শুক্রবার
০৭ নভেম্বর ২০২৫, ২৩ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শুক্রবার
০৭ নভেম্বর ২০২৫, ২৩ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

লেবাননে ইসরাইলের ভয়াবহ বিমান হামলা

এনপিবি ডেস্ক
প্রকাশ : ০৭ নভেম্বর ২০২৫, ১০:০৬ এএম
expand
লেবাননে ইসরাইলের ভয়াবহ বিমান হামলা

দক্ষিণ লেবাননের টায়ার জেলার অন্তত চারটি শহরে বৃহস্পতিবার ভোরে ব্যাপক বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরাইলি বাহিনী। বেসামরিক এলাকায় এসব হামলায় একজন নিহত এবং কমপক্ষে নয়জন আহত হয়েছেন বলে লেবাননের সরকারি সূত্র জানিয়েছে। বৈরুতের দাবি, এই হামলার মাধ্যমে ইসরাইল চলমান যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্পষ্টভাবে লঙ্ঘন করেছে।

৬ নভেম্বরের এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে লেবানন সরকার ও হিজবুল্লাহ পৃথক বিবৃতিতে তীব্র নিন্দা জানিয়েছে এবং আন্তর্জাতিক মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। খবর—আলজাজিরা।

অন্যদিকে ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) দাবি করেছে, তাদের হামলার লক্ষ্যবস্তু ছিল হিজবুল্লাহর সামরিক ঘাঁটি ও অস্ত্রাগার। তবে লেবাননের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা জানায়, যুদ্ধবিমানগুলো টায়ার জেলার বেসামরিক বসতিতে বোমা বর্ষণ করেছে, যার ফলে ঘরবাড়ি ও দোকানপাট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

লেবাননের প্রেসিডেন্ট জোসেফ আউন এক বিবৃতিতে বলেন, “আজকের বিমান হামলা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন ও সার্বভৌম রাষ্ট্রের প্রতি সম্মান—উভয়েরই গুরুতর লঙ্ঘন। ইসরাইল কার্যত আমাদের ওপর নতুন করে যুদ্ধ চাপিয়ে দিচ্ছে।”

তিনি আরও জানান, যুদ্ধবিরতির পরও ইসরাইল কোনো রাজনৈতিক সমাধান চায়নি, বরং ধারাবাহিক হামলার মাধ্যমে পরিস্থিতি আরও জটিল করে তুলছে।

হিজবুল্লাহও এক বিবৃতিতে জানায়, তারা এখনো যুদ্ধবিরতির অঙ্গীকার মেনে চলেছে, কিন্তু ইসরাইলি আগ্রাসনের মুখে নীরব থাকা আর সম্ভব নয়। বিবৃতিতে বলা হয়, “যে পক্ষ আমাদের ভূমিতে যুদ্ধ চাপিয়ে দিচ্ছে, আত্মরক্ষার জন্য তার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলা আমাদের ন্যায্য অধিকার।”

ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর বিবৃতি অনুসারে, দক্ষিণ লেবাননের আয়তা আল-জাবাল, তায়বেহ এবং তায়ের দেব্বা এলাকায় তারা একযোগে বিমান হামলা চালায়। এর কিছুক্ষণ পর জাওতার আল-শারকিয়া শহরের বাসিন্দাদের এলাকা খালি করার নির্দেশ দেওয়া হয়, এবং এরপরই সেখানে হামলা শুরু হয়।

২০২৩ সালের অক্টোবরে গাজা যুদ্ধ শুরু হলে, ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ সংগঠন হামাসের প্রতি সংহতি জানিয়ে ইসরাইল সীমান্তে হামলা শুরু করে হিজবুল্লাহ। ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর নাগাদ সংঘাতটি পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধে রূপ নেয়, যাতে চার হাজারের বেশি লেবানিজ নাগরিক নিহত এবং প্রায় ১৭ হাজার আহত হন।

পরবর্তীতে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় ২০২৪ সালের নভেম্বরে দুই পক্ষ যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষর করলেও, ইসরাইলের হামলা বন্ধ হয়নি। যুদ্ধবিরতির পর থেকেই ইসরাইলি বাহিনী দক্ষিণ লেবাননে প্রায় প্রতিদিন হামলা চালাচ্ছে। এসব অভিযানে হিজবুল্লাহর অন্তত ৩৫০ যোদ্ধা প্রাণ হারিয়েছেন। সর্বশেষ গতকাল তারা হিজবুল্লাহর বিশেষ ইউনিট রেদওয়ান ফোর্সের এক কমান্ডারকে লক্ষ্য করে হামলা চালায়।

যুদ্ধবিরতির শর্ত অনুযায়ী, চলতি বছরের জানুয়ারির মধ্যে ইসরাইলের দক্ষিণ লেবানন থেকে সম্পূর্ণ সেনা প্রত্যাহার করার কথা ছিল। কিন্তু তারা এখনো কেবল আংশিকভাবে সেনা সরিয়েছে এবং পাঁচটি সীমান্ত চৌকিতে সামরিক উপস্থিতি বজায় রেখেছে, যা চুক্তি ভঙ্গেরই প্রমাণ বলে মনে করছে বৈরুত।

google news সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন