

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


সিরাজগঞ্জের বিসিক শিল্প পার্কে নির্ধারিত কাজ শেষ না করেই বিল উত্তোলনের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগের মূল ব্যক্তি আরাফাত কনস্ট্রাকশন ও তার সঙ্গে যোগসাজশে বিসিক প্রকৌশল বিভাগের আওয়ামী ঘরোয়া পরিচালক আব্দুল মতিন এবং সাবেক প্রকল্প পরিচালক জাফর বায়জিদ। তারা গত বছর জুনে শতভাগ বিল প্রদান করেছেন।
বিসিক চেয়ারম্যানের সঙ্গে যোগাযোগ করলে জানা গেছে, তিনি এই বিষয়ে অবগত নন এবং বলেছেন, “বিষয়টি আমি দেখছি।”
দুর্নীতি দমন কমিশন গত ৬ মার্চ শিল্প পার্ক এলাকা পরিদর্শন করেছে। দুদকের আঞ্চলিক কর্মকর্তা ইসতিয়াক আহমেদ জানান, “সিরাজগঞ্জ বিসিক শিল্প পার্ক এলাকা পরিদর্শন করে আমরা বেশ কিছু অনিয়ম পেয়েছি এবং প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট সংগ্রহ করেছি।”
সরেজমিনে দেখা যায়, ১৬ আগস্ট শনিবার বন্ধের দিনেই বিসিক শিল্প পার্কের প্রধান পরিচালক আব্দুল মতিন ও একাধিক কর্মকর্তা প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করেছেন। তবে রাস্তায় মেজারমেন্ট নেওয়া বা কাজের মান যাচাই করা হয়নি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা জানান, ড্রেন ও রাস্তা নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান নিরাপত্তা জামানত নেওয়ার জন্য বিসিক ঢাকা অফিসে চিঠি দিয়েছে, এজন্য পরিচালক পরিদর্শনে এসেছিলেন। অপরদিকে, আরাফাত কনস্ট্রাকশন জানিয়েছে, “জামানতের আবেদন দেওয়া হয়েছে কি না, আমি জানি না।”
তথ্য অধিকার আইনের মাধ্যমে তথ্য চাওয়া হলে, সিরাজগঞ্জ বিসিক শিল্প নগরীর ব্যবস্থাপক মাহবুবুল লিখিতভাবে জানান, “আপনি যে ধরনের তথ্য চেয়েছেন, তা ব্যবসায়িক গোপনীয়তা সম্পর্কিত। এছাড়া কাজ যথাযথভাবে সম্পন্ন হয়েছে, যা তথ্য অধিকার আইনে দেওয়া যাবে না।”
তথ্য অনুসন্ধানে জানা গেছে, ২০২০-২০২১ অর্থ বছরে ড্রেন নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান আতাউর রহমান খান ও রাস্তা নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান মজিদ সন্স লিমিটেড নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করতে পারেনি। ফলে প্রায় ২০ কোটি টাকা জরিমানা করা হলেও আদায় হয়নি। প্রকল্প এলাকায় নির্ধারিত বালু ভরাটও হয়নি। নকশা অনুযায়ী গভীর না করায় লেকে পানি জমছে না।
গত বছর ২, ১৯ ও ২৬ জুন বিসিক শিল্প পার্ক প্রকল্প নিয়ে একাধিক সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়। সেখানে দেখানো হয়েছে, নিম্নমানের ইট ব্যবহার করে রাস্তা নির্মাণ, খোয়া তৈরিতে মানহীন ইট ব্যবহার এবং কার্পেটিংয়ের কাজ যথাযথ মানে না হওয়া। স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, “খোয়ার চেয়ে বালুর ব্যবহার বেশি। প্রকল্প এলাকায় ভরাটকৃত বালু দিয়েই সাব-বেজের কাজ করা হচ্ছে।”
বিসিক শিল্প পার্কটি সিরাজগঞ্জের সদর উপজেলার ছাতিয়ানতলী, পশ্চিম মোহনপুর, বনবাড়িয়া, বেলটিয়া ও মোরগ্রাম মৌজার অংশে প্রায় ৪০০ একর জমিতে বাস্তবায়ন করা হয়েছে। প্রকল্পটির মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৭১৯ কোটি ২১ লাখ টাকা। এখানে ৮২৯টি প্লটে কমপক্ষে ৫৭০টি শিল্প স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে।
মন্তব্য করুন