খেলার শুরুতে দরকার হচ্ছে লেভেলপ্লেইং ফিল্ড: শফিকুল ইসলাম মাসুদ

পটুয়াখালী-২ (বাউফল) আসনে জামায়াতে ইসলামীর মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেছেন, ‘খেলার শুরুতে দরকার হচ্ছে লেভেলপ্লেইং ফিল্ড, সৌজন্যতাবোধ, রেফারির সিদ্ধান্ত উভয়ের মেনে নেয়া।

তিনি বলেন, আমাদের সামনে নির্বাচন। আমরা মনে করি, খেলার মধ্যদিয়ে প্রত্যেক রাজনৈতিক দল একটা মেসেজ পাবে- লেভেলপ্লেইং ফিল্ড দরকার, রেফারির নিরেপক্ষতা দরকার। আমরা চাই, আগামী নির্বাচনে প্রত্যেকে কৌশলে মাধ্যমে প্রতিভা বিকাশের মাধ্যমে ইতিবাচক রাজনৈতিক ধারা বাউফলসহ সারা বাংলাদেশে উপস্থাপন করবো।’

শুক্রবার (২৮ নভেম্বর) বিকেলে বাউফল উন্নয়ন ফোরামের উদ্যোগে উপজেলা পাবলিক মাঠে অনুষ্ঠিত ‘জুলাই শহীদ স্মৃতি প্রীতি ফুটবল খেলা’ শেষে বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ এসব কথা বলেন।

শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, তরুণ যুকদেরকে অশ্লীলতা-বেহায়াপনা, মাদক থেকে মুক্ত রেখে তাদের প্রতিভা বিকাশের জন্য নিজেদের আরও প্রতিযোগী গড়ে তুলে বিশ্বের দরবারে উপস্থাপন করতে পারে।

খেলায় অংশ নেয় বাউফল উপজেলা একাদশ ও বাউফল পৌরসভা একাদশ। নির্ধারিত সময়ে গোলশূন্য থাকার পর টাইব্রেকারে ৫–৪ গোলের ব্যবধানে উপজেলা একাদশ বিজয়ী হয়। বিজয়ী দলকে ৫০ হাজার টাকা এবং রানারআপ দলকে ৩০ হাজার টাকার প্রাইজমানি দেওয়া হয়।

এর আগে সকাল সাড়ে আটটা থেকে দুপুর পর্যন্ত বাউফল উন্নয়ন ফোরামের উদ্যোগে জুলাই শহীদদের স্মরণে বাউফলে একটি ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প অনুষ্ঠিত হয়।

ক্যাম্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসকেরা ডায়াবেটিস, শ্বাসকষ্ট, গ্যাস্ট্রিক, চর্মরোগ ও শিশুদের বিভিন্ন রোগসহ নানা জটিলতা নিয়ে আসা রোগীদের চিকিৎসাসেবা দেন। এসময় বিনামূল্যে ওষুধ সরবরাহ করে বায়োফার্মা লিমিটেড ও ইবনে সিনা লিমিটেড।

এদিন ক্যাম্প থেকে কয়েক'শ মানুষ চিকিৎসাসেবা নেন। মেডিকেল ক্যাম্পে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের নেতৃত্ব দেন ইবনে সিনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক ও ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের সহধর্মিণী ডা. জাকিয়া ফারহানা।

স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স দূরে হওয়ায় নিয়মিত চিকিৎসা পাওয়া কঠিন। বিনামূল্যের ক্যাম্প তাঁদের জন্য বড় সহায়তা। তাঁরা এ ধরনের উদ্যোগ নিয়মিত করার দাবি জানান।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাউফল ফাউন্ডেশন ও বাউফল উন্নয়ন ফোরামের চেয়ারম্যান ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক তারকা কায়সার হামিদ, জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক খালেদ মাসুদ পাইলট এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক (জিএস) এস এম ফরহাদ।

ঢাকসুর জিএস এস এম ফরহাদ বলেন, আমি বাংলাদেশের একজন নাগরিক, আগামী জাতীয় নির্বাচনে একজন ভোটার। আমার দীর্ঘসময় পর্যবেক্ষণে যে বাস্তবতা চোখে পড়েছে—এই দেশ বহু ক্রাইসিসের ভেতর দিয়ে গেছে। বারবার মনে হয়েছে, গণ–আন্দোলনের পর আমরা হয়তো মুক্তির পথে হাঁটবো। কিন্তু দুঃখজনকভাবে সরকার বদলায়, মুখ পরিবর্তন হয়, কিন্তু ব্যবস্থার চরিত্র একই থাকে। আবার আমরা পুরোনো জায়গায় ফিরে যাই।

তিনি আরও বলেন, ২৪-এর গণ অভ্যুত্থানের পরও আমাদের মনে হয়েছিল—এবার হয়তো সত্যিকারের পরিবর্তন আসবে। কিন্তু আমরা দেখেছি—কিছু রাজনৈতিক দল নিজেদের অন্তঃকোন্দলে নিজেদেরই নেতাকর্মী হত্যা করেছে, বাস–টেম্পু স্ট্যান্ড দখল করেছে, বাজার–নিয়ন্ত্রণ করেছে। যেসব নেতাকর্মীর হওয়া উচিত ছিল আগামীর নীতি–নির্ধারক, তারা বরং চাঁদাবাজির মতো পুরোনো ধাঁচের রাজনীতির দিকে ফিরে গেছে।

ফরহাদ বলেন, ঢাকসুতে আমরা একটা নতুন দৃষ্টান্ত দেখেছি। শিক্ষার্থীরা আর সেই পুরোনো বন্দোবস্ত চায় না। তারা আর অস্ত্রের মহড়া চায় না। তারা সেই পলিটিক্যাল ক্লাস চায় না যারা হুমকি–ধমকি দিয়ে নেতৃত্ব কুক্ষিগত করতে চায়। ঢাকসু, জাকসু কিংবা রাকসুর কোথাও কেউ রাজনৈতিক মাসল পাওয়ার দিয়ে শিক্ষার্থীদের রায় দখল করতে পারেনি। দিনশেষে জিতেছে শিক্ষার্থীরা, জিতেছে তরুণরা। তরুণরা আজ তাকেই ভোট দেবে—যিনি ইনসাফের পক্ষে থাকবেন,যিনি প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হবেন—তিনি অতীতে চাঁদাবাজি করেননি, ভবিষ্যতেও করবেন না।

গত বছরের জুলাই আন্দোলনে নিহত বাউফলের সাত শহীদের পরিবারের সদস্যরা মাঠে উপস্থিত ছিলেন। সন্ধ্যায় সাইমুম শিল্পী গোষ্ঠি, হেরার রশ্মি ও কলতান শিল্পীগোষ্ঠির পরিবেশনায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়।