

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


চলমান যুদ্ধবিরতি চুক্তির আওতায় আরও পাঁচ ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দিয়েছে দখলদার ইসরাইল। একইসঙ্গে দেশটি ৪৫ জন ফিলিস্তিনির মরদেহ হস্তান্তর করেছে, যাদের বেশিরভাগই নিহত হয়েছিলেন গাজার সাম্প্রতিক সংঘর্ষে।
মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, সোমবার সন্ধ্যায় মুক্তিপ্রাপ্ত পাঁচ ফিলিস্তিনিকে মধ্য গাজার দেইর আল-বালাহ এলাকার আল-আকসা হাসপাতালে নেওয়া হয় চিকিৎসা ও স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে জানানো হয়, আন্তর্জাতিক রেড ক্রস কমিটি (আইসিআরসি)-র সহযোগিতায় ইসরাইল ৪৫টি মরদেহ ফেরত দিয়েছে। এতে যুদ্ধবিরতির আওতায় এখন পর্যন্ত মোট ২৭০টি মরদেহ ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, এদের মধ্যে ৭৮ জনের পরিচয় নিশ্চিত করা গেছে। বাকি মরদেহগুলোর ডিএনএ ও ফরেনসিক পরীক্ষার কাজ চলছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার প্রোটোকল অনুযায়ী। পরীক্ষার পর সেগুলো তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
তবে ফেরত পাওয়া অনেক মরদেহে নির্যাতনের চিহ্ন দেখা গেছে— কারও হাত বাঁধা, কারও চোখ কাপড়ে মোড়ানো, আবার অনেকের শরীরে বিকৃতির ছাপ পাওয়া গেছে। মরদেহগুলোর সঙ্গে কোনো শনাক্তকরণ ট্যাগও দেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ।
মানবাধিকার সংস্থাগুলোর হিসাবে, ইসরাইলের কারাগারে এখনো হাজার হাজার ফিলিস্তিনি বন্দি রয়েছে, যাদের অনেককেই কোনো মামলা বা অভিযোগ ছাড়াই প্রশাসনিক আদেশে দীর্ঘদিন ধরে আটক রাখা হয়েছে।
যুদ্ধবিরতির ঘোষণা কার্যকর থাকা সত্ত্বেও গাজার বিভিন্ন স্থানে হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরাইলি বাহিনী। দক্ষিণ গাজার রাফা শহরের উত্তরে ইসরাইলি বিমান হামলায় অন্তত তিন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন নাসের মেডিকেল কমপ্লেক্সের একটি সূত্র।
ইসরাইলি সেনাবাহিনীর দাবি, কয়েকজন ফিলিস্তিনি “হলুদ রেখা” অতিক্রম করেছিল— যা তাদের সংজ্ঞায় যুদ্ধবিরতির সীমা লঙ্ঘন হিসেবে বিবেচিত। এই অজুহাতে তারা বিমান হামলা চালায়।
তবে ঘটনাটি স্বাধীনভাবে যাচাই করা সম্ভব হয়নি, এবং একই ঘটনায় তিনজন নিহত হয়েছেন কি না, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
এছাড়া গাজা সিটির পূর্বাঞ্চলে দখলদার বাহিনীর গুলিতে এক শিশুসহ তিনজন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে আল-আহলি আরব হাসপাতালের একটি সূত্র।
যুদ্ধবিরতির মধ্যেও হামলা অব্যাহত থাকায় গাজায় মানবিক পরিস্থিতি আরও অবনতির দিকে যাচ্ছে। অনেক এলাকায় চিকিৎসা সেবা ও খাদ্য সহায়তা ব্যাহত হচ্ছে। মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, বন্দি বিনিময় ও মরদেহ ফেরত দেওয়ার পরও বাস্তব পরিস্থিতিতে কোনো ইতিবাচক পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে না বরং গাজার সাধারণ মানুষ এখনো আতঙ্ক ও অনিশ্চয়তার মধ্যে দিন কাটাচ্ছে।
মন্তব্য করুন
 
                    