

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের মালিক মো. আব্দুল হান্নানকে ৩ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছেন আদালত।
রোববার (১৪ ডিসেম্বর) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট দিদারুল আলম শুনানি নিয়ে এ আদেশ দেন। ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট ওমর ফারুক ফারুকী গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
এদিকে রিমান্ড শুনানিকালে আদালত অনুমতি দিলে আব্দুল হান্নান বলেন, ‘আমি এই মোটরসাইকেলটি মিরপুর মাজার রোড থেকে কিনেছি। পরে অসুস্থ ছিলাম বলে সবাই আমাকে মোটরসাইকেল চালাতে নিষেধ করে। এ কারণে আমি মোটরসাইকেল চালানো বন্ধ রাখি, এরপর থেকে বাইকটি বাসায় পড়ে ছিল।
পরে মোটরসাইকেলটি একটি শোরুমে বিক্রি করি। তাদের আমি পরে নাম চেঞ্জ করে দেব বলে জানাই। দুই মাস পর নাম চেঞ্জ করে দেওয়ার কথা ছিল। শোরুম থেকে আমাকে নাম চেঞ্জের জন্য ডাকা হলেও অসুস্থতার জন্য যেতে পারিনি।’
তিনি আদালতে আরও দাবি করেন, ‘আমাকে গ্রেফতারের সময় পুলিশকে বলেছি, ভালো করে তদন্ত করেন। প্রয়োজনে ওই শোরুমে আমাকে নিয়ে যান, তাহলে সব সত্যি বের হবে। কিন্তু তারা আমাকে সেখানে নিয়ে যায়নি। বরং মামলা দিয়ে থানায় আটকে রাখে। আমি নির্দোষ। এ ঘটনায় কিছুই জানি না।’ পরে বিচারক তদন্তে সহযোগিতার নির্দেশ দিয়ে আসামির তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ওমর ফারুক ফারুকী ও অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) শামসুদ্দোহা সুমন রিমান্ড মঞ্জুরের পক্ষে শুনানি করেন।
শুনানিতে ওমর ফারুক ফারুকী বলেন, হাদীকে হত্যাচেষ্টায় যে মোটরসাইকেল ব্যবহার করা হয়েছে, সেটা বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রচার করা হয়েছে। মোটরসাইকেলের মডেল তদন্ত কর্মকর্তা চিহ্নিত করেছেন। যাচাই-বাছাই করা হয়েছে। হত্যাচেষ্টার রহস্য উদ্ঘাটনের জন্য আসামি হান্নানের রিমান্ড প্রয়োজন।
প্রশ্ন হলো- কীভাবে এই মোটরসাইকেল আসামিদের কাছে গেল, মালিক হয়েও তাদের সঙ্গে কী সম্পর্ক। এ ঘটনা নিয়ে সারা দেশ উদ্বিগ্ন। সবাই তাকিয়ে আছেন। সামনে নির্বাচন। হাদি একজন সৎ মানুষ। ঘটনার সঙ্গে কারা জড়িত। প্রকৃত রহস্য উদ্ঘাটনের জন্য আসামির সাত দিনের পুলিশ রিমান্ডের প্রার্থনা করছি।
শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষের আরেক আইনজীবী শামসুদ্দোহা সুমন বলেন, মূল আসামির মোটরসাইকেলের নম্বর পরীক্ষা করে দেখা গেছে এর মালিক এই হান্নান। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন দমন করতে বিভিন্ন সময়ে মোটরসাইকেল ব্যবহার হয়েছে বলে জানা গেছে।
এই আসামিকে গ্রেফতারের পর থেকে তিনি এ বিষয় এলোমেলো তথ্য দিয়েছেন। ভারতে পলাতক সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের নির্দেশে এ ধরনের ঘটনা ঘটাতে একটি চক্র সক্রিয় রয়েছে। এজন্য এরা টার্গেট করে আক্রমণ করেছে। এরই অংশ হিসেবে হাদিকে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলি করা হয়।
তবে এদিন আসামিপক্ষের কোনো আইনজীবী ছিলেন না। শুনানির শেষ মুহূর্তে আদালতের কাছে কথা বলার অনুমতি চান আসামি। এ সময় আদালত সম্মতি দিলে আব্দুল হান্নান উল্লিখিত বক্তব্য দেন।
এর আগে ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ধারায় গ্রেফতার দেখিয়ে তাকে আদালতে হাজির করা হয়। প্রথমে পল্টন থানার উপ-পুলিশ পরিদর্শক শামীম হাসান তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন। পরবর্তী সময়ে আরেকটি আবেদনে চারটি কারণ উল্লেখ করে তার সাত দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে প্রার্থনা করা হয়।
মন্তব্য করুন

