

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


আপনি কি জানেন নদী দিয়ে এক সময় ফেরিতে করে ট্রেন পারাপার করা হতো। দেশের অন্যতম বৃহৎ নদী যমুনা, যার বুকে একসময় দুলতলা করে চলত ট্রেনবাহী ফেরি। বর্তমান প্রজন্মের অনেকেই জানে না— বঙ্গবন্ধু সেতু নির্মাণের আগে যমুনা নদী পার হতো ট্রেন, কিন্তু রেললাইন নয়, ফেরির মাধ্যমে।
১৯৩৮ সালে শুরু হয়েছিল এই ব্যতিক্রমী যোগাযোগব্যবস্থা। তখন উত্তরবঙ্গের ট্রেন রাজধানীর সঙ্গে যুক্ত হতে পারত না সরাসরি। যমুনার দুই পারে ছিল দুটি বড় স্টেশন— এক পাশে ভৈরববাজার–জামালপুরঘাট, আর অন্য পাশে সরিষাবাড়ী–জগন্নাথগঞ্জঘাট। যাত্রী ও পণ্যবাহী ট্রেন এসব ঘাটে এসে থামত, তারপর পুরো ট্রেন ফেরিতে তুলে নদী পার করা হতো।
সেই সময় ফেরিগুলো ছিল বিশেষভাবে নকশা করা— যাতে পুরো ইঞ্জিনসহ একাধিক বগি একসঙ্গে উঠানো যেত। ট্রেন ফেরিতে তোলার পর যমুনা পার হয়ে অপর পারে নেমে যাত্রা শুরু করত। এই প্রক্রিয়ায় সময় লাগত প্রায় দেড় থেকে দুই ঘণ্টা।
স্থানীয়রা বলেন, নদীপথের সে দৃশ্য ছিল মনোমুগ্ধকর। ট্রেনবাহী ফেরি যখন যমুনার বুকে চলত, দূর থেকে মনে হতো নদীজুড়ে যেন লোহার বিশাল সাপ ভেসে বেড়াচ্ছে।
তবে ১৯৯৮ সালে বঙ্গবন্ধু সেতু চালুর পর এই ব্যবস্থা ইতিহাসে পরিণত হয়। বর্তমানে ঢাকা থেকে উত্তরবঙ্গের রেলপথ সরাসরি সংযুক্ত, ফলে ফেরি ব্যবস্থার আর প্রয়োজন নেই।
রেলওয়ের পুরোনো নথিপত্রে দেখা যায়, ফেরির মাধ্যমে ট্রেন পারাপার শুধু যমুনায়ই নয়— মেঘনা ও পদ্মাতেও কিছু সময় চলত। কিন্তু যমুনাই ছিল সবচেয়ে ব্যস্ত রুট।
এখনও জগন্নাথগঞ্জঘাট ও জামালপুরঘাটে পুরোনো ফেরিঘাটের কিছু নিদর্শন দেখা যায়, যা সাক্ষ্য দেয় এক সময় নদী ও রেল একসঙ্গে কীভাবে ইতিহাস রচনা করেছিল।
মন্তব্য করুন
