

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


বিশিষ্ট চিন্তাবিদ ও লেখক অধ্যাপক ড. সলিমুল্লাহ খান বলেছেন, “ইংরেজ আমল থেকে আমাদের দেশে এক ধরনের শাসন ব্যবস্থা চলছে। সেটা হলো মুষ্টিমেয় ও ভদ্রলোকের শাসন। তারা নিজেদের উপাধি দেয় এলিট।
রবিবার (২১ সেপ্টেম্বর) ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের নবীন শিক্ষার্থীদের দু’দিনব্যাপী ওরিয়েন্টেশন অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় দিনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
তিনি আরও বলেন, “এখনও সরকারি হিসেবেই আমাদের দেশের শতকরা ২৬ জন লোক নাম স্বাক্ষর করতে পারে না, যদিও স্বাক্ষরতা আর শিক্ষার মধ্যে পার্থক্য আছে। কিন্তু কই?
এদেশের প্রাইমারি ও সেকেন্ডারি শিক্ষার বিস্তার হয়নি। অথচ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার প্রতিযোগিতায় আমরা লেগেছি। এটাও এক ধরনের ঐতিহাসিক ঘটনার ফল।
এছাড়াও তিনি আরও বলেন, "আমি বাংলায় কথা বলছি। আমি তো জানি, আমি বাংলা ভাষাকে নতুন করে প্রাণ দেওয়ার জন্য কিছু বলছি না। পৃথিবীর সব দেশের ভাষায় শিক্ষা এবং জ্ঞান বিস্তারের মাধ্যম হয়ে গেলে সব মানুষের শিক্ষিত হবার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
আমাদের দেশে যে এখনও শত শত মানুষ শিক্ষিত হতে পারেনি, তাদের জ্ঞানের আলো আমরা মানুষের কাছে নিয়ে যেতে পারিনি লিখিত রূপে, সেটার কারণ হচ্ছে আমাদের অর্থ জ্ঞানের অভাব, আমাদের বিদ্যা শিক্ষার জন্য বইপত্রের অভাব।"
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ। বিশেষ অতিথি ছিলেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম এয়াকুব আলী এবং কোষাধ্যক্ষ ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম।
সভাপতির বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় হলো শিক্ষা ও জ্ঞানের সর্বোচ্চ স্তর। এখানে প্রবেশ মানে মানবজীবনের এক বিশেষ গৌরব ও দায়িত্বের সূচনা। শিক্ষার্থীরা কেবল ভর্তি হয়নি, বরং জ্ঞানের উচ্চতর পরিসরে প্রবেশ করেছে। এখান থেকে তারা বিশ্বপরিসরে জ্ঞান ছড়িয়ে দেওয়ার সুযোগ পাবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষত্ব হলো এখানে কোনো শিক্ষক পাঠ্যবই ডিক্টেট করেন না, বরং শিক্ষার্থীদের নিজে পড়তে, অন্বেষণ করতে ও জ্ঞান আহরণে উদ্বুদ্ধ করেন। এর মাধ্যমে তারা স্বনির্ভর অধ্যয়ন ও জ্ঞানার্জনের গুরুত্ব উপলব্ধি করে।”
স্বাগত বক্তব্য দেন ওরিয়েন্টেশন দ্বিতীয় দিনের আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক ও ধর্মতত্ত্ব অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আ. ব. ম. ছিদ্দিকুর রহমান আশ্রাফী। এসময় আরও বক্তব্য রাখেন সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. বেগম রোকসানা মিলি, ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ওবায়দুল ইসলাম ও প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহীনুজ্জামান।
সমাজকল্যাণ বিভাগের প্রভাষক মো. হাবিবুর রহমানের সঞ্চালনায় উপস্থিত ছিলেন কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. এমতাজ হোসেন, ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. সেলিনা নাসরিন এবং ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মনজুরুল হক। এসময় থিওলজি অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ অনুষদ, ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদ ও কলা অনুষদের সহস্রাধিক শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন।
অনুষ্ঠানটি ধর্মীয়গ্রন্থ পাঠের মাধ্যমে শুরু হয়। পরে জাতীয় সংগীত পরিবেশনা, জুলাই শহিদদের স্মরণে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। এসময় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে অতিথি ও নবীনদের ফুল ও গানের মাধ্যমে বরণ করে নেওয়া হয়। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাথমিক তথ্য সম্বলিত ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়। এছাড়াও দ্বিতীয় পর্বে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক পরিবেশনা অনুষ্ঠিত হয়।
মন্তব্য করুন