শনিবার
০১ নভেম্বর ২০২৫, ১৭ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শনিবার
০১ নভেম্বর ২০২৫, ১৭ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

হিটলারের মৃত্যুর পর তার সম্পদের হালচাল

ইমতিহান
প্রকাশ : ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৩:২২ পিএম
অ্যাডলফ হিটলার
expand
অ্যাডলফ হিটলার

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষ প্রান্তে, নাৎসি জার্মানির নেতা অ্যাডলফ হিটলার যখন আত্মহত্যা করেন, তখন তার অজস্র সম্পদের ভবিষ্যৎ নিয়ে রহস্য তৈরি হয়। বহু দশক পরে নানা নথি, সাক্ষাৎকার ও তদন্তে বেরিয়ে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য—হিটলারের ইচ্ছা, সম্পদ ও বই বিক্রির আয়ে গড়ে ওঠা তার বিপুল অর্থকড়ির জটিল হিসাব।

গোপন নথি থেকে বেরিয়ে আসে শেষ ইচ্ছাপত্র

১৯৪৫ সালের এপ্রিলের শেষ দিকে ব্রিটিশ গোয়েন্দারা জার্মান নাৎসি মন্ত্রী জোসেফ গোয়েবলসের প্রেস সেক্রেটারি হাইনজ লরেঞ্জকে গ্রেপ্তার করলে তার কাছ থেকে উদ্ধার হয় হিটলারের স্বাক্ষরিত রাজনৈতিক উইল ও কয়েকটি ব্যক্তিগত নথি। সেগুলোতে হিটলার স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছিলেন, “আমার যা কিছু মূল্যবান আছে, তা দলের হবে। দল না থাকলে সরকারের। আর যদি রাষ্ট্রও না থাকে, তবে আমার সিদ্ধান্ত অপ্রাসঙ্গিক।”

তিনি তার শিল্পকর্মের সংগ্রহ ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য নয়, বরং লিনৎস শহরে একটি গ্যালারি তৈরির জন্য সংরক্ষণের কথা বলেছিলেন।

সরল জীবনযাপন দাবি করলেও সম্পদ ছিল বিপুল

হিটলার নিজেকে সাধারণ জীবনযাপনের অনুসারী হিসেবে উপস্থাপন করলেও বাস্তবে তিনি ইউরোপের অন্যতম ধনী ব্যক্তি ছিলেন। গবেষণায় দেখা গেছে, মৃত্যুর আগের সপ্তাহেও তার ব্যক্তিগত সম্পদের পরিমাণ বিলিয়ন ডলারের সমান ছিল। তবে এই সম্পদ গোপন অ্যাকাউন্ট, নগদ অর্থ ও নানা রকম সম্পত্তিতে ছড়িয়ে থাকায় এর সঠিক হিসাব কখনোই পুরোপুরি পাওয়া যায়নি।

বই বিক্রিই বানায় ধনকুবের

১৯২৪ সালে কারাগারে থাকাকালীন হিটলার লিখেছিলেন Mein Kampf (আমার সংগ্রাম)। শুরুতে বইটি তেমন বিক্রি হয়নি, কিন্তু হিটলারের রাজনৈতিক উত্থানের সাথে সাথে বিক্রি কয়েক লাখে পৌঁছায়। পরে এটি স্কুলের পাঠ্যসূচিতে যুক্ত হয়, এমনকি নবদম্পতিদের উপহার হিসেবেও দেওয়া শুরু হয়। ১৯৩৩ সালে এক বছরেই বিক্রি হয় ১০ লাখ কপি। এই বই থেকে হিটলার কোটি কোটি মার্ক আয় করলেও জার্মান সরকার তাকে কর দিতে অব্যাহতি দেয়।

মৃত্যুর পর বাজেয়াপ্ত হয় সম্পদ

হিটলারের আত্মহত্যার পর নাৎসি জার্মানি ভেঙে পড়ে, মিত্রশক্তি তার সম্পদ জব্দ করে। তার উইল কার্যকর হওয়ার সুযোগ আর ছিল না, কারণ দল ও রাষ্ট্র—দুটোই বিলুপ্ত হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত তার সম্পদ ব্যাভারিয়া রাজ্যের তত্ত্বাবধানে চলে যায়। পাহাড়ের বাড়ি লুটের পর উড়িয়ে দেওয়া হয়, যাতে তা পর্যটনকেন্দ্রে পরিণত না হয়। মিউনিখের অ্যাপার্টমেন্ট পরবর্তীতে থানায় রূপান্তরিত হয়।

বইয়ের কপিরাইট নিয়েও নতুন সিদ্ধান্ত

Mein Kampf-এর কপিরাইটও ব্যাভারিয়া রাজ্য নিয়ন্ত্রণে নেয় এবং জার্মানভাষী অঞ্চলে বইটির পুনর্মুদ্রণ বন্ধ করে দেয়। অবশেষে হিটলারের মৃত্যুর ৭০তম বার্ষিকীতে, ২০১৫ সালের ৩০ এপ্রিল বইটির কপিরাইটের মেয়াদ শেষ হয়।

google news সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন