

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


বিশেষ বৃত্তির নীতিমালা পুনর্বিন্যাস ও সংশোধনসহ তিন দফা দাবিতে টানা প্রায় ৯ ঘণ্টা ধরে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) উপাচার্যকে প্রশাসনিক ভবনে অবরুদ্ধ করে রাখেন আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন পরিচালিত ‘মেধাবী প্রজেক্ট’-এ অবস্থানরত শিক্ষার্থীরা।
সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন (ভিসি ভবন) ব্লকেড করে এ কর্মসূচি শুরু করেন আন্দোলনকারীরা। এসময় ভিসি ভবনের প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেন তারা। প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত আন্দোলনকারীরা ভিসি ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছিলেন।
কর্মসূচি চলাকালে শিক্ষার্থীরা ‘হল না প্রকল্প, প্রকল্প প্রকল্প’, ‘বৃত্তি আমার অধিকার’, ‘আমাদের অধিকার আমাদের দাও, না হলে গদি ছেড়ে দাও’, ‘বৈষম্যের গদিতে আগুন জ্বালো একসাথে’, ‘আমার সোনার বাংলায় বৈষম্যের ঠাঁই নাই’, ‘তুমি কে, আমি কে—জবিয়ান জবিয়ান’সহ বিভিন্ন স্লোগান দেন।
আন্দোলনে অংশ নেওয়া বাংলা বিভাগের ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী শফিক বলেন, “আমরা আস-সুন্নাহ প্রকল্পে সম্পূর্ণ ফ্রিতে থাকি না। আমাদের নির্দিষ্ট অর্থ দিতে হয় এবং যেকোনো সময় সিট হারানোর আশঙ্কা থাকে। অথচ আমাদের বিশেষ বৃত্তি থেকে বাদ দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে, যা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। এই বৈষম্যের বিরুদ্ধেই আমাদের আন্দোলন।”
ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী বখতিয়ার ইসলাম বলেন, “এটি আমাদের পূর্বঘোষিত কর্মসূচি। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমাদের কর্মসূচি চলমান থাকবে। প্রশাসনের কাছে দ্রুত সময়ের মধ্যে আমাদের ন্যায্য দাবিগুলো মেনে নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।”
আন্দোলনকারীদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে— আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন পরিচালিত ‘মেধাবী প্রজেক্ট’-এ অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের সাধারণ শিক্ষার্থীদের মতো আবাসন বৃত্তি নীতিমালার আওতায় আনা, আস-সুন্নাহ প্রকল্পে অবস্থানরত শিক্ষার্থীরা কেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বৃত্তি থেকে বঞ্চিত হবে—এর যৌক্তিক ব্যাখ্যা প্রদান, ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর জন্য আবাসন ভাতা ন্যায্য ও নিশ্চিতভাবে বাস্তবায়ন এবং আবাসন বৃত্তিকে ‘মেধাভিত্তিক’ না করে ‘প্রয়োজনভিত্তিক’ করার লক্ষ্যে ৭০ শতাংশ উপস্থিতি, সিজিপিএ ও রি-অ্যাডমিশন সংক্রান্ত শর্ত বাতিল।
এ বিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বলেন, “আস-সুন্নাহ প্রকল্পে অবস্থানরত শিক্ষার্থীরা বিশেষ বৃত্তির নীতিমালা পুনর্বিন্যাসের দাবিতে একটি স্মারকলিপি প্রদান করেছে। সেটি আমি ইতোমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের বৃত্তি কমিটির কাছে পাঠিয়েছি। সংশ্লিষ্ট কমিটি বিষয়টি পর্যালোচনা করে শিক্ষার্থীদের কোন কোন ক্ষেত্রে কীভাবে বৃত্তি দেওয়া যেতে পারে, সে বিষয়ে বিবেচনা করবে। যেহেতু এটি একটি নিয়মতান্ত্রিক ও দীর্ঘ প্রক্রিয়ার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট, তাই বিষয়টি বাস্তবায়নে কিছুটা সময় লাগবে।”
এর আগে বিশেষ বৃত্তি নীতিমালায় সংযোজিত অযৌক্তিক শর্তগুলোর সংশোধন ও পুনর্বিন্যাসের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ ও সংবাদ সম্মেলন করেন আস-সুন্নাহ প্রকল্পের শিক্ষার্থীরা। একইসঙ্গে তারা ভিসি ভবন ঘেরাও কর্মসূচির ঘোষণা দেন।
উল্লেখ্য, এ ঘটনার প্রেক্ষিতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত শিক্ষার্থীদের জন্য আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের ‘মেধাবী প্রজেক্ট’-কে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক বা আবাসিক হল হিসেবে বিবেচনা না করার অনুরোধ জানায় সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীরা।
মন্তব্য করুন
