

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


চীনের গুয়াংসি প্রদেশের নাননিং-এর হুইয়াওটিয়ান স্থল থেকে উদ্ধার হওয়া মধ্যবয়সী এক পুরুষের কঙ্কালের উপর নতুন গবেষণা করা হয়েছে।
এক্স-রে ডিফ্র্যাকশন এবং ইনফ্রারেড স্পেকট্রোস্কোপির মাধ্যমে দেখা গেছে, প্রায় ৮৪ শতাংশ হাড়ে নিম্ন তাপে দীর্ঘ সময় ধরে উত্তাপের প্রভাব দেখা যাচ্ছে।
গবেষণায় জানা গেছে, প্রায় ১৪ হাজার বছর আগে প্রাচীন এশিয়ার শিকারি-সংগ্রাহক সমাজের মানুষরা মৃতদেহকে ধোঁয়া দিয়ে শুকিয়ে সংরক্ষণ করত। ভিয়েতনামের প্রত্নস্থল থেকে পাওয়া সবচেয়ে পুরনো উদাহরণ এই পদ্ধতির প্রমাণ দেয়।
বিশ্বজুড়ে বহু সভ্যতা মৃতদেহ সংরক্ষণের বিভিন্ন পদ্ধতি ব্যবহার করেছে। ধোঁয়া, তাপ, লবণ, বরফে জমাটবদ্ধ করা বা রাসায়নিক প্রলেপ দিয়ে আর্দ্রতা দূর করা হতো। তবে চীন, ভিয়েতনাম ও ইন্দোনেশিয়ার প্রত্নস্থল থেকে পাওয়া কঙ্কালগুলোতে পোড়াভাব এবং ধোঁয়ার দাগ পাওয়া গেছে। মৃতদেহগুলো প্রায়ই ভাঁজ করা বা গুটিয়ে রাখা হতো, যা প্রমাণ দেয়, মৃতদেহকে নিম্ন তাপে ধোঁয়া দিয়ে শুকিয়ে সংরক্ষণ করা হতো এবং পরে খননকৃত গর্তে সমাহিত করা হতো।
এই প্রথার সঙ্গে মিল পাওয়া যায় আধুনিক পাপুয়া নিউগিনির কিছু জনগোষ্ঠীর ধোঁয়া দিয়ে মমি সংরক্ষণের রীতির সঙ্গে। অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির গবেষক ড. হসিয়াও-চুন হাং বলেন, এটি মানুষের এক চিরন্তন আবেগের প্রতিফলন—প্রিয়জনেরা যেন মৃত্যুর পরও একসঙ্গে থাকতে পারে।
২০১৭ থেকে ২০২৫ সালের মধ্যে ১১টি প্রত্নস্থল থেকে ৫৪টি কঙ্কাল পরীক্ষা করা হয়েছে। এক্স-রে ও ইনফ্রারেড স্পেকট্রোস্কোপির ফলাফল দেখিয়েছে, প্রায় ৮৪ শতাংশ হাড়ে দীর্ঘ সময় ধরে নিম্ন তাপে উত্তাপের প্রভাব ছিল।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আর্দ্র আবহাওয়ায় মৃতদেহ সংরক্ষণের জন্য ধোঁয়া দিয়ে শুকানো সম্ভবত সবচেয়ে কার্যকর পদ্ধতি ছিল। গবেষকরা মনে করেন, পরিবার বা সমাজের সদস্যরা কয়েক মাস ধরে মৃতদেহের পাশে থেকে যত্ন নিত—যা ভালোবাসা এবং আধ্যাত্মিক বিশ্বাসের গভীর প্রকাশ।
বিলকেন্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ববিদ ড. এমা বায়সাল এই আবিষ্কারকে অভূতপূর্ব হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তার মতে, শিকারি-সংগ্রাহক সমাজেও জটিল মৃত্যুরীতি ও বিশ্বাস ছিল, যা আমাদের পূর্বধারণার বাইরে।
মন্তব্য করুন