

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রাম খুললেই চোখে পড়ছে একের পর এক এআই জেনারেটেড ছবি—কপালে টিপ, মাথায় ফুল, আর বলিউড ঘরানার শাড়ি পরা নারীর ভঙ্গিমা। পাশাপাশি রয়েছে থ্রিডি মডেল ও ক্যানভাসে আঁকা প্রতিকৃতি।
সাম্প্রতিক সময়ে ভাইরাল হওয়া এই ট্রেন্ডটির নাম ‘ন্যানো ব্যানানা এআই শাড়ি’। সাধারণ সেলফি মুহূর্তেই বদলে যাচ্ছে নব্বই দশকের সিনেমার মতো পোর্ট্রেটে। আর এ সবই সম্ভব হচ্ছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) মাধ্যমে।
এই ট্রেন্ডের দুটি রূপ বেশি জনপ্রিয়—একটি হলো এআই শাড়ি পোর্ট্রেট, অন্যটি থ্রিডি ফিগারিন। প্রথমটিতে শাড়ি পরিহিতা ছবির রূপান্তর আর দ্বিতীয়টিতে থাকে ব্যবহারকারীর ছোট্ট মূর্তি ও তার পাশে স্কেচ।
ভারত ছাড়াও বাংলাদেশি ব্যবহারকারীরাও এ নিয়ে মেতে উঠেছেন। এর আগেও যেমন ঘিবলি আর্ট নিয়ে মাতামাতি হয়েছিল, এবার আলোচনায় এসেছে গুগল জেমিনির ‘ন্যানো ব্যানানা’ ইমেজ টুল।
কিভাবে কাজ করে এই ট্রেন্ড?
ব্যবহারকারীকে কিছু নির্দিষ্ট নির্দেশনা (প্রম্প্ট) দিতে হয়—শাড়ির রঙ, ব্যাকগ্রাউন্ড, আলো, এমনকি চুলের স্টাইল পর্যন্ত। এরপর নিজের ছবি আপলোড করলে টুল সেই নির্দেশনা অনুযায়ী নতুন ছবি তৈরি করে দেয়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রম্প্ট যত বিস্তারিত হবে, ফল তত নিখুঁত আসবে।
জনপ্রিয়তার কারণ
সোশ্যাল মিডিয়া গবেষক সিমরন পি কৌর জানিয়েছেন, গত কয়েক দিনে লাখো মানুষ এই ট্রেন্ডে যোগ দিয়েছেন। সেলিব্রিটি থেকে শুরু করে সাধারণ ব্যবহারকারী—সকলেই এতে অংশ নিচ্ছেন। ফলে এক ধাক্কায় এটি ভাইরাল হয়ে গেছে।
ভারতের সাংবাদিক এ অরবিন্দ বলেন, এই ট্রেন্ড বলিউড ঘরানার কারণে দ্রুত জনপ্রিয় হয়েছে। অনেক অভিনেত্রী যেমন সোনাক্ষী সিনহা পর্যন্ত এতে অংশ নিয়েছেন। এমনকি প্রযোজক রাকেশ রোশনও থ্রিডি ফিগারিন ছবি নিজের ইনস্টাগ্রামে শেয়ার করেছেন।
ব্যবহারকারীদের অভিজ্ঞতা
আসামের নেহা সিং জানান, “বন্ধুদের এআই শাড়ি ছবি দেখে আমিও ট্রাই করি। তবে মন মতো ছবি পেতে বেশ কয়েকবার প্রম্প্ট বদলাতে হয়েছে।”
শিক্ষার্থী অস্মিতা চক্রবর্তী বলেন, “আমি প্রায় সব ভাইরাল ট্রেন্ড ফলো করি। ঘিবলি আর্ট ব্যবহার করেছিলাম, এবার এআই শাড়ি ফলো করেছি।”
সমালোচনা ও উদ্বেগ
তবে সবাই এই ট্রেন্ডে সন্তুষ্ট নন। অভিনেত্রী রূপসা মুখোপাধ্যায় মনে করেন, এআই ছবি আসল চেহারার সঙ্গে পুরোপুরি মেলে না। তার মতে, “মানুষের ছবিতে স্বাভাবিক খুঁত থাকে, সেটাই সৌন্দর্য। এআই ছবি অতিরিক্ত নিখুঁত।”
অন্যদিকে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন কপিরাইট ও ডিপফেকের ঝুঁকি নিয়ে। প্রযুক্তিবিদ সৌম্যক সেনগুপ্তের ভাষায়, “এআই দিয়ে ছবি বদলানো মজার হলেও এর অপব্যবহার প্রতারণা বা বিভ্রান্তি তৈরি করতে পারে।”
ট্রেন্ডের স্থায়িত্ব
গবেষকদের মতে, সোশ্যাল মিডিয়ার ট্রেন্ড দীর্ঘস্থায়ী হয় না। যেমন ঘিবলি আর্ট কিছুদিন ভাইরাল হয়েছিল, তেমনি ন্যানো ব্যানানা শাড়িও শিগগিরই নতুন কোনো ট্রেন্ডের জায়গা ছেড়ে দেবে।
মন্তব্য করুন
