

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


ইতিহাস ও ঐতিহ্য স্বাক্ষী হয়ে দাড়িয়ে আছে টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলার হেমনগর ইউনিয়নে অবস্থিত পরী দালনা খ্যাত হেমনগর জমিদার বাড়ি। এরকম সারাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে অযত্ন ও অবহেলায় পড়ে রয়েছে অসংখ্য পুরোনো আমলের জমিদার বাড়ি।
এখনো মানুষের মুখে মুখে প্রচলিত আছে রাজা-বাদশা ও জমিদারের কাহিনী। সেই কাহিনীর জীবন্ত সাক্ষী হয়ে মাথা উঁচু করে দাড়িয়ে আছে পরী দালান খ্যাত হেমনগরের জমিদার বাড়ি। দীর্ঘদিন ধরে পরিত্যক্ত থাকায় জমিদার বাড়িটি নামেই পরী দালনা, বাস্তবে ভূতের বাড়িতে পরিণত হয়েছে।
জানযায়, ১৮৯০ সালে প্রায় ৬০ একর জমির ওপর জমিদার হেমচন্দ্র চৌধুরী এই প্রাসাদোপম স্থাপনা নির্মাণ করেন। প্রাচীন এই স্থাপনা ছিল রাজনীতি, সংস্কৃতি ও শিল্পচর্চার প্রাণকেন্দ্র। প্রায় শতাধিক কক্ষবিশিষ্ট এ জমিদারবাড়িতে একসময় ছিল প্রশাসনিক কর্মকাণ্ডের কোলাহল, জমকালো দরবার আর অতিথিদের পদচারণা।
এখনো চোখে পড়ে সেই অপূর্ব স্থাপত্যশৈলী, যা বাংলার জমিদারি ঐতিহ্যকে তুলে ধরে। তবে কালের বিবর্তনে ধীরে ধীরে জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে স্থাপনাটি। ভেঙ্গে পড়েছে দালান, নেই দরজা জানালার অংশ। দেখতে ভুতুড়ে বাড়ীর মতো অযত্ন ও অবহেলায় হারিয়ে যাচ্ছে বহু মূল্যবান স্থাপত্য নিদর্শন। একসময় দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ এই জমিদারবাড়ি দেখতে আসত। কিন্তু যথাযথ সংরক্ষণের অভাবে প্রতিদিনই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে এর ঐতিহ্য।
স্থানীয় লোকজন ও হেমনগর ডিগ্রী কলেজের শিক্ষার্থীরা বলেন- জমিদার হেমচন্দ্র চলে যাওয়ার পর স্থানীয় লোকজন জমিদার বাড়ির মূল্যবান জিনিসপত্র লুট করে নিয়ে যায়। অযত্ন আর অবহেলায় জমিদার বাড়িটির ইতিহাস ঐতিহ্য বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে এখানে মাদকসেবীদের আনাগোনা বেড়ে গেছে। জমিদার বাড়িটি এখন ভূতের বাড়িতে পরিণত হয়েছে। তবে সরকারিভাবে সংরক্ষণ করা গেলে এটি পর্যটন শিল্পে বড় অবদান।
হেমনগর ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ মেহের মাকসুদ বলেন- দীর্ঘদিন পরিত্যক্ত থাকার পর ১৯৭৯ সালে জমিদারবাড়ির মূল ভবনটি ডিগ্রী কলেজ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। বেশকিছু দিন জমিদার বাড়িটি কলেজ কর্তৃপক্ষের পর্যবেক্ষণে থাকলেও বর্তমানে ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। ভবনটি সংস্কার করলে আবার আগের মত দূরদূরান্ত থেকে পর্যটক আসবে। দ্রুত সময়ের মধ্যে জমিদার বাড়িটি সংস্কার করে এর ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনার দাবি জানিচ্ছি।
উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান গোপালপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মোঃ নবাব আলী।
মন্তব্য করুন
