

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা)'র অর্থায়নে পরিচালিত ডিগলিয়া-চাকবৈটা সড়ক নির্মাণ প্রকল্পে গুরুতর অনিয়মের তথ্য পাওয়া গেছে। প্রকল্পের শর্ত ও কার্যবিধি উপেক্ষা করে নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার করা হচ্ছে।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, রাস্তার বেস ও সাব-বেস তৈরিতে নির্ধারিত মানের পরিবর্তে নিম্নমানের খোয়া ও বালির পরিবর্তে পাহাড়ি লাল মাটি ব্যবহার করা হচ্ছে। অনেক জায়গায় নির্ধারিত পুরুত্ব বজায় রাখা হয়নি। প্রকল্পের নীতিমালা উপেক্ষা করে অপর্যাপ্ত কম্প্যাকশনের মাধ্যমে কাজ শেষ করা হচ্ছে।
ডিগলিয়া এলাকার বাসিন্দা মাহামুদুল হক জানান, নির্মাণকাজ চলাকালেই নিম্ন মানের ইট,কংক্রি ও বালির পরিবর্তে দেওয়া হচ্ছে সরাসরি পাহাড়ি মাটি। এসব অনিয়মের কারণে, দীর্ঘমেয়াদী ও ভারী যান চলাচলের জন্য রাস্তাটি নির্মাণ হলে স্হায়ীত্ব হবে না বেশিদিন আমরা এই অনিয়মের প্রতিকার চাই।
উখিয়া উপজেলা বিএনপি’র যুগ্ম সম্পাদক আহসান উল্লাহ মনি বলেন, জাইকার মতো আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থার প্রকল্পে যেখানে কাজের মান শতভাগ নিশ্চিত থাকার কথা, সেখানে চলছে প্রকাশ্য অনিয়ম ও প্রতারণা। কাগজে-কলমে নিয়ম মানার নাটক দেখানো হলেও বাস্তবে হচ্ছে তার সম্পূর্ণ উল্টো। বছরের পর বছর ঠিকাদারির অভিজ্ঞতায় তিনি এমন নিম্নমানের, দায়িত্বহীন ও লজ্জাজনক কাজ আগে কোথাও দেখেননি। এটি স্পষ্টতই জনগণের সঙ্গে প্রতারণা এবং দাতা সংস্থার বিশ্বাসের সঙ্গে তামাশা। অবিলম্বে এসব অনিয়মের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে সরকারের প্রতি আহবান জানান।
রাজাপালং ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মীর শাহেদুল ইসলাম রোমান রাস্তা নির্মাণে অনিয়মের কথা স্বীকার করলেও সংবাদ না ছাপানোর অনুরোধ করেন।
অনিয়মের অভিযোগ প্রসঙ্গে মেসার্স তৌহিদ এন্ড ব্রাদার্স-এর মালিকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, কাজের ক্ষেত্রে অনিয়ম প্রমাণিত হলে তাৎক্ষণিকভাবে কাজ বন্ধসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এই বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম বলেন, জাইকা প্রকল্পের প্রতিটি কাজ নির্ধারিত নকশা ও মানদণ্ড অনুসরণ করেই বাস্তবায়ন করা হবে। কাজের অনিয়ম হলে ঠিকাদারকে দায়ী করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রিফাত আসমা বলেন, অনিয়মের বিষয় খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে।
এদিকে স্থানীয়দের অভিযোগ, পনের কোটি আশি লাখ টাকা ব্যয়ে ৪৪৩৩ মিটার রাস্তার
এই প্রকল্পটি কার্যত লুটপাটের মাধ্যমে ধ্বংস করা হচ্ছে। নিম্নমানের কাজের কারণে প্রকল্পটি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে তারা দাবি করেন। অবিলম্বে কাজ বন্ধ করে স্বাধীনভাবে গুণগত মান পরীক্ষা এবং জড়িত দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা না নিলে তারা মানববন্ধনসহ কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন।
সচেতন মহল মনে করেন, আন্তর্জাতিক অর্থায়নের প্রকল্পে এ ধরনের অনিয়ম শুধু অবকাঠামোর ক্ষতি নয়, দেশের ভাবমূর্তির জন্যও হুমকি।
মন্তব্য করুন
