

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


ঘন কুয়াশা ও দিনের তাপমাত্রা ক্রমাগত কমে আসায় রাজশাহী অঞ্চলে জেঁকে বসেছে শীত। জেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। বুধবার ৩১ ডিসেম্বর ভোর সাড়ে ছয়টার দিকে রাজশাহীতে চলতি মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৮ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ ছিল শতভাগ।
গত তিন দিন ধরে পদ্মা পাড়ের এই জেলায় সূর্যের দেখা নেই। ঘন কুয়াশা আর হিমেল বাতাসে দিন দিন বাড়ছে শীতের দাপট। এতে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছেন দরিদ্র ও খেটে খাওয়া মানুষ। ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক জনজীবন। শীতবস্ত্রের অভাবে ছিন্নমূল মানুষগুলোকে চরম কষ্টে রাত কাটাতে হচ্ছে। কেউ কেউ খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন।
চারঘাট উপজেলা থেকে ভোরে কাজের সন্ধানে রাজশাহী নগরীর তালাইমারী এলাকায় এসেছেন দিনমজুর নাজমুল। তিনি বলেন, আজ প্রচণ্ড ঠান্ডা। মানুষ ঘর থেকে বের হচ্ছে না, তাই কাজও পাওয়া যায়নি। তিনি আরও জানান, আগে সপ্তাহে অন্তত পাঁচ দিন কাজ পাওয়া যেত। কিন্তু শীত বাড়ার পর থেকে সপ্তাহের বেশিরভাগ দিনই কাজ মেলে না।
রিকশাচালক জাকির আলী বলেন, হুহু করে ঠান্ডা বাতাস বইছে। শরীর কাঁপছে। খুব কষ্টে দিন কাটছে এখন।
নগরীর ভদ্রা বস্তি এলাকার সত্তর বছরের মর্জিনা বেগম জানান, গায়ে দেওয়ার মতো ভালো কাপড় আর নেই। আগে কেউ কেউ কম্বল দিত, কিন্তু এবার কেউ আসেনি। এই শীতে টিকে থাকাই দায় হয়ে পড়েছে।
শীতের প্রভাব পড়েছে নগর জীবনের ওপরও। সন্ধ্যা নামার পরপরই নগরী ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে। বিকেলের পর থেকেই বন্ধ হয়ে যাচ্ছে বেশিরভাগ দোকানপাট।
রাজশাহীর বানেশ্বর এলাকার বাসিন্দা তুষার আলম বলেন, শহরের তুলনায় গ্রামাঞ্চলে শীতের তীব্রতা আরও বেশি। খোলা মাঠ আর কুয়াশার কারণে গ্রামে শীত বেশি অনুভূত হচ্ছে।
বিভাগীয় স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে, সরকারি হাসপাতাল ও বেসরকারি ক্লিনিকগুলোতে ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্কদের হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার হার তুলনামূলক বেশি।
আবহাওয়া অফিস জানায়, মেঘ ও ঝিরিঝিরি বৃষ্টির প্রভাব কেটে গেলে শীতের তীব্রতা আরও বাড়তে পারে।
এ বিষয়ে রাজশাহী আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রহিদুল ইসলাম বলেন, বুধবার রাত সোয়া তিনটার দিক থেকে শীতের তীব্রতা বাড়তে শুরু করে। ভোরের পর থেকে কুয়াশার আধিক্য দেখা যায়। কুয়াশার কারণে ঝিরিঝিরি বৃষ্টির মতো অনুভূতি হচ্ছে। রাজশাহীসহ উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে এই পরিস্থিতি আরও কয়েকদিন বিরাজ করতে পারে।
মন্তব্য করুন
