শুক্রবার
১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ৪ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শুক্রবার
১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ৪ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ছাত্রী ইনস্টিটিউট ও রিসার্চ সেন্টারের জন্য ৭৭ কোটি টাকার বরাদ্দ পেল বেরোবি

রংপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৬:২৫ পিএম
রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়
expand
রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়

রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) দীর্ঘ পাঁচ বছরেরও বেশি সময় ধরে বন্ধ থাকা মেয়েদের ১০ তলা বিশিষ্ট ছাত্রী হল ও রিসার্চ ইনস্টিটিউট প্রকল্পের কাজ দ্রুত শুরু হতে যাচ্ছে।

বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের এক চিঠির মাধ্যমে প্রকল্পটির অনুমোদন দেওয়া হয়। এতে প্রায় ৭৭ কোটি ৫ লাখ টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। বিষয়টি বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মো. শওকাত আলী নিশ্চিত করেন।

এ প্রসঙ্গে উপাচার্য ড. মো. শওকাত আলী বলেন, এটি আমাদের জন্য অত্যন্ত আনন্দের খবর। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের আর কষ্ট করে ক্যাম্পাসের বাইরে থাকতে হবে না। বর্তমানে আমাদের তীব্র আবাসন সংকট রয়েছে। এই প্রকল্পের কাজ শুরু হলে সে সংকট অনেকটাই কেটে যাবে। পাশাপাশি রিসার্চ ইনস্টিটিউট চালু হলে গবেষণার পরিবেশ আরও সমৃদ্ধ হবে। খুব শিগগিরই প্রকল্পের কাজ শুরু হবে।

বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রীদের জন্য শহীদ ফেলানী হলে মাত্র ৩৪৪টি আসন রয়েছে, যা মোট ছাত্রীর তুলনায় অপ্রতুল। অন্যদিকে নানা দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগে মেয়েদের ১০ তলা বিশিষ্ট হলের নির্মাণকাজ দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ ছিল। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে ছাত্রীদের আবাসন সংকট অনেকটাই লাঘব হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা কাজে গতি আনতে এবং আবাসন সংকট নিরসনের জন্য ২০১৭ সালের ৪ জানুয়ারি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চুয়াল কনফারেন্সের মাধ্যমে ওই তিন প্রকল্পের নির্মাণকাজের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। কিন্তু পরে প্রকল্পের নকশা ও পরামর্শক পরিবর্তন এবং নির্মাণ ব্যয় বাড়িয়ে নতুন করে বরাদ্দের আবেদন জানানোর পর দুর্নীতির অভিযোগ উঠলে ইউজিসি নির্মাণকাজ বন্ধ করে দেয়। নির্মাণকাজ শেষ না হওয়ায় ব্যাহত হচ্ছে গবেষণা কার্যক্রম এবং চরম পর্যায়ে দাঁড়িয়েছে শিক্ষার্থীদের আবাসন সংকট।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, উপাচার্য ড. একেএম নুর-উন নবীর সময়ে প্রকল্পের কাজ দ্রুত এগোচ্ছিল। তিন মেগা প্রকল্পের কাজে বেশ গতি ছিল। শেখ হাসিনা হল ও ড. ওয়াজেদ রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের পাঁচতলা পর্যন্ত এবং স্বাধীনতা স্মারকের কাজ ৯০ শতাংশ শেষ হয়।

তবে পরবর্তী উপাচার্য ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহর সময়ে নির্মাণাধীন দুটি ভবনের নকশা পরিবর্তন ও পরামর্শক প্রতিষ্ঠান পরিবর্তন করে তিনগুণ পর্যন্ত বাড়তি বরাদ্দের আবেদন করেন।

ড. ওয়াজেদ রিসার্চ ইনস্টিটিউটের ভবন নির্মাণ ব্যয় ২৬ কোটি ৮৭ লাখ থেকে বাড়িয়ে ৬০ কোটি ৯৯ লাখ, শেখ হাসিনা হলের বরাদ্দ ৫১ কোটি ৩৫ লাখ থেকে বাড়িয়ে ১০৬ কোটি ৯৩ লাখ টাকা এবং স্বাধীনতা স্মারকের নির্মাণ ব্যয় ১ কোটি ৩০ লাখ থেকে বাড়িয়ে ৪ কোটি ৩০ লাখ টাকা প্রস্তাব করেন ড. কলিমউল্লাহ।

এ ঘটনায় দুর্নীতির অভিযোগ উঠলে ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে নির্মাণকাজ বন্ধ করে ইউজিসিকে তদন্তের নির্দেশ দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পেয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রকল্পগুলোর কাজ বন্ধ হয়ে দেয়। এরপর থেকে অনিশ্চয়তায় ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের এই তিন মেগা প্রকল্পের কাজ।

এ দুর্নীতির দায়ে সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. নাজমুল আহসান কলিম উল্লাহ গ্রেফতার হয়ে বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন।

google news সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

X