

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


ময়মনসিংহের ভালুকায় ধর্ম অবমাননার অভিযোগে এক পোশাক কারখানার শ্রমিককে পিটিয়ে হত্যার পর মরদেহে আগুনে পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় সন্দেহভাজন দশজনকে গ্রেফতার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
শনিবার (২০ ডিসেম্বর) র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব-১৪) ও জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জানান, শুক্রবার রাতভর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন, গাইবান্ধা জেলার সাঘাটা উপজেলার যাদুর তাহির গ্রামের সাজ্জাদুর রহমানের ছেলে ও পাইওনিয়ার নিটওয়্যারস (বিডি) লিমিটেড নামের পোশাক কারখানার ব্যবস্থাপক (গার্মেন্ট শাখা) মো. তারেক হোসেন (১৯) একই উপজেলার যাদুর তাহির গ্রামের ইয়াকুর আলীর ছেলে এরশাদ আলী (৩৯), কুড়িগ্রাম জেলার ফুলবাড়ী উপজেলার উত্তর বড়ভিটা গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে মো. লিমন সরকার (১৯), ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার হবিরবাড়ির হারুনুর রশিদের ছেলে মো. মানিক মিয়া (২০), সুনামগঞ্জ জেলার দোয়ারাবাজার উপজেলার বাঘমারা গ্রামের মুজিবুল হকের ছেলে নিজুম উদ্দিন (২০), মাদারীপুর জেলার শিবচর উপজেলার বড়বাহাদুরপুর গ্রামের মো. সিরাজ মিয়ার ছেলে ও কারখানার ফ্লোর ইনচার্জ আলমগীর হোসেন (৩৮), ঝালকাঠি জেলার পোনাবালিয়া গ্রামের মো. নিজামুন হক আকনের ছেলে ও কারখানার কোয়ালিটি ইনচার্জ মো. মিরাজ হোসেন আকন (৪৬), ভালুকা উপজেলার মো. আজমল হাসান সগীর (২৬), স্থানীয় দোকান কর্মচারী মো. শাহিন মিয়া (১৯) ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মো. নাজমুল (২১)।
পুলিশ জানায়, গ্রেফতার ব্যক্তিদের আইনগত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আদালতে হস্তান্তর করা হবে। এর আগে শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) বিকালে নিহতের ছোট ভাই অপু চন্দ্র দাস বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ১৫০ জনকে আসামি করে ভালুকা মডেল থানায় মামলা করেন।
গত বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাতে ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার হবিরবাড়ি ইউনিয়নের জামিরদিয়া স্কয়ার মাষ্টারবাড়ি ডুবালিয়াপাড়া এলাকার পাইওনিয়ার নিটওয়্যারস (বিডি) লিমিটেড কারখানায় ধর্ম অবমাননার অভিযোগে দিপু চন্দ্র দাসকে গণপিটুনি দেয় উত্তেজিত জনতা। এরপর তার মরদেহ ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পাশে নিয়ে আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়।
খবর পেয়ে সেনাবাহিনী ও পুলিশ সদস্যরা সেখানে গিয়ে রাত আড়াইটার দিকে অর্ধপোড়া মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
নিহত দিপু চন্দ্র দাস (২৭) তিনি জেলার তারাকান্দা উপজেলার মোকামিয়া কান্দা গ্রামের রবি চন্দ্র দাসের ছেলে। দুই বছর ধরে তিনি পাইওনিয়ার নিটওয়্যারস (বিডি) লিমিটেডের কোয়ালিটি সুপারভাইজার হিসেবে কাজ করছিলেন।
নিহতের বাবা রবি চন্দ্র দাস ও বোন চম্পা দাসের দাবি, উৎপাদন বৃদ্ধি নিয়ে বিরোধের জেরে পরিকল্পিতভাবে দিপুকে মিথ্যা অপবাদে হত্যা করা হয়েছে। তাদের দাবি, দিপু শিক্ষিত এবং সচেতন ছিলেন, তিনি এমন কাজ (ধর্ম অবমাননা) করতে পারেন না।
ময়মনসিংহ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার অধিকার কারও নেই। কেন ওই যুবককে পুলিশের হাতে না দিয়ে জনতার হাতে তুলে দেওয়া হলো, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ওই পুলিশ সুপার।
মন্তব্য করুন
