শুক্রবার
৩১ অক্টোবর ২০২৫, ১৫ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শুক্রবার
৩১ অক্টোবর ২০২৫, ১৫ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মগজখেকো অ্যামিবা থেকে বাঁচার উপায় কী?

এনপিবি ডেস্ক
প্রকাশ : ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৬:১৫ পিএম
প্রাণঘাতী অ্যামিবার সংক্রমণ
expand
প্রাণঘাতী অ্যামিবার সংক্রমণ

মগজখেকো অ্যামিবা এক বার নাক বা মুখ দিয়ে শরীরে ঢুকলে মস্তিষ্কে গিয়ে বাসা বাঁধে। মস্তিষ্কের কোষ ও স্নায়ুর দফারফা করে তবেই ছাড়ে।

প্রাণঘাতী অ্যামিবার সংক্রমণে চলতি বছর কেরলে আক্রান্তের সংখ্যা পৌঁছেছে ৬৯ জনে। মৃত্যু হয়েছে ১৯ জনের। বদ্ধ জলাশয়, হ্রদ, পুকুর, সুইমিং পুল থেকে অ্যামিবা ছড়াচ্ছে বলে সাবধান করেছে স্বাস্থ্য দফতর। ফলে আতঙ্ক আর শুধু কেরলে সীমাবদ্ধ নেই, বাংলাতেও ছড়িয়েছে।

তবে চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, অ্যামিবার সংক্রমণ সঠিক সময়ে চিহ্নিত করা গেলে তার চিকিৎসা রয়েছে। কেরলের চিকিৎসকেরা মিল্টেফোসিন নামে এক ধরনের ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা করছেন। আরও কয়েক রকম ওষুধ ও ইঞ্জেকশন আছে বলে জানা গিয়েছে।

অ্যামিবা থেকে বাঁচার উপায় কী?

১) পুকুর বা বদ্ধ জলাশয়ের জলে স্নান না করাই ভাল।

২) উষ্ণ প্রস্রবণে স্নান করার সময়ে সাবধান হতে হবে। জল যেন কোনও ভাবেই নাক বা মুখ দিয়ে না ঢোকে।

৩) হ্রদ, নদী, বা পুকুরে সাঁতার কাটার সময় নাক বন্ধ রাখুন। সাঁতারের সময় নাকের ক্লিপ ব্যবহার করা ভাল।

৪) সুইমিং পুলের পানি অপরিষ্কার হলে বা তাতে পর্যাপ্ত ক্লোরিন না থাকলে সেখানে সাঁতার কাটা বিপজ্জনক হতে পারে।

৫) যে পানির স্রোত আছে, সেখানে সাধারণত অ্যামিবা থাকে না। তবে সম্পূর্ণ ডুব দিয়ে স্নান না করাই ভাল।

কী কী ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা চলছে?

মগজখেকো অ্যামিবা বা ‘নিগ্লেরিয়া ফোলেরি’-র সংক্রমণ ঘটলে মস্তিষ্ক ও কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রে সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়ে। মস্তিষ্কের কোষ ছিঁড়েখুঁড়ে দেয় অ্যামিবা, প্রদাহ মারাত্মক পর্যায়ে পৌঁছয়, ফলে মেনিনজাইটিসের মতো লক্ষণ দেখা দেয়। অ্যামিবার সংক্রমণে যে রোগ হয় তার নাম, প্রাইমারি অ্যামিবিক মেনিনগোএনসেফালাইটিস (পিএএম)। সঠিক সময়ে এই রোগের চিকিৎসা না হলে, রোগীকে বাঁচানো প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে।

চিকিৎসক অরুণাংশু তালুকদার জানিয়েছেন, অ্য়ামিবা নাক দিয়ে ঢুকে মস্তিষ্কে বাসা বাঁধার সঙ্গে সঙ্গেই যে লক্ষণ প্রকাশ পায়, তা নয়। সাত থেকে আট দিন পরে বা অনেক ক্ষেত্রে তারও পরে উপসর্গ দেখা দিতে থাকে। ভাইরাল জ্বরের মতো হয় প্রথমে, পরে মাথা যন্ত্রণা, বমি ভাব, মস্তিষ্কে মারাত্মক প্রদাহের কারণে খিঁচুনি শুরু হয়, রোগী কোমায় চলে যেতে পারেন। সেই সময়ে অ্যান্টি-ফাঙ্গাল ওষুধ অ্যাম্ফোটেরিসিন বি দ্রুত রোগীকে দিতে পারলে প্রদাহ অনেক কমে যায়। এই ওষুধ ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে শিরায় দেওয়া হয়।

মিল্টেফোসিন ওষুধটি দিয়ে রোগীদের চিকিৎসা করছেন কেরলের চিকিৎসকেরা। এটি অ্যান্টি-প্যারাসাইটিক ওষুধ, যা দিলে খিঁচুনি কমে যায়। ওষুধটি অ্যামিবার বিভাজন বন্ধ করতে পারে।

তা ছাড়া অ্যাজিথ্রোমাইসিন, ফ্লুকোনাজ়োলের মতো অ্যান্টি-ফাঙ্গাল ওষুধ দিয়েও চিকিৎসা করা হয় রোগীর। লক্ষণ বুঝে ওষুধ দেন চিকিৎসকেরা। কিছু ক্ষেত্রে মস্তিষ্কের প্রদাহ বিপজ্জনক জায়গায় পৌঁছলে স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধও দেওয়া হতে পারে রোগীকে।

google news সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন