

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে উপকূলীয় দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলা পিরোজপুরে বইছে নির্বাচনি হাওয়া।
জেলার তিনটি সংসদীয় আসনেই সম্ভাব্য প্রার্থীরা মাঠে সক্রিয় হয়ে উঠেছেন।
উঠান বৈঠক, গণসংযোগ, কর্মীসভা ও মতবিনিময়ের মাধ্যমে ভোটারদের কাছে যাওয়ার চেষ্টা করছেন রাজনৈতিক দলগুলোর নেতারা। ফলে জেলায় বিরাজ করছে স্পষ্ট নির্বাচনি আমেজ।
পিরোজপুরের তিনটি আসনেই মূল লড়াই হবে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর মধ্যে- এমনটাই মনে করছেন স্থানীয় রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।
ইতোমধ্যে জামায়াতে ইসলামী তিনটি আসনেই প্রার্থী চূড়ান্ত করে জোর প্রচারণা শুরু করেছে।
অপরদিকে বিএনপি দুইটি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করলেও পিরোজপুর-১ আসনে দ্বিতীয় দফার তালিকাতেও কাউকে মনোনয়ন না দেওয়ায় দলটির নেতাকর্মীদের মধ্যে হতাশা ও অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।
পিরোজপুর সদর, নাজিরপুর ও জিয়ানগর উপজেলা নিয়ে গঠিত পিরোজপুর-১ আসনে জামায়াতের একক প্রার্থী প্রয়াত দেলাওয়ার হোসেন সাঈদীর ছেলে মাসুদ সাঈদী। গত সাত-আট মাস ধরে তিনি শহর থেকে প্রত্যন্ত গ্রাম পর্যন্ত ধারাবাহিকভাবে সভা, সমাবেশ ও গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন।
মাসুদ সাঈদী বলেন, “আমাদের পিতা শহীদ আল্লামা সাঈদী যেভাবে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে মানুষের সেবা করেছেন, আমরাও সেভাবেই জনগণের পাশে থাকতে চাই। পিরোজপুরকে মাদক, সন্ত্রাস ও দুর্নীতিমুক্ত করে একটি উন্নত ও বাসযোগ্য জেলা গড়ে তুলতে চাই।”
অন্যদিকে বিএনপির এই আসনে মনোনয়ন নিয়ে ব্যাপক প্রতিযোগিতা চলছে। দলটির অন্তত নয়জন শীর্ষ নেতা মনোনয়ন প্রত্যাশী।
তাঁদের মধ্যে রয়েছেন বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক জেলা আহ্বায়ক আলমগীর হোসেন, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও সাবেক নাজিরপুর উপজেলা চেয়ারম্যান মো. নজরুল ইসলাম খান, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক এলিজা জামান, জেলা বিএনপির সদস্য সচিব সাইদুল ইসলাম কিসমত, যুবদলের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা জাহাঙ্গীর আলম দুলালসহ আরও অনেকে।
এছাড়া বিএনপির যুগপৎ আন্দোলনের সহযোগী ১২ দলীয় জোটের শরিক, সাবেক মন্ত্রী ও জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দারও এই আসনে প্রার্থী হতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
মনোনয়ন না হওয়ায় বিএনপির তৃণমূল পর্যায়ে বিভ্রান্তি দেখা দিলেও দলীয় নেতারা বলছেন, শেষ পর্যন্ত দলীয় সিদ্ধান্ত মেনেই সবাই ঐক্যবদ্ধ থাকবেন।
ভান্ডারিয়া, কাউখালী ও নেছারাবাদ উপজেলা নিয়ে গঠিত পিরোজপুর-২ আসনে বিএনপি ইতোমধ্যেই প্রার্থী ঘোষণা করেছে।
দলটির প্রার্থী আহাম্মেদ সোহেল মঞ্জুর সুমন দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় সক্রিয়। অপরদিকে জামায়াতের প্রার্থী প্রয়াত সাঈদীর মেঝ ছেলে শামীম সাঈদীও নিয়মিত সভা-সমাবেশ ও গণসংযোগ চালাচ্ছেন।
এই আসনে জাতীয় পার্টির (মঞ্জু) চেয়ারম্যান ও সাবেক মন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর প্রতিদ্বন্দ্বিতায় এলে ভোটের হিসাব-নিকাশে বড় পরিবর্তন আসতে পারে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
জেলার দক্ষিণাঞ্চলের মঠবাড়িয়া উপজেলা নিয়ে গঠিত পিরোজপুর-৩ আসনে বিএনপির প্রার্থী মো. রুহুল আমীন দুলাল এবং জামায়াতের প্রার্থী শরীফ আবদুল জলিল।
উভয় প্রার্থীই নির্বাচনি মাঠে সক্রিয় রয়েছেন। তবে জোটগত সিদ্ধান্তের কারণে এখানে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতায় এলে পরিস্থিতি ভিন্ন দিকে যেতে পারে।
সু-শাসনের জন্য নাগরিক (সুজন), সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক)সহ বিভিন্ন নাগরিক সংগঠনের নেতারা বলছেন, দীর্ঘদিন পর মানুষ প্রকৃত অর্থে ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ চায়।
নতুন ভোটাররাও একটি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের প্রত্যাশা করছেন।
পিরোজপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মো. নজরুল ইসলাম খান বলেন, “দল যাকে মনোনয়ন দেবে, সকল নেতাকর্মী তার পক্ষেই ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবে।”
জেলা জামায়াতের আমির তাফাজ্জল হোসাইন ফরিদ বলেন, “ভোটাররা যাতে নির্বিঘ্নে কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে পারেন, সে বিষয়ে আমরা সচেতন থাকব।”
মন্তব্য করুন
