বৃহস্পতিবার
১৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ৩ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বৃহস্পতিবার
১৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ৩ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বিজয় দিবসের একদিন পর কিশোরগঞ্জ শহরে উড়ে বিজয়ের পতাকা

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৫:৩৩ পিএম
আজ কিশোরগঞ্জ মুক্ত দিবস
expand
আজ কিশোরগঞ্জ মুক্ত দিবস

আজ কিশোরগঞ্জ মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে—১৭ ডিসেম্বর হানাদার মুক্ত হয় কিশোরগঞ্জ জেলা। ১৬ ডিসেম্বর দেশের অধিকাংশ এলাকা শত্রুমুক্ত হয়ে বিজয়ের আনন্দে মেতে উঠলেও কিশোরগঞ্জবাসী তখনও সেই বিজয়ের স্বাদ পায়নি। বিজয় দিবসের দিনেও কিশোরগঞ্জ শহর ছিল পাক হানাদারদের দোসর রাজাকার ও আলবদর বাহিনীর শক্ত ঘাঁটি। শহরের বিভিন্ন স্থানে তখনো উড়ছিল পাকিস্তানের পতাকা, আর গুলিতে ঝরছিল নিরীহ মানুষের রক্ত।

অবশেষে মুক্তিযোদ্ধাদের তীব্র ও সাঁড়াশি আক্রমণের মুখে স্থানীয় আলবদর ও রাজাকার বাহিনী আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়। আত্মসমর্পণের পর শহরের বিভিন্ন স্থানে নামানো হয় পাকিস্তানের পতাকা এবং উত্তোলন করা হয় স্বাধীন বাংলাদেশের লাল-সবুজ পতাকা। সেই মাহেন্দ্রক্ষণটি আসে ১৭ ডিসেম্বর।

মুক্তিযোদ্ধারা জানান, ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর সারারাত শহরজুড়ে চলে মুক্তিযোদ্ধাদের অব্যাহত আক্রমণ ও গোলাগুলি। এতে নির্ঘুম রাত কাটে শহরতলির মানুষের। পরদিন ১৭ ডিসেম্বর সকালে আসে কাঙ্ক্ষিত সেই মুহূর্ত। চারদিক থেকে সমন্বিত আক্রমণ চালিয়ে সকাল আনুমানিক ৯টার দিকে বীর মুক্তিযোদ্ধারা কিশোরগঞ্জ শহরে প্রবেশ করেন। তীব্র আক্রমণের মুখে রাজাকার ও আলবদর বাহিনী আত্মসমর্পণ করে এবং শহরের শহীদী মসজিদ প্রাঙ্গণে আনুষ্ঠানিকভাবে অস্ত্র জমা দেয়। একই সঙ্গে নামানো হয় পাকিস্তানের পতাকা।

এরপর শহরের আকাশে উত্তোলিত হয় স্বাধীন বাংলাদেশের লাল-সবুজ বিজয় পতাকা। পরাধীনতার শৃঙ্খল ভেঙে মুক্তির আনন্দে উল্লাসে ফেটে পড়ে শান্তিপ্রিয় জনতা। স্বজন হারানোর গভীর বেদনা ভুলে হাজারো মানুষ রাস্তায় নেমে এসে বিজয়ের আনন্দে শামিল হয়।

বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল গণি জানান, ১৭ ডিসেম্বর সকাল ৯টায় কমান্ডার কবীর উদ্দিন আহমদের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধাদের একটি দল শহরের পূর্ব দিক দিয়ে বিজয়ধ্বনি দিতে দিতে কিশোরগঞ্জ শহরে প্রবেশ করে। এরপর শহরের বিভিন্ন প্রবেশপথ দিয়েও মুক্তিযোদ্ধারা দলে দলে শহরে প্রবেশ করতে থাকেন।

মুক্তিযোদ্ধাদের অভিযানের সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে মুক্তিকামী জনতাও স্বাধীনতার স্লোগান দিয়ে রাস্তায় নেমে আসে। তিনি আরও বলেন, সামান্য লড়াইয়ের পরই পাকবাহিনীর দোসররা আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়। শহরের শহীদী মসজিদ প্রাঙ্গণে আনুষ্ঠানিকভাবে তারা অস্ত্র সমর্পণ করে। এভাবেই বিজয় দিবসের একদিন পর, ১৭ ডিসেম্বর, কিশোরগঞ্জের আকাশে উড়তে থাকে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা।

google news সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

X