

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলা সৈয়দপুর ইউনিয়নের গোলাবাড়িয়া সাগর উপকূল এলাকা সহ বিভিন্ন অঞ্চলে গাছিরা ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী খেজুরের গাছ প্রস্তুত ও রস সংগ্রহে।
জানা যায়,প্রতিবছর নভেম্বরের শেষ বা ডিসেম্বরের শুরুতেই এখানকার গাছ থেকে পাওয়া যায় সুমিষ্ট খেজুর রস। ইতোমধ্যে অধিকাংশ গাছ রস সংগ্রহের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে।এক সাপ্তাহ পর থেকে শুরু হবে গাছের রস সংগ্রহের ধুম।
সীতাকুণ্ডের উপজেলার,সৈয়দপুর, বাড়বকুণ্ড,বাশঁবাড়িয়া ইউনিয়ন সহ বিভিন্ন এলাকায় সরেজমিনে দেখা যায়,শীত মৌসুম শুরুর সঙ্গে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন উপকূলীয় অঞ্চলের গাছিরা।সকাল হলেই ঠুঙ্গি, বাইলধারা, দড়ি ও দা হাতে গাছিরা ছুটে যাচ্ছেন মাঠের পানে। নিপুণ হাতে খেজুর গাছের মাথা পরিষ্কার করছেন তারা। মাথা পরিষ্কারের পর গাছে দেওয়া হয় দুই সপ্তাহের বিশ্রাম। সব মিলিয়ে শীতের আগমনে খেজুর রস সংগ্রহ ও গুড় তৈরিকে ঘিরে গাছিদের চোখে-মুখে এখন আনন্দের হাসি।
উপজেলার সৈয়দপুর ইউনিয়নের ভাটিরখীল এলাকার স্থানীয় কৃষক বলেন,নভেম্বর,ডিসেম্বর,জানুয়ারী এই সময়ের মধ্যে আমরা একেক জন অন্তত ষাট থকে সত্তরটা খেজুর গাছ রস সংগ্রহে জন্য কাটা হয়।একটা খেজুর গাছ তিনবার কাটার পরে তাতে নলি লাগিয়ে রসের জন্য ভাঁড় পাতা হয়। একটা খেজুর গাছ থেকে দিনে দু'বার রস পাওয়া যায়।এখন রস সংগ্রহের সব প্রস্তুতি শেষ শুদু অপেক্ষা।আমরা প্রতি কেজি রস ৭০/৮০ টাকা বিক্রি করে থাকি।
বাড়বকুণ্ড ইউনিয়নের গাছিরা বলেন, আমার প্রায় চল্লিশটি খেজুর গাছ আছে। এর মধ্যে প্রায় গাছগুলোও প্রস্তুত করা হয়েছে।শীত বাড়ার সাথে সাথে সেগুলোতে রস সংগ্রহ শুরু হবে।এছাড়া প্রতি বছর খেজুর গাছের সংখ্যা কমছে। এতে করে খেজুর রস ও গুড় উৎপাদনের পরিমাণও কমে যাচ্ছে। এখনই নতুন করে গাছ লাগানোর উদ্যোগ না নিলে ঐতিহ্যবাহী খেজুর রস ও গুড় হারিয়ে যেতে পারে।
বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের এক বাসিন্দা জানান,এই গ্রাম ও পাহাড় অঞ্চলে অনেক খেজুর গাছ ছিল কিন্তু বর্তমানে তা হারিয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন শিল্প কারখানা গড়ে উঠার কারনে।ধংস হচ্ছে আশেপাশের কৃষি জমি।হারাতে বসেছে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী খেজুর গাছের রস।তবে উপজেলার কৃষি অধিদপ্তর থেকে কখনো খেজুরের গাছ আবাদ নিয়ে কথা বলতে বা, কৃষি মেলায় খেজুরের গাছ রোপণে উদ্বুদ্ধ করার পরামর্শ দিতে দেখা যায় না।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাবিবুল্লাহ জানান,সীতাকুণ্ডের এক পাশে রয়েছে সাগর আর এক পাশে রয়েছে পাহাড় এর মাঝে রয়েছে বিভিন্ন এলাকায় আট হাজার খেজুর গাছ।তার মধ্যে রস উৎপাদন হয় প্রায় চার হাজার গাছ থেকে। গত বছর প্রায় দেড় লক্ষ লিটার খেজুরের রস আহরণ করা হয়েছে এবং স্থানীয় চাহিদা পূরণ করে করে চট্টগ্রাম শহরের বাজারজাত করা হয়। এতে প্রায় দেড় কোটি টাকা রস বেচাকেনা হয়।বর্তমানে শীত মৌসুমে কৃষকদের এক মাত্র আয়ের উৎস।ইতো মধ্যে বিভিন্ন জায়গায় খালের পাড়ে এক হাজার খেজুরের গাছ রোপণ করা হয়েছে।
মন্তব্য করুন
