

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) জাতিসংঘ সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত উচ্চপর্যায়ের সম্মেলনে রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে সাত দফা প্রস্তাব উপস্থাপন করেন। সম্মেলনের বিষয় ছিল, মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলিম ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের পরিস্থিতি।
ড. ইউনূস বলেন, দীর্ঘস্থায়ী রোহিঙ্গা সংকটের একমাত্র শান্তিপূর্ণ সমাধান হলো মিয়ানমারে তাদের নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসন। এর মধ্যে রয়েছে রাখাইন রাজ্যে স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা এবং বাস্তবসম্মত রোডম্যাপ প্রণয়ন। তিনি উল্লেখ করেন, অর্থায়ন কমে আসছে। একমাত্র শান্তিপূর্ণ পথ হলো প্রত্যাবাসন শুরু করা।
তিনি আরও বলেন, গণহত্যা শুরু হওয়ার আট বছর পরও রোহিঙ্গাদের দুর্দশা অব্যাহত রয়েছে। সংকট নিরসনে কার্যকর উদ্যোগ নেই এবং আন্তর্জাতিক অর্থায়নও মারাত্মক ঘাটতিতে ভুগছে। রোহিঙ্গা সমস্যার উৎপত্তি মিয়ানমারে, এবং সমাধানও সেখানেই নিহিত।
ড. ইউনূস আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে মিয়ানমার সরকার ও আরাকান আর্মির ওপর কার্যকর চাপ প্রয়োগ করার আহ্বান জানান, যাতে নিপীড়ন বন্ধ হয় এবং দ্রুত প্রত্যাবাসন শুরু করা যায়। তিনি বলেন, “প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিক সুরক্ষার তুলনায় অনেক কম সম্পদের প্রয়োজন হবে। রোহিঙ্গারা বরাবরই নিজ মাতৃভূমিতে ফিরে যেতে চেয়েছে।
তিনি বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটেও উদ্বেগ প্রকাশ করেন। বলেন, বাংলাদেশ সংকটের শিকার। সামাজিক, পরিবেশগত ও অর্থনৈতিক চাপ অনেক বেড়েছে। রোহিঙ্গাদের মাধ্যমে মাদক পাচারসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কার্যক্রম দেশের সামাজিক কাঠামোকে হুমকির মুখে ফেলছে। দেশের উন্নয়ন চ্যালেঞ্জ যেমন বেকারত্ব ও দারিদ্র্য-তাদের কর্মসংস্থান তৈরি করা এখন সম্ভব নয়।
এ সময় টেকসই সমাধানের জন্য প্রধান উপদেষ্টা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সাত দফা পদক্ষেপ নেওয়ার প্রস্তাব দেন
১. রাখাইন অঞ্চলে স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করে নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনের জন্য একটি বাস্তবসম্মত রোডম্যাপ প্রণয়ন।
২. মিয়ানমার ও আরাকান আর্মির ওপর চাপ সৃষ্টি করে রোহিঙ্গাদের ওপর সহিংসতা বন্ধ এবং সম্প্রতি বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া ও অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুতদের টেকসই প্রত্যাবাসন শুরু।
৩. রাখাইনে স্থিতিশীলতা আনতে আন্তর্জাতিক সহায়তা জোগাড় এবং তা পর্যবেক্ষণে আন্তর্জাতিক বেসামরিক উপস্থিতি নিশ্চিত করা।
৪. রোহিঙ্গাদের রাখাইন সমাজ ও শাসন ব্যবস্থায় স্থায়ী অন্তর্ভুক্তির জন্য আস্থা গড়ে তোলার পদক্ষেপ গ্রহণ।
৫. যৌথ প্রতিক্রিয়া পরিকল্পনায় (Joint Response Plan) অর্থদাতাদের পূর্ণ সহায়তা নিশ্চিত করা।
৬. জবাবদিহি ও পুনর্বাসনমূলক ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা।
৭. মাদক অর্থনীতি ভেঙে দেওয়া এবং আন্তঃসীমান্ত অপরাধ দমন করা।
প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, বিশ্ব আর রোহিঙ্গাদের নিজ মাতৃভূমিতে ফেরার জন্য অপেক্ষায় রাখার সামর্থ্য রাখে না। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আজ আমাদের সংকট সমাধানে একযোগে কাজ করার অঙ্গীকার করতে হবে। বাংলাদেশ এ লক্ষ্যে পূর্ণ সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত।
 সর্বশেষ খবর পেতে  Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
    
    
    সর্বশেষ খবর পেতে  Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
    
মন্তব্য করুন
 
 
                    