

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে এক তরুণীর সঙ্গে পারিবারিকভাবে কাবিন রেজিস্ট্রি করেছিলেন মাইনউদ্দিন নামে এক যুবক। তবে কয়েক মাস পর স্ত্রীকে ঘরে তোলার বিষয়ে আলোচনা করতে তরুণীর বাড়িতে গেলে ঘটে একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা।
অভিযোগ অনুযায়ী, স্থানীয় হাবিবুর রহমান, আবদুল মান্নান, ইউপি সদস্য সিরাজুল ইসলাম ও বাবুল দেওয়ানসহ একদল যুবক মাইনউদ্দিনকে ঘিরে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন। পরে তাঁর বিরুদ্ধে অনৈতিক সম্পর্কের মিথ্যা অভিযোগ তুলে গভীর রাতে কাজি ডেকে পুনরায় কাবিন ও বিয়েতে বাধ্য করা হয়। এ সময় পুরো ঘটনাটি ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয়, যাতে বলা হয়-অনৈতিক কর্মকাণ্ডে ধরা পড়ে বিয়ে করেছেন মাইনউদ্দিন।
ঘটনার পর দুই পরিবারের সামাজিক মর্যাদা ক্ষুণ্ন হয়। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী মাইনউদ্দিন গত রোববার (৯ নভেম্বর) আদালতে মামলা দায়ের করেন। আদালত মামলাটি গ্রহণ করে লক্ষ্মীপুর জেলা গোয়েন্দা পুলিশকে (ডিবি) তদন্তের নির্দেশ দেন।
বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) সকালে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন ডিবির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহাদাত হোসেন টিটু।
মামলার সূত্রে জানা যায়, মাইনউদ্দিন কমলনগর উপজেলার হাজিরহাট বাজারে ইবনে সিনা পপুলার ডেন্টাল ক্লিনিকে চিকিৎসাসেবা দিয়ে আসছিলেন। অভিযোগ রয়েছে, অভিযুক্ত হাবিব ও আবদুল মান্নান তাঁর কাছ থেকে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। তিনি প্রতিবাদ করলে তারা পালিয়ে যায় এবং পরে এ ঘটনার জেরে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে।
প্রায় দুই মাস পর, বিয়ের দিনক্ষণ নির্ধারণের উদ্দেশ্যে মাইনউদ্দিন তাঁর হবু স্ত্রীর পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে গেলে অভিযুক্তরা গুজব রটিয়ে স্থানীয়দের জড়ো করে মব তৈরি করে। এরপর তাঁকে মারধর করে, জোরপূর্বক হুজুর ও কাজি ডেকে পুনরায় বিয়েতে বাধ্য করে। পুরো ঘটনাটি ভিডিও করে “অনৈতিক কাজে ধরা পড়ে বিয়ে”—এমন দাবি ছড়িয়ে দেয় সামাজিক মাধ্যমে।
এতে সামাজিকভাবে অপমানিত হয়ে মাইনউদ্দিন ইউপি সদস্য, কাজি ও আরও ছয়জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। আদালত মামলাটি ডিবিকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে।
তরুণীর মা নাজমা বেগম বলেন, আমার মেয়ের সঙ্গে মাইনউদ্দিনের কাবিন কয়েক মাস আগেই রেজিস্ট্রি করা ছিল। ঘটনার দিন আমি নিজেই মাইনউদ্দিনকে ডেকে আনি বিয়ের দিনক্ষণ নির্ধারণের জন্য। কিন্তু স্থানীয় ইউপি সদস্য বাবুল, সিরাজ ও হাবিবের নেতৃত্বে গুজব ছড়িয়ে শতাধিক মানুষ জড়ো হয়। পরে তারা মাইনউদ্দিনকে মারধর করে আমাদের জিম্মি করে এবং কাজি ডেকে পুনরায় কাবিন রেজিস্ট্রি করায়।
চর ফলকন ইউনিয়নের কাজি মো. শফি উল্লাহ বলেন, স্থানীয় ইউপি সদস্য সিরাজ আমাকে ফোন করে ঘটনাস্থলে নিয়ে যায়। সেখানে এক থেকে দেড়শ মানুষ উপস্থিত ছিল। পরে সবার সম্মতিতে আমি কাবিন রেজিস্ট্রি করি।
অভিযুক্ত ইউপি সদস্য ফারুক হোসেন বাবুল দেওয়ান ও সাবেক মেম্বার সিরাজুল ইসলামের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাদের ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
লক্ষ্মীপুর জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ওসি শাহাদাত হোসেন টিটু বলেন, মামলাটি আমরা পেয়েছি। তদন্ত করে দ্রুত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করা হবে।
মন্তব্য করুন
