কুষ্টিয়ায় ছাত্রলীগ নেতা সাদ্দাম গ্রেপ্তার

কুষ্টিয়ার আদালত চত্বরে আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে হত্যাচেষ্টা মামলার আসামি নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগ নেতা মো. সাদ্দাম হোসেনকে (৩৫) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

বুধবার (২৬ নভেম্বর) দুপুরে শহরের হাসপাতাল মোড় এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃত মো. সাদ্দাম হোসেন মিরপুর উপজেলার কাটদহচর গ্রামের মোশারফ হোসেনের ছেলে এবং জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ছিলেন। তিনি ওই মামলার ৩২ নম্বর এজাহারভুক্ত আসামি।

বিষয়টি নিশ্চিত করে কুষ্টিয়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোশাররফ হোসেন জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে হত্যাচেষ্টা মামলার আসামি সাদ্দামকে কুষ্টিয়া শহরের হাসপাতাল মোড় এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। পরবর্তীতে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আদালতে পাঠানো হবে।"

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের ২২ জুলাই কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও বর্তমান জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ইয়াসির আরাফাত তুষারের দায়ের করা একটি মানহানি মামলার বিবাদী হিসেবে মাহমুদুর রহমান কুষ্টিয়ার আদালতে হাজিরা দিতে আসেন।

এ সময় এজাহার নামীয়দের নির্দেশে বাদীকে দিনভর আদালত ভবনে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। পরে বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে আদালত চত্বরেই আমার দেশ সম্পাদকের ওপর সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা হামলা করে এবং ধারালো অস্ত্রের আঘাতে রক্তাক্ত জখম করে।

ঘটনার ছয় বছর পর গত বছরের ১০ অক্টোবর মাহমুদুর রহমান বাদী হয়ে পলাতক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, আওয়ামী লীগ নেতা মাহবুবুল আলম হানিফ, সাবেক তথ্য মন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, তৎকালীন পুলিশের মহাপরিদর্শক জাবেদ পাটোয়ারী, কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার মেহেদী হাসান ও কুষ্টিয়া মডেল থানার তৎকালীন ওসি নাসির উদ্দিনসহ ৪৭ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাত আরও ২০-৩০ জনের বিরুদ্ধে কুষ্টিয়া মডেল থানায় একটি হত্যা চেষ্টার অভিযোগ দেন।

এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, কুষ্টিয়া আদালতে দায়িত্বে থাকা কোর্ট ইন্সপেক্টর মনিরুজ্জামান বাদী মাহমুদুর রহমানকে পুলিশি প্রটেকশন দেয়ার আশ্বাস দেন এবং যশোর বিমানবন্দরে পৌঁছে দিতে একটি প্রাইভেটকার ভাড়ার ব্যবস্থা করার কথাও জানান। তার আশ্বাসে বাদী আদালত কক্ষ থেকে বের হয়ে দুই সফরসঙ্গীসহ সাদা রঙের একটি প্রাইভেটকারে ওঠেন।

গাড়িতে উঠার এক-দুই মিনিটের মধ্যেই ১১ থেকে ৪৭ নম্বর আসামিসহ আরও ১৫-২০ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি মারাত্মক অস্ত্র, রড, লাঠি-সোটা ও ইট-পাথর নিয়ে গাড়িটিকে ঘিরে ফেলে। তারা গাড়ির সব কাচ ভেঙে ফেলে এবং লাঠি ও পাথর দিয়ে আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের ওপর ধারাবাহিক হামলা চালিয়ে তাকে রক্তাক্ত জখম করে। হত্যাচেষ্টার অভিযোগে দায়ের করা এজাহারটি কুষ্টিয়া মডেল থানায় মামলা হিসেবে রেকর্ড করা হয়েছে।