

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


ঢাকায় বসবাস করলেও নেত্রকোণার খালিয়াজুরী উপজেলার এক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়মিত হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করছেন— এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গেছে। বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থেকেও ওই শিক্ষিকা বেতন-ভাতা ও সব সুযোগ-সুবিধা ভোগ করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
অভিযুক্ত শিক্ষিকা নাজমা আক্তার খালিয়াজুরী উপজেলার নূরারীপুর গ্রামের রোকেয়া সাত্তার চৌধুরী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হিসেবে কর্মরত। ২০২৪ সালের ২৯ এপ্রিল তিনি এই বিদ্যালয়ে যোগ দেন। এরপর থেকেই তিনি বিদ্যালয়ে অনিয়মিত।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, ধনু নদের তীর ঘেঁষে ২০১৮ সালে প্রতিষ্ঠিত এই বিদ্যালয়ে বর্তমানে ৭৪ জন শিক্ষার্থী ও ৫ জন শিক্ষক আছেন। এর মধ্যে নাজমা আক্তার নিয়মিত বিদ্যালয়ে না গেলেও তাঁর নামে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর হচ্ছে প্রতিদিন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বর্তমানে নাজমা আক্তার ঢাকায় বসবাস করছেন। তাঁর হয়ে বিদ্যালয়ে ক্লাস নিচ্ছেন স্নাতক পড়ুয়া হেপি আক্তার নামের এক শিক্ষার্থী। শুধু তাই নয়, ওই শিক্ষার্থীই প্রতিদিন শিক্ষক হাজিরা খাতায় নাজমা আক্তারের নামে স্বাক্ষর করেন।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, বিদ্যালয়ের অধিকাংশ শিক্ষক নিয়মিত উপস্থিত না থাকায় শিক্ষার্থীর সংখ্যা দিন দিন কমে যাচ্ছে। তারা আরও বলেন, নাজমা আক্তার ঢাকায় থাকেন, কিন্তু বিদ্যালয়ে তাঁর নামে হাজিরা চলছে— এটা প্রকাশ্য অন্যায়। অথচ কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
গত ২৮ অক্টোবর বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, ৫ জন শিক্ষকের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মাত্র ২ জন। কিন্তু হাজিরা খাতায় দেখা যায়, অনুপস্থিত থাকা সত্ত্বেও নাজমা আক্তারের নামের পাশে স্বাক্ষর দেওয়া রয়েছে।
জানতে চাইলে হেপি আক্তার বলেন, নাজমা ম্যাডাম ঢাকায় আছেন। কয়েক মাস ধরে আমি তাঁর ক্লাস নিচ্ছি। ম্যাডাম বলেছিলেন, হাজিরা খাতায় তাঁর নাম লিখে স্বাক্ষর করতে। এটা আমার ভুল হয়েছে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শরীফা আক্তার বলেন, নাজমা আক্তার বিভিন্নভাবে আমাকে চাপ সৃষ্টি করে অবৈধভাবে সুবিধা নিচ্ছেন। আমি ভয়ে শিক্ষা অফিসারকে বিষয়টি জানাতে পারিনি।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক নাজমা আক্তার মোবাইলফোনে বলেন, আমি অসুস্থ থাকায় ঢাকায় আছি। হেপিকে দিয়ে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করানো ঠিক হয়নি, এটা আমার ভুল।
খালিয়াজুরী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ আবু রায়হান বলেন, নাজমা আক্তার বিদ্যালয়ে না এসেও হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করছেন বলে অভিযোগ পেয়েছি। এটি সম্পূর্ণ নিয়মবহির্ভূত। বিষয়টি তদন্ত করে তাঁর ও সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলার জন্য সুপারিশ করা হবে।
মন্তব্য করুন