বৃহস্পতিবার
৩০ অক্টোবর ২০২৫, ১৪ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বৃহস্পতিবার
৩০ অক্টোবর ২০২৫, ১৪ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

হার্ট ব্লক বা হৃদরোগজনিত সমস্যার হার ক্রমাগত বাড়ছে

এনপিবি ডেস্ক
প্রকাশ : ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০২:১৯ পিএম
হৃদযন্ত্রের ধমনি ব্লক হয়ে যাওয়ার সমস্যা ভয়াবহ আকার ধারণ করছে
expand
হৃদযন্ত্রের ধমনি ব্লক হয়ে যাওয়ার সমস্যা ভয়াবহ আকার ধারণ করছে

বর্তমানে নারীদের মধ্যে হার্ট ব্লক বা হৃদরোগজনিত সমস্যার হার ক্রমাগত বাড়ছে। এর পেছনে রয়েছে একাধিক কারণ— শারীরবৃত্তীয়, হরমোনজনিত এবং জীবনযাপনসংক্রান্ত কিছু বিশেষ বৈশিষ্ট্য।

হৃদরোগ এখন আর শুধুমাত্র পুরুষদের রোগ নয়; এটি নারীদের মধ্যেও দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমাদের দেশেও নারীদের মধ্যে করোনারি আর্টারি ডিজিজ (সিএডি)— অর্থাৎ হৃদযন্ত্রের ধমনি ব্লক হয়ে যাওয়ার সমস্যা ভয়াবহ আকার ধারণ করছে।

এই পরিস্থিতিতে নারীর মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন নেওয়ার পাশাপাশি কিছু স্বাস্থ্যকর অভ্যাস মেনে চলাও অত্যন্ত জরুরি। একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, কিছু সাধারণ কারণই নারীদের মধ্যে হার্ট ব্লকের ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে।

এ বিষয়ে ভারতের প্রখ্যাত কার্ডিওলজিস্ট ডা. হেমামালতি রথ জানান, নারীর মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ হলো করোনারি আর্টারি ডিজিজ (সিএডি)। উদ্বেগজনক বিষয় হলো— বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এই রোগের পেছনে বংশগত ঝুঁকি ছাড়াও একাধিক শারীরিক ও মানসিক কারণ জড়িত থাকে।

সাধারণত, নারীরা যখন সিএডিতে আক্রান্ত হন, তখন তাঁদের বয়স তুলনামূলক বেশি হয় এবং কার্ডিওভাসকুলার ঝুঁকিও পুরুষদের তুলনায় বেশি থাকে। যদিও নারীরা সাধারণত পুরুষদের তুলনায় প্রায় ১০ বছর বয়সে পিছিয়ে থেকে এই রোগে আক্রান্ত হন, কিন্তু ধূমপান, ডায়াবেটিস এবং অকাল মেনোপজ নারীদের প্রাকৃতিক প্রতিরোধক্ষমতা দুর্বল করে ফেলে, ফলে রোগের গতি ত্বরান্বিত হয়।

বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, ডায়াবেটিস আক্রান্ত নারীদের সিএডিতে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা পুরুষদের তুলনায় প্রায় সাত গুণ বেশি। ধূমপান নারীদের শরীরে ইস্ট্রোজেন হরমোনের কার্যকারিতা কমিয়ে দেয়, যা হৃদরোগের ঝুঁকি আরও বাড়িয়ে তোলে। এর ফলে নারীরা পুরুষদের তুলনায় আরও দ্রুত এবং ভয়াবহ রকমের হার্ট অ্যাটাকের শিকার হন।

নারীদের হৃদরোগের ক্ষেত্রে কিছু নির্দিষ্ট ঝুঁকিপূর্ণ কারণ কাজ করে, যেগুলো পুরুষদের মধ্যে কম দেখা যায়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য:

১. মেনোপজ: ঋতু বন্ধের পর শরীরে ইস্ট্রোজেন হরমোনের পরিমাণ হঠাৎ কমে যায়, যা হৃদপিণ্ডের স্বাভাবিক সুরক্ষায় ব্যাঘাত ঘটায়। ২. গর্ভাবস্থার জটিলতা: যেমন উচ্চ রক্তচাপ, গর্ভকালীন ডায়াবেটিস ইত্যাদি। ৩. অটোইমিউন রোগ: যেমন রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস ও সিস্টেমিক লুপাস। ৪. মাইগ্রেন ও দীর্ঘস্থায়ী অবসাদ। ৫. অকাল মেনোপজ। ৬. অকাল প্রসব। ৭. পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম (PCOS)। ৮. রক্তস্বল্পতা (অ্যানিমিয়া)।

এছাড়া, নিম্ন-আর্থসামাজিক অবস্থানে থাকা নারীদের মধ্যে হৃদরোগের প্রকোপ তুলনামূলকভাবে বেশি দেখা যায়। আধুনিক জীবনের দ্রুতগতি, শহুরে একাকীত্ব, কর্মজীবী নারীদের উপর চাপিয়ে দেওয়া অতিরিক্ত মানসিক চাপ এবং জীবনের সঙ্গে লড়াই— সব মিলিয়ে নারীদের মধ্যে ডিপ্রেশন বা বিষণ্ণতা একটি সাধারণ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে, যা হৃদরোগের অন্যতম প্রধান কারণ।

google news সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন