

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার চরাঞ্চলে সম্প্রতি ক্ষুর্ধাত শিয়ালের উপদ্রব ভয়াবহভাবে বেড়েছে। প্রতিদিনই শিয়াল লোকালয়ে ঢুকে হাঁস-মুরগি ধরে খাওয়ার পাশাপাশি শিশু থেকে শুরু করে পথচারীদেরও আক্রমণ করে কামড়ে দিচ্ছে। মাত্র সাত দিনের ব্যবধানে লেছড়াগঞ্জ ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে ৪ জন শিশুসহ আরও অনেক মানুষকে কামড়ে আহত করেছে এই বন্যপ্রাণী। এতে করে প্রত্যন্ত এলাকার গ্রামের মানুষের মধ্যে শিয়াল-আতঙ্ক বিরাজ করছে।
মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) সরজমিনে উপজেলার লেছড়াগঞ্জ চরে গিয়ে কথা হয় স্থানীয়দের সাথে। তারা জানান, পাঠানকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪ শিশু শিক্ষার্থীসহ আরও কয়েকজন শিয়ালের কামড়ে আহত হয় পরে তাদের ডাক চিৎকারে লোকজন এগিয়ে এসে আহতদের উদ্ধার করে হরিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও ফরিদপুর নিয়ে যায়।
আহতরা হলেন- গঙ্গাধরদী এলাকার আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে আব্দুল্লাহ (৭) একই এলকার ইদ্রিসের মেয়ে ইভা আক্তার (৬), পাটগ্রাম এলাকার রাজু বিশ্বাসের ছেলে রাকিব (৫), একই এলাকার শেখ জহিরুলের ছেলে বিপ্লব (৯)।
ইভা আক্তারের বাবা ইদ্রিস জানান, আমার মেয়ে ঘরের বারান্দায় বসে বিকেলে পড়ছিলো সে সময় ১টা শেয়াল এসে কামড়িয়ে চলে যাওয়ার পরই আমাদের এলাকায় একই দিনে শেয়ালের কামড়ে আরও ১০ থেকে ১২ জন আহত হয়। আমার মেয়েকে ফরিদপুর থেকে ভেক্সিন দিচ্ছি। এছাড়াও আরও একজনকে কামড়ায় যার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে ঢাকা নিয়ে চিকিৎসা করাচ্ছে।
আহত রাকিবের মায়ের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, আমার ছেলেকে শেয়ালে অনেক কামড়িয়েছে। হরিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা শেষে আমরা ঢাকায় নিয়ে আসছি। এখন একটু ভালো আছে।
পাঠানকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ হাবিব খান বলেন, একই দিনে আমার বিদ্যালয়ের ৪ শিক্ষার্থীসহ আরও অনেককেই শেয়ালে কামড় দেই। এখনো বিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষার্থীসহ স্থানীয় সবাই শেয়াল আতঙ্কে রয়েছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. কাজী একেএম রাসেল বলেন, শিয়ালের কামড়ে আহত কয়েকজনকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে এক শিশুর অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে ঢাকা নিয়ে যায়।
এবিষয়ে হরিরামপুর উপজেলা বন কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি আমাদের বন্যপ্রাণী বিভাগে জানাচ্ছি।
ঢাকা বন্যপ্রাণী ব্যবস্থা ও প্রকৃতি সংরক্ষক বিভাগের বন্যপ্রাণী পরির্দশক নিগার সুলতানা বলেন, দিন দিন জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে বন্যপ্রাণীর খাবার ও বাসস্থান সংকট হচ্ছে যার কারণে হয়তো শেয়ালগুলো লোকালয়ে প্রবেশ করছে। বন্যপ্রাণী প্রকৃতির অংশ, আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্মকে ও প্রকৃতিকে রক্ষা করতে হলে বন ও বন্যপ্রাণীদের সংরক্ষণ করতে হবে। এবং এ বিষয়ে স্থানীয় জনসাধারণের সচেতনতা বৃদ্ধিতে উদ্যোগ নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন