ নভেম্বর ২০২৫, ২৫ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নতুন ভূমি আইন: ওয়ারিশরা সহজেই ফিরে পাবেন প্রাপ্য সম্পত্তি

এনপিবি ডেস্ক
প্রকাশ : ০৮ নভেম্বর ২০২৫, ০৭:৩৪ পিএম
নতুন ভূমি আইন
expand
নতুন ভূমি আইন

সারা দেশের ভূমি মালিকদের জন্য এক আশার খবর নিয়ে এসেছে নতুন প্রণীত আইন ও বিধিমালা। ‘ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন, ২০২৩’-এর আওতায় এখন থেকে প্রতারণা বা অন্যায্যতার শিকার বঞ্চিত ওয়ারিশরা সহজে তাদের প্রাপ্য উত্তরাধিকার সম্পত্তি ফিরে পেতে পারবেন। এই আইনটি বিশেষত পাঁচ শ্রেণির ভূমি মালিকদের জন্য বড় সুবিধা নিয়ে এসেছে, যাদের দলিল বা রেকর্ড সূত্রে মালিকানা থাকলেও উত্তরাধিকার সূত্রে তাদের অংশ বঞ্চিত হয়েছে।

‘ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন, ২০২৩’-এর অধীনে ইতোমধ্যেই সারা দেশে এই কার্যক্রম শুরু হয়েছে।

  • আইন অনুযায়ী, ভুল রেকর্ড বাতিল করা এবং প্রতারণা বা জালিয়াতির মাধ্যমে সম্পত্তি দখলকারীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হচ্ছে।

  • এর ফলে প্রকৃত ওয়ারিশরা তাদের হারানো সম্পত্তি পুনরুদ্ধারের সুযোগ পাচ্ছেন।

অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, পিতা কোনো নির্দিষ্ট সন্তানকে বেশি সম্পত্তি দিয়ে অন্যদের বঞ্চিত করেন অথবা আত্মীয় নন এমন কাউকে ওসিয়ত করে নাম অন্তর্ভুক্ত করেন। নতুন আইনের কারণে:

  • বঞ্চিত ওয়ারিশরা আদালতের মাধ্যমে সেই অন্যায্য দলিল বা রেকর্ড বাতিল করে তাদের অধিকার ফিরে পেতে পারবেন।

  • যারা অন্যদের উত্তরাধিকার বঞ্চিত করে সম্পত্তি দখল করেছেন, তারা ভূমিদস্যু হিসেবে অভিযুক্ত হবেন। বঞ্চিত ওয়ারিশরা আইনি পদক্ষেপ নিলে সহজেই তাদের প্রাপ্য অংশ উদ্ধার করতে পারবেন।

আইনটি মুসলিম উত্তরাধিকার (ফারাইজ) সংক্রান্ত বেশ কিছু জটিলতা নিরসনে সহায়ক হবে:

  • ত্যাজ্য ঘোষণা অবৈধ: মুসলিম উত্তরাধিকার আইনে পিতা কোনো সন্তানকে ত্যাজ্য ঘোষণা করতে পারেন না। কেউ নোটারি বা লিখিতভাবে এমন ঘোষণা দিলেও তা আইনি বৈধতা পাবে না। ফলে, ত্যাজ্য ঘোষিত সন্তানও তার উত্তরাধিকার সূত্রে অংশ পাবেন।

  • অংশ বঞ্চিত হয় না: কোনো সন্তানকে শরিক না ঘোষণা করলেও তার অংশ বঞ্চিত হয় না। এমন ঘোষণা থাকলে ওয়ারিশ আদালতের মাধ্যমে তা বাতিল করে নিজের অংশ ফেরত নিতে পারবেন।

  • রেকর্ডই চূড়ান্ত নয়: পিতার জীবদ্দশায় কোনো সন্তানের নামে সম্পত্তি রেকর্ড করা হলেও, অন্য সন্তানরা চাইলে রেকর্ড বাতিলের মামলা করতে পারবেন। কারণ, রেকর্ড মালিকানা প্রমাণের একমাত্র ভিত্তি নয়—এটি কেবল অস্থায়ী পরিচয় দেয়।

  • ওসিয়তের সীমা: মুসলিম আইনে সর্বোচ্চ এক-তৃতীয়াংশ (১/৩ অংশ) পর্যন্ত সম্পত্তি ওসিয়ত করা যায়। এর চেয়ে বেশি অংশ অন্য কাউকে দিলে বাকি ওয়ারিশরা ‘ভূমি প্রতিকার আইনের ধারা ৩৯ ও ৪০’-এর আওতায় মামলা করে ওসিয়তের অতিরিক্ত অংশ বাতিল করতে পারবেন।

তবে, কিছু নির্দিষ্ট শর্ত রয়েছে: ১৯৬১ সালের ১৫ জুলাইয়ের আগে ঘটে যাওয়া সম্পত্তি বঞ্চনার ক্ষেত্রে এই আইনের সুবিধা প্রযোজ্য হবে না। এর পরে ঘটে যাওয়া ঘটনায় আইনি পদক্ষেপ নিলে সম্পত্তি ফেরত পাওয়া সম্ভব।

google news সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন