রবিবার
০৯ নভেম্বর ২০২৫, ২৫ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
রবিবার
০৯ নভেম্বর ২০২৫, ২৫ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শাটডাউনে বিপর্যস্ত যুক্তরাষ্ট্র, একদিনে বাতিল ১ হাজার ৪০০ ফ্লাইট

এনপিবিনিউজ ডেস্ক
প্রকাশ : ০৯ নভেম্বর ২০২৫, ১১:১৪ এএম আপডেট : ০৯ নভেম্বর ২০২৫, ১১:১৫ এএম
বিমানবন্দরে একটি চেক পয়েন্টে দীর্ঘ লাইনে অপেক্ষা করছেন যাত্রীরা। ছবি: সংগৃহীত
expand
বিমানবন্দরে একটি চেক পয়েন্টে দীর্ঘ লাইনে অপেক্ষা করছেন যাত্রীরা। ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রে চলমান সরকারি অচলাবস্থা বা শাটডাউন জটিল আকার ধারণ করেছে।

টানা দ্বিতীয় দিনের মতো শনিবার (৮ নভেম্বর) দেশজুড়ে বাতিল হয়েছে ১ হাজার ৪০০টিরও বেশি ফ্লাইট, আর আরও কয়েক হাজার যাত্রা বিলম্বিত হয়েছে। এ অবস্থায় বিমান চলাচল ব্যবস্থায় দেখা দিয়েছে চরম বিশৃঙ্খলা ও ভোগান্তি।

রোববার (৯ নভেম্বর) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানায়, সরকারি কার্যক্রম অচল হয়ে পড়ায় মার্কিন অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক উড়ান দুই ক্ষেত্রেই বড় ধরনের প্রভাব পড়েছে।

ফ্লাইট ট্র্যাকিং ওয়েবসাইট ফ্লাইটঅ্যাওয়ার জানিয়েছে, শনিবার প্রায় ছয় হাজার ফ্লাইট নির্ধারিত সময়ের চেয়ে দেরিতে ছাড়ে, যদিও শুক্রবার সেই সংখ্যা ছিল সাত হাজারেরও বেশি।

এর আগে মার্কিন ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফএএ) সতর্ক করেছিল, শাটডাউনের কারণে বেতন ছাড়া কাজ করা বিমান নিয়ন্ত্রকদের ক্লান্তি ও মানসিক চাপ বেড়ে যাওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে ব্যস্ত ৪০টি বিমানবন্দরে ফ্লাইট চলাচল ১০ শতাংশ পর্যন্ত সীমিত রাখা হবে।

অচলাবস্থা শুরু হয়েছিল গত ১ অক্টোবর। রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে বাজেট অনুমোদন নিয়ে দীর্ঘস্থায়ী দ্বন্দ্বের কারণে এখনো এর সমাধান হয়নি। শনিবারের হিসাব অনুযায়ী, এই শাটডাউন এখন মার্কিন ইতিহাসের দীর্ঘতম অচলাবস্থা টানা ৩৯তম দিন।

সরকারি কার্যক্রম পুনরায় চালু করতে সমঝোতার পথ খুঁজতে কংগ্রেসের সিনেটররা সপ্তাহান্তেও আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে ইতোমধ্যে খাদ্য সরবরাহ, নিরাপত্তা, পরিবহনসহ নিত্যসেবায় প্রভাব পড়তে শুরু করেছে।

আমেরিকান এয়ারলাইনস এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, শাটডাউন দ্রুত শেষ করে সরকার যেন কার্যক্রম পুনরায় সচল করে, সেটি এখন সময়ের দাবি।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, নিউ জার্সির নিউয়ার্ক লিবার্টি ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টে দেখা গেছে সবচেয়ে দীর্ঘ অপেক্ষার সময়। শনিবার বিকেল নাগাদ আগত ফ্লাইটগুলোর গড় বিলম্ব ছিল চার ঘণ্টার বেশি, আর ছেড়ে যাওয়া ফ্লাইটগুলোর ক্ষেত্রে তা দেড় ঘণ্টারও বেশি।

সবচেয়ে বেশি ফ্লাইট বাতিল হয়েছে শার্লট/ডগলাস ইন্টারন্যাশনাল, নিউয়ার্ক লিবার্টি ইন্টারন্যাশনাল ও শিকাগো ও’হেয়ার ইন্টারন্যাশনাল বিমানবন্দরে। এছাড়া জন এফ কেনেডি (জেএফকে), আটলান্টার হার্টসফিল্ড-জ্যাকসন এবং লা গার্ডিয়া বিমানবন্দর থেকেও ফ্লাইট ছাড়তে দেরি হয়েছে যথাক্রমে তিন, আড়াই ও এক ঘণ্টা।

শুধু বাণিজ্যিক উড়ান নয়, ব্যক্তিগত জেট চলাচলেও নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মার্কিন পরিবহনমন্ত্রী ডাফি।

তিনি এক্স (সাবেক টুইটার)-এ লিখেছেন, “বাণিজ্যিক ফ্লাইটের চাপ কমাতে ব্যস্ত বিমানবন্দরগুলোয় ব্যক্তিগত জেটের সংখ্যা সীমিত করা হয়েছে। তাদের ছোট বিমানবন্দর ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

এফএএ জানায়, আগামী কয়েক দিনে ফ্লাইট কমানো আরও বাড়ানো হবে শুক্রবারের তুলনায় ৪ শতাংশ কমানোর পর ১১ নভেম্বর তা হবে ৬ শতাংশ, ১৩ নভেম্বর ৮ শতাংশ এবং ১৪ নভেম্বর পর্যন্ত কমবে ১০ শতাংশ পর্যন্ত।

সংস্থাটির দাবি, “বেতন ছাড়া কাজের ফলে নিয়ন্ত্রকদের মধ্যে ক্লান্তি, অনুপস্থিতি ও মানসিক চাপ বাড়ছে। নিরাপত্তা বজায় রাখতেই এই সাময়িক কমানো প্রয়োজন।”

অন্যদিকে ট্রান্সপোর্টেশন সিকিউরিটি অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (টিএসএ)-এর ৬৪ হাজারের বেশি কর্মীও এখন বেতনহীন অবস্থায় কাজ করছেন। এতে বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থাও ব্যাহত হচ্ছে।

২০১৮ সালের ট্রাম্প প্রশাসনের শাটডাউনের সময় টিএসএ কর্মীদের প্রায় ১০ শতাংশই বেতন ছাড়া কাজ না করে ঘরে অবস্থান করেছিলেন সেই চিত্র যেন আবার ফিরে আসছে যুক্তরাষ্ট্রে।

google news সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন