

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


উত্তর আফ্রিকার দেশ সুদানে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের একটি ঘাঁটিতে সন্ত্রাসীদের ড্রোন হামলায় শহীদ বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মেস ওয়েটার জাহাঙ্গীর আলম (৩০)-কে কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার নিজ গ্রামে সামরিক মর্যাদায় দাফন করা হয়েছে।
রবিবার (২১ ডিসেম্বর) বিকেল সোয়া ৪টার দিকে ঢাকার সেনানিবাস থেকে হেলিকপ্টারে করে জাহাঙ্গীর আলমের মরদেহ পাকুন্দিয়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের হেলিপ্যাডে পৌঁছায়।
সেখানে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে তাকে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়। পরে অ্যাম্বুলেন্সযোগে মরদেহ নেওয়া হয় উপজেলার জাঙ্গালিয়া ইউনিয়নের তারাকান্দি গ্রামে তার নিজ বাড়িতে। সন্ধ্যা সাড়ে ৫টার দিকে পারিবারিক জানাজা নামাজ শেষে স্থানীয় পারিবারিক কবরস্থানে সামরিক মর্যাদায় তার দাফন সম্পন্ন হয়। জানাজা ও দাফনকে ঘিরে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। স্বজনদের আহাজারিতে হৃদয়বিদারক পরিবেশের সৃষ্টি হয়।
নামাজে জানাজায় উপস্থিত ছিলেন সেনাবাহিনীর কিশোরগঞ্জ ক্যাম্পের কমান্ডার মেজর নিয়াজ মাখদুম, পাকুন্দিয়া সেনা ক্যাম্পের ওয়ারেন্ট অফিসার আবির আহমেদসহ সেনাবাহিনীর অন্যান্য কর্মকর্তা। এছাড়াও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রিফাত জাহান, কিশোরগঞ্জ-২ (কটিয়াদী-পাকুন্দিয়া) আসনের জামায়াতে ইসলামী মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী মাওলানা শফিকুল ইসলাম মোড়ল, পাকুন্দিয়া উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক তৌফিকুল ইসলামসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের স্থানীয় নেতৃবৃন্দ, নিহতের পরিবার-স্বজন এবং বিপুল সংখ্যক এলাকাবাসী জানাজায় অংশ নেন।
এর আগে একই দিন সকালে ঢাকার সেনানিবাসের কেন্দ্রীয় মসজিদে সকাল সোয়া ৯টার দিকে জাহাঙ্গীর আলমসহ শহীদ অন্যান্য বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের রাষ্ট্রীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
আইএসপিআর জানায়, গত ১৩ ডিসেম্বর সুদানের আবেই এলাকায় জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের একটি ঘাঁটিতে সন্ত্রাসীদের বর্বরোচিত ড্রোন হামলায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ছয়জন শান্তিরক্ষী শহীদ হন। এ ঘটনায় আন্তর্জাতিক অঙ্গনে গভীর উদ্বেগ ও শোক প্রকাশ করা হয়। এর আগে গত ৭ নভেম্বর জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে দায়িত্ব পালনের উদ্দেশ্যে জাহাঙ্গীর আলম সুদানে যান।
জাহাঙ্গীর আলম কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার জাঙ্গালিয়া ইউনিয়নের তারাকান্দি গ্রামের আকন্দ বাড়ির হযরত আলীর ছেলে। তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে মেস ওয়েটার পদে কর্মরত ছিলেন। প্রায় ১১ বছরের বেশি সময় ধরে তিনি নিষ্ঠা, সততা ও পেশাদারিত্বের সঙ্গে সেনাবাহিনীতে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। শান্তিরক্ষা মিশনে দায়িত্ব পালনকালে তার এই আত্মত্যাগ জাতির জন্য এক গভীর বেদনাদায়ক ক্ষতি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
মন্তব্য করুন
