

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলায় বিভিন্ন সমবায় সমিতিতে আমানত রাখা প্রায় ৩২ হাজার গ্রাহকের ৭২০ কোটি টাকা ফেরতের দাবিতে আন্দোলন তীব্র আকার নিয়েছে। গত বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হওয়া উপজেলা পরিষদ ঘেরাও কর্মসূচির ধারাবাহিকতায় রোববার (১৬ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ভুক্তভোগীরা মশাল মিছিল বের করেন।
সন্ধ্যা ৬টার দিকে উপজেলা পরিষদ চত্বর থেকে শুরু হওয়া মিছিলটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে বালিজুড়ী বাজারের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে শেষ হয়। মশালের আলোর ঝলকানি আন্দোলনকে প্রতীকী রূপ দিয়েছে, যা ভুক্তভোগীদের অদম্য সংকল্পের নিদর্শন হিসেবে দেখা গেছে।
‘মাদারগঞ্জে বিভিন্ন সমবায় সমিতিতে আমানতকৃত অর্থ উদ্ধার সহায়ক কমিটি’র ব্যানারে আয়োজিত মশাল মিছিলে কমিটির নেতৃবৃন্দ ছাড়াও বিভিন্ন এলাকার হাজারো গ্রাহক অংশ নেন। সমাবেশে কমিটির আহ্বায়ক শিবলুল বারী রাজু বলেন, “আমাদের টাকা ফেরত না পাওয়া পর্যন্ত আন্দোলন বন্ধ হবে না। কেউ বাড়ি ফিরে যাবে না। সমিতির পরিচালকদের গ্রেপ্তার এবং দ্রুত অর্থ উদ্ধারের ব্যবস্থা নেওয়া হোক।”
তিনি আরও জানান, দীর্ঘদিন ধরে দফায় দফায় দাবি জানানো হলেও কোনো কার্যকর সমাধান হয়নি। তাই আন্দোলন আরও কঠোর করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সমাবেশে বক্তব্য দেন কমিটির সদস্য মাহাবুব আলম রতন, সোনা মোল্লাসহ বিভিন্ন এলাকার ভুক্তভোগীরা। তারা জানান, বহু মানুষের সঞ্চয় হারিয়ে পরিবারগুলো দিশেহারা হয়ে পড়েছে। তাদের ভাষায়— “আমাদের টাকা শুধু অর্থ নয়, এটি আমাদের সন্তান, পরিবারের নিরাপত্তা এবং ভবিষ্যৎ।
মাদারগঞ্জ মডেল থানার ওসি সাইফুল্লাহ সাইফ জানান, গত কয়েক দিন ধরে ভুক্তভোগীরা আন্দোলন করছেন। আজও তারা শান্তিপূর্ণভাবে মশাল মিছিল করেছেন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে টাকা উদ্ধারের চেষ্টা অব্যাহত আছে।
উল্লেখ্য, গত ১১–১৩ নভেম্বর পর্যন্ত ২৩টি ঝুঁকিপূর্ণ সমবায় সমিতির গ্রাহকরা টানা তিনদিন উপজেলা পরিষদ ঘেরাও করে সরকারি কার্যক্রম স্থবির করেন। সাপ্তাহিক ছুটির কারণে ১৪ ও ১৫ নভেম্বর বিরতি থাকলেও, রবিবার আন্দোলন নতুন রূপে পুনরায় শুরু হয়েছে।
ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন, প্রতিশ্রুতি শুনে আর সময় নষ্ট করা যাবে না। টাকা ফেরত না পাওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে।
মশালের আলোয় রঙিন রাস্তায় তাদের এই প্রতিবাদ যেন স্পষ্ট করে দেখাচ্ছে—মাদারগঞ্জের মানুষ তাদের অধিকার ফেরত না পাওয়া পর্যন্ত থামবে না।
মন্তব্য করুন