শুক্রবার
০৭ নভেম্বর ২০২৫, ২৩ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শুক্রবার
০৭ নভেম্বর ২০২৫, ২৩ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

৪০টি আসন নিয়ে কঠিন হিসাব-নিকাশে বিএনপি

এনপিবি ডেস্ক
প্রকাশ : ০৬ নভেম্বর ২০২৫, ১১:৩৫ এএম
expand
৪০টি আসন নিয়ে কঠিন হিসাব-নিকাশে বিএনপি

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপি ২৩৬টি আসনে সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করেছে। তবে বাকি ৬৪টি আসন নিয়ে চলছে চূড়ান্ত পর্যালোচনা ও শরিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা। এর মধ্যে প্রায় ৪০টি আসন জোটের অংশীদারদের জন্য রাখার চিন্তা করছে দলটি।

বিএনপির নীতিনির্ধারকদের মতে, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) যদি আনুষ্ঠানিকভাবে জোটে যোগ দেয়, তাহলে আসন বণ্টনের চিত্রে পরিবর্তন আসতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে কিছু আসনে আগের ঘোষিত প্রার্থীর পরিবর্তনও হতে পারে।

দলটির একাধিক সূত্র জানিয়েছে, সংশোধিত নির্বাচনী আইন (আরপিও) অনুযায়ী জোটভুক্ত হলেও প্রতিটি দলকেই নিজস্ব প্রতীকে ভোট করতে হবে। তাই আসন ছেড়ে দিলেও শরিক দলের জয়ের নিশ্চয়তা নেই—এমন উদ্বেগ থেকেই বিএনপি এখন সতর্কভাবে হিসাব করছে।

এছাড়া শরিক দলগুলো যেসব আসনে প্রার্থী চায়, সেসব এলাকায় বিএনপির শক্তিশালী ও ত্যাগী নেতারা রয়েছেন। ফলে জনপ্রিয় প্রার্থীদের বাদ দিয়ে অন্য কাউকে জায়গা দেওয়া কতটা যৌক্তিক হবে, তা নিয়েও দলে চলছে আলোচনা।

স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, যুগপৎ আন্দোলনে থাকা শরিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা চলছে। যেসব আসনে প্রার্থী ঘোষণা হয়নি, তার কিছু অংশ শরিকদের দেওয়া হতে পারে। শিগগিরই বিষয়টি চূড়ান্ত করা হবে।

বিএনপির সঙ্গে বর্তমানে আলোচনায় থাকা দলগুলোর মধ্যে আছে —লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি), গণঅধিকার পরিষদ, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি), নাগরিক ঐক্য, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, বাংলাদেশ এলডিপি, গণসংহতি আন্দোলন, ভাসানী জনশক্তি পার্টি, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি), গণফোরাম, জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর), এনডিএম, এনপিপি ও জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটসহ একাধিক দল। এছাড়াও এনসিপির সঙ্গেও যোগাযোগ চলছে।

এদিকে, জোটের শরিকদের জন্য যেসব আসন খালি রাখা হয়েছে, সেগুলোর মধ্যে কিছু গুরুত্বপূর্ণ আসনে সম্ভাব্য প্রার্থীরা ইতিমধ্যেই মাঠে প্রচারণা শুরু করেছেন।

গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর পটুয়াখালী-৩ আসনে প্রচারণায় ব্যস্ত। ববি হাজ্জাজ (এনডিএম) ঢাকা-১৩ আসনে কাজ করছেন।

আন্দালিব রহমান পার্থ (বিজেপি) গরুর গাড়ি প্রতীকে ঢাকা-১৭ আসনে প্রচারণা চালাচ্ছেন। জোনায়েদ সাকি (গণসংহতি আন্দোলন) ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৬ আসন থেকে লড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

মাহমুদুর রহমান মান্না (নাগরিক ঐক্য) বগুড়া-২ আসনে প্রার্থী হতে চান।

গণসংহতির সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, ফ্যাসিবাদবিরোধী লড়াইয়ের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে বিএনপিসহ যুগপৎ আন্দোলনে থাকা দলগুলোর সঙ্গে আসন সমঝোতা নিয়ে আলোচনা চলছে।

বিএনপির একজন জ্যেষ্ঠ নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, অনেক শরিক দলের জনপ্রিয়তা খুব সীমিত। এমন পরিস্থিতিতে ৪০টি আসন ছাড় দেওয়া ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। নির্বাচনে জয়লাভের পর তাদের সরকারে সুযোগ দেওয়া যেতে পারে, তবে আগে জয়ের নিশ্চয়তা গুরুত্বপূর্ণ।

এখন পর্যন্ত বিএনপি যে ৬৪টি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেনি, সেগুলোর মধ্যে রয়েছে: ঠাকুরগাঁও-২, দিনাজপুর-৫, নীলফামারী-১ ও ৩, লালমনিরহাট-২, বগুড়া-২, নওগাঁ-৫, নাটোর-৩, সিরাজগঞ্জ-১, পাবনা-১, ঝিনাইদহ-১, ২ ও ৪, যশোর-৫, নড়াইল-২, বাগেরহাট-১, ২ ও ৩, খুলনা-১, পটুয়াখালী-২ ও ৩, বরিশাল-৩, ঝালকাঠি-১, পিরোজপুর-১, টাঙ্গাইল-৫, ময়মনসিংহ-৪ ও ১০, কিশোরগঞ্জ-১ ও ৫, মানিকগঞ্জ-১, মুন্সীগঞ্জ-৩, ঢাকা-৭, ৯, ১০, ১৩, ১৭, ১৮ ও ২০, গাজীপুর-১ ও ৬, নরসিংদী-৩, নারায়ণগঞ্জ-৪, রাজবাড়ী-২, ফরিদপুর-১, মাদারীপুর-১ ও ২, সুনামগঞ্জ-২ ও ৪, সিলেট-৪ ও ৫, হবিগঞ্জ-১, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ ও ৬, কুমিল্লা-২ ও ৭, লক্ষ্মীপুর-১ ও ৪, চট্টগ্রাম-৩, ৬, ৯, ১১, ১৪ ও ১৫ এবং কক্সবাজার-২।

google news সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন