

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


বয়স মাত্র ১৭ বছর। আর এই বয়সেই প্রাসাদ, ব্যক্তিগত বিমান, একাধিক বিলাসবহুল গাড়ির মালিক। মনোমুগ্ধকর, মার্জিত এবং রাজকীয় জীবনযাত্রার জন্য বিশ্বব্যাপী মনোযোগও আকর্ষণ করছে। কথা হচ্ছে আমিরা ওয়ার্দাতুল বলকিয়াহর।
আমিরা ব্রুনাইয়ের রাজকুমারী। ব্রুনাইয়ের সুলতান হাসানল বলকিয়াহের কনিষ্ঠ কন্যা। সুলতান হাসানলের তৃতীয় স্ত্রী আজরিনাজ মাজহার হাকিমের মেয়ে।
মালয়েশিয়ার অন্যতম জনপ্রিয় টিভি সঞ্চালক এবং সাংবাদিক ছিলেন আজরিনাজ। ২০০৫ সালে ব্রুনাইয়ের সুলতানের সঙ্গে বিয়ে হয় তাঁর। আমিরার জন্ম হয় ২০০৮ সালে। ২০১০ সালে বিচ্ছেদ হয়ে যায় হাসানল এবং আজরিনাজের।
সুলতানের ১২ সন্তানের মধ্যে আমিরা সবচেয়ে ছোট। মাত্র ১৭ বছর বয়সেই সে এমন একটি জীবনযাপন করে যা তার বয়সি অন্য পাঁচজনের কাছে সোনালি স্বপ্নের মতো।
ব্রুনাইয়ের সুলতান পৃথিবীর সবচেয়ে ধনী শাসকদের অন্যতম। তাঁর আনুমানিক সম্পত্তির পরিমাণ প্রায় ৩০০০ কোটি ডলার। সুলতান হাসানলের সম্পত্তি বৃদ্ধির অন্যতম কারণ, ব্রুনাইয়ের হাতে থাকে তেলের ভান্ডার।
বাবার বিলাসবহুল জীবনযাপনের ছাপ আমিরার জীবনেও পড়েছে। রাজকীয় পরিবেশে মানুষ হওয়া আমিরার কাছে বিলাসভোগের সব সরঞ্জামই রয়েছে।
আমিরার মা আজরিনাজ ছিলেন ডাকসাইটে সুন্দরী। সেই সৌন্দর্যও প্রতিফলিত হয়েছে আমিরার মধ্যে। অভিব্যক্তিপূর্ণ চোখ, লম্বা কালো চুল এবং উজ্জ্বল হাসির মাধ্যমে সমাজমাধ্যমে লক্ষ লক্ষ মানুষের মন জয় করেছে সে। আমিরার টিকটক ভিডিওগুলি প্রায়ই ভাইরাল হয়।
ইনস্টাগ্রাম, টিকটক এবং ফেসবুক জুড়ে আমিরার অসংখ্য ফ্যান পেজ রয়েছে। তার বিলাসবহুল জীবনযাপনের বিভিন্ন ছবি সেগুলি থেকে পোস্ট করা হয়।
ফ্যাশন, ভ্রমণ থেকে পশুপ্রেম, বিভিন্ন বিষয়ে আগ্রহ রয়েছে আমিরার। তার ডিজাইনার গাউন, হিরের গহনা এবং অলঙ্কার সজ্জিত পোশাক তাকে ব্রুনাইয়ের অন্যতম স্টাইল আইকনেও পরিণত করেছে।
গ্ল্যামারের বাইরে শিক্ষার প্রতিও নিবেদিতপ্রাণ আমিরা। ব্রিটিশ পাঠ্যক্রম অনুসরণকারী ব্রুনাইয়ের অন্যতম অভিজাত প্রতিষ্ঠান জেরুডং ইন্টারন্যাশনালের ছাত্রী আমিরা বর্তমানে স্কুলের পড়াশোনা শেষ করার মুখে।
শিক্ষার পাশাপাশি নৃত্য এবং শিল্পকলাতেও পারদর্শী আমিরা। দানধ্যান এবং সমাজসেবামূলক উদ্যোগের জন্য প্রায়ই খবরে উঠে আসে রাজকুমারীর নাম।
সুলতান হাসানলের রাজপ্রাসাদ ‘ইস্তানা নুরুল ইমান’-এর খ্যাতি জগৎজোড়া। প্রাসাদটি অবস্থিত ব্রুনাই নদীর তীরে, দেশের রাজধানী বন্দর সেরি বেগাওয়ানের কাছে।
‘ইস্তানা নুরুল ইমান’ ২০ লক্ষ বর্গফুট এলাকা জুড়ে বিস্তৃত। প্রাসাদের চূড়া বাঁধানো ২২ ক্যারেট সোনা দিয়ে। পাশাপাশি কিছু সামগ্রীও সোনার তৈরি। প্রাসাদে ১,৭৮৮টি ঘর রয়েছে। শৌচালয়ই রয়েছে ২৫৭টি।
জানা গিয়েছে, ‘ইস্তানা নুরুল ইমান’ চত্বরের মধ্যে আমিরার নিজস্ব ব্যক্তিগত প্রাসাদ রয়েছে। সুইমিং পুল থেকে শুরু করে মিনি সিনেমা হল, স্পা-সবই রয়েছে প্রাসাদটির অন্দরে। দাদা তথা ব্রুনাইয়ের রাজকুমার আবদুল ওয়াকিলের সঙ্গে ওই প্রাসাদে থাকে আমিরা।
সুলতানের সংগ্রহে থাকা রোলস রয়েস, বুগাটি, ফেরারি-সহ ৭,০০০ বিলাসবহুল গাড়ির মধ্যে বেশ কয়েকটি আমিরার নামে। একটি ব্যক্তিগত বিমানও আছে তার। সেই বিমানে চেপেই বিদেশ ভ্রমণ করে সে।
শেষ জন্মদিনে সুলতান বাবার কাছে একটি ঘোড়া উপহার পেয়ে বিশ্বব্যাপী হইচই ফেলেছিল আমিরা। কারণ, সেটি যে-সে ঘোড়া ছিল না। হিরেখচিত পোশাকে সজ্জিত ছিল সেই চতুষ্পদ।
সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা।
মন্তব্য করুন
