

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


বাংলাদেশ-ভারত বাণিজ্য সম্পর্কে টানাপোড়েন ও ভারতে ইচ্ছাকৃতভাবে পাথরের দাম বৃদ্ধির অভিযোগে গত ১৩ নভেম্বর থেকে থমকে আছে কুড়িগ্রামের সোনাহাট স্থলবন্দরের আমদানি ও রফতানি কার্যক্রম।
দীর্ঘ ১১ দিন ধরে ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ থাকায় ব্যাপক লোকসানের মুখে পড়েছেন দুই দেশের আমদানি-রফতানিকারকরা। এর ফলে সরকারও হারাচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ রাজস্ব।
সরেজমিন সূত্রে জানা যায়, ২০১৩ সালের ৪ সেপ্টেম্বর দেশের ১৮তম স্থলবন্দর হিসেবে সোনাহাট স্থলবন্দর চালুর পর থেকেই ব্যবসায়ীদের কাছে এটি দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। ১৪ দশমিক ৬৮ একর জমিতে নির্মিত বন্দরে রয়েছে ৬০০ মেট্রিক টনের আধুনিক ওয়্যারহাউস, প্রায় দুই লাখ বর্গফুটের পার্কিং ও স্টকইয়ার্ড, প্রশাসনিক ভবন ও শ্রমিক বিশ্রামাগার।
তবে ৫ আগস্ট ২০২৪-এ আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকেই বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের অবনতি শুরু হয় এবং সেই উত্তেজনার প্রভাব পড়ে বাণিজ্য ব্যবস্থায়।
ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, মেঘালয়সহ সেভেন সিস্টারস অঞ্চলের রফতানি-আমদানিকারকরা ইচ্ছাকৃতভাবে পাথরের দাম বাড়িয়ে দিচ্ছেন। ফলে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা প্রতিটন পাথরে ২০০ থেকে ৩০০ টাকা পর্যন্ত লোকসান গুনতে বাধ্য হচ্ছেন। অন্যদিকে ভারতের দাম বেড়েছে ঠিকই, কিন্তু বাংলাদেশে পাথরের দাম টন প্রতি ২০০ থেকে ২৫০ টাকা কমেছে ফলে ক্ষতির মাত্রা আরো বেড়েছে।
সোনাহাট স্থলবন্দরের ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান, তাজুল ইসলাম ও নুর হোসেন রনি বলেন, ‘ভারতের রফতানিকারকরা অযৌক্তিকভাবে পাথরের দাম বাড়াচ্ছে। আমরা বাধ্য হয়েই আমদানি-রফতানি বন্ধ করেছি। ১১ দিন ধরে বসে আছি, প্রতিদিনই লোকসান বাড়ছে।’
আমদানিকারক ও রফতানিকারক নেতা আবুল হোসেন জানান, ‘আমরা পাথরের ন্যায্যমূল্য নির্ধারণ করে দিয়েছি। ভারতীয় পক্ষ থেকে দাম না কমালে আমদানি শুরু হবে না। আমাদের কথা জানালেও তারা এখনো কোনো সাড়া দেয়নি।’
সোনাহাট স্থলবন্দর শুল্ক স্টেশনের রাজস্ব কর্মকর্তা বদরুজ্জামান বলেন, ‘দুই দেশের ব্যবসায়ীদের মূল্যসংক্রান্ত সমস্যার কারণেই আমদানি-রফতানি বন্ধ রয়েছে। আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা চলছে।’
স্থলবন্দরের সহকারী পরিচালক (ট্রাফিক) মো. আমিনুল ইসলাম জানান, ‘বন্দর কার্যক্রম বন্ধ থাকায় সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হারাচ্ছে। দ্রুত সমাধান না হলে বাণিজ্যব্যবস্থায় আরো নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।’
বর্তমানে বন্দরের ভেতরে একমাত্র কিছু শ্রমিক আগের মজুদ পাথর প্রক্রিয়াজাতের কাজ করছেন। অন্য সব কার্যক্রম প্রায় অচল। ব্যবসায়ীরা বলছেন, এই সংকট অব্যাহত থাকলে দীর্ঘমেয়াদে বন্দরটির অস্তিত্বই হুমকির মুখে পড়তে পারে।
মন্তব্য করুন