

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) জানিয়েছে, বাংলাদেশে নতুনভাবে নির্বাচিত সরকার গঠনের আগে পর্যন্ত তারা আর কোনো কিস্তি ছাড় করবে না।
ফলে চলতি ডিসেম্বর মাসে পাওয়ার কথা থাকা ষষ্ঠ কিস্তির প্রায় ৮০ কোটি ডলার আপাতত আটকে যাচ্ছে।
ওয়াশিংটনে অনুষ্ঠিত আইএমএফ ও বিশ্বব্যাংকের বার্ষিক সভার ফাঁকে সংস্থাটির প্রতিনিধিরা বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুরের সঙ্গে বৈঠক করে এই অবস্থান জানায়।
আইএমএফের পক্ষ থেকে জানানো হয়, চলমান সংস্কার কর্মসূচির ধারাবাহিকতা বজায় রাখা এবং আগামী সরকারের অর্থনৈতিক নীতির দিকনির্দেশনা স্পষ্ট না হওয়া পর্যন্ত ঋণ ছাড়ে তারা আগ্রহী নয়।
গভর্নর আহসান এইচ মনসুর জানান,ডিসেম্বরে কিস্তি ছাড় হওয়ার কথা থাকলেও, নির্বাচনপূর্ব সময়ে আইএমএফ তা স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এখনো স্থিতিশীল অবস্থায় আছে; ডলারবাজারও নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। আইএমএফের সহায়তা গুরুত্বপূর্ণ হলেও তাদের অর্থ ছাড়া দেশের অর্থনীতি টিকিয়ে রাখা সম্ভব।
অর্থনীতিবিদ ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ মনে করেন, আইএমএফ যদি অতিরিক্ত শর্ত আরোপ করে, বাংলাদেশ তা মানবে না।
তাঁর ভাষায়, দেশের বর্তমান পরিস্থিতি আগের মতো দুর্বল নয়। তাই অযৌক্তিক শর্তে সম্মতি দেওয়া হবে না।
বিশ্লেষকদের মতে, নির্বাচনপূর্ব সময়ে আইএমএফ এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে সংস্কার বাস্তবায়নে চাপ সৃষ্টি করতে চাইছে। নির্বাচন আগে ঋণ স্থগিত রাখার অর্থ—বাংলাদেশ এখনো তাদের শর্তগুলো পূরণ করেনি—এমন বার্তা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পৌঁছে দেওয়া। নতুন সরকার দায়িত্ব নিলে, তাদের কাছ থেকে পুনরায় নীতিগত আশ্বাস নিয়ে তবেই কিস্তি ছাড়তে চায় সংস্থাটি।
২০০১ সালেও নির্বাচনকে সামনে রেখে আইএমএফ একই ধরনের চাপ প্রয়োগ করেছিল।
পরবর্তীতে ২০২২ সালে তারা জ্বালানি ও মুদ্রানীতিতে কঠোর শর্ত আরোপ করে, যার ফলে সরকারকে তেল–গ্যাসের দাম বাড়াতে এবং মুদ্রার মান কমাতে বাধ্য হতে হয়েছিল। এসব নীতির প্রভাবে মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধি পায়।
ঋণের ষষ্ঠ কিস্তি অনুমোদনের আগে ২৯ অক্টোবর আইএমএফের একটি প্রতিনিধিদল ঢাকায় আসছে। তারা দুই সপ্তাহ ধরে বিভিন্ন সরকারি সংস্থার সঙ্গে বৈঠক করে মূল্যায়ন প্রতিবেদন তৈরি করবে, যা কিস্তি ছাড়ের চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩ হাজার ২১৪ কোটি ডলার। রেমিট্যান্স ও রপ্তানির প্রবাহ ইতিবাচক এবং আমদানি ব্যয় নিয়ন্ত্রিত অবস্থায় রয়েছে। ফলে চলতি হিসাবে ঘাটতি দেখা যায়নি।
২০২২ সালের বৈশ্বিক অর্থনৈতিক চাপের সময় বাংলাদেশ সরকার আইএমএফের কাছে ঋণ সহায়তা চায়। পরবর্তীতে ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে সংস্থাটি ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ অনুমোদন করে, যা পরে ৫৫০ কোটি ডলারে বৃদ্ধি পায়। ইতোমধ্যে পাঁচ দফায় বাংলাদেশ ৩৬০ কোটি ডলার পেয়েছে। ষষ্ঠ কিস্তিই এখন ঝুলে আছে।
 সর্বশেষ খবর পেতে  Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
    
    
    সর্বশেষ খবর পেতে  Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
    
মন্তব্য করুন
 
 
                    