শুক্রবার
৩১ অক্টোবর ২০২৫, ১৫ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শুক্রবার
৩১ অক্টোবর ২০২৫, ১৫ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সৌদি-পাকিস্তান প্রতিরক্ষা চুক্তি

আঞ্চলিক রাজনীতিতে নতুন সমীকরণ

এনপিবিনিউজ ডেস্ক
প্রকাশ : ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৬:৪৭ পিএম আপডেট : ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৭:০১ পিএম
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ (বাঁ থেকে), সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
expand
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ (বাঁ থেকে), সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

সৌদি আরব ও পাকিস্তান এক ঐতিহাসিক প্রতিরক্ষা চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। এর শর্ত অনুযায়ী, দুই দেশের যেকোনো একটির ওপর আগ্রাসন চালানো হলে সেটিকে উভয়ের বিরুদ্ধে হামলা হিসেবে বিবেচনা করা হবে।

বিশ্লেষকদের মতে, এই পদক্ষেপ দুই দেশের সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে।

বুধবার ( ১৭ সেপ্টেম্বর) রিয়াদে অনুষ্ঠিত এই স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সৌদি সরকারের শীর্ষ কর্মকর্তা ও পাকিস্তানি প্রতিনিধি দল।

আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক আঞ্চলিক অস্থিরতার মধ্যেই এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হলো। ইসরায়েলের হামলা ও প্রতিবেশী রাষ্ট্রে আক্রমণের কারণে মধ্যপ্রাচ্যে রাজনৈতিক ভারসাম্য নষ্ট হয়েছে। বিশেষ করে গত সপ্তাহে কাতারে ইসরায়েলের হামলার পর পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে ওঠে।

পাকিস্তানের জন্যও এই চুক্তি তাৎপর্যপূর্ণ। ভারতের সঙ্গে গত মে মাসে উত্তেজনার পরপরই ইসলামাবাদ সৌদির সঙ্গে এ ধরনের সমঝোতায় পৌঁছাল।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, চুক্তির প্রভাব কী হতে পারে তা খতিয়ে দেখা হবে। মুখপাত্র রণধীর জয়সাওয়াল বলেছেন, বিষয়টি মূল্যায়নের সময় ভারতের জাতীয় স্বার্থ ও আন্তর্জাতিক স্থিতিশীলতার প্রশ্ন বিবেচনায় রাখা হবে।

ওয়াশিংটনভিত্তিক স্টিমসন সেন্টারের জ্যেষ্ঠ ফেলো আসফানদিয়ার মির এই সমঝোতাকে ‘টার্নিং পয়েন্ট’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। তিনি মনে করিয়ে দেন, স্নায়ু যুদ্ধ চলাকালীন পাকিস্তান যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে প্রতিরক্ষা চুক্তি করেছিল, যা পরে ভেঙে যায়। যদিও চীনের সঙ্গে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা রয়েছে, তবু সেটি কোনো আনুষ্ঠানিক চুক্তির রূপ নেয়নি।

অস্ট্রেলিয়ার ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির গবেষক মুহাম্মদ ফয়সাল মনে করেন, সৌদির সঙ্গে এই চুক্তি পাকিস্তানের জন্য ভবিষ্যতে একটি মডেল হিসেবে কাজ করতে পারে। এর মাধ্যমে ইসলামাবাদ সংযুক্ত আরব আমিরাত ও কাতারের মতো দেশগুলোর সঙ্গেও প্রতিরক্ষা সহযোগিতায় যেতে পারবে। তিনি আরও বলেন, যৌথ সামরিক প্রশিক্ষণ, প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম উৎপাদন এবং সৌদিতে পাকিস্তানি সেনা মোতায়েনের মতো উদ্যোগও সম্ভব হতে পারে।

অর্থনৈতিক সংকটে জর্জরিত পাকিস্তান দীর্ঘদিন ধরেই সৌদির সহায়তার ওপর নির্ভরশীল। অন্যদিকে ভারতও রিয়াদের সঙ্গে সম্পর্ক মজবুত করেছে; গত এপ্রিলেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সৌদি সফর করেন। তবে নতুন প্রতিরক্ষা চুক্তি প্রমাণ করে, রিয়াদ ইসলামাবাদের সম্পর্ককেও গুরুত্ব দিচ্ছে। পর্যবেক্ষকদের মতে, এর ফলে ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের গতিপথ আরও জটিল হয়ে উঠতে পারে।

google news সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন