মঙ্গলবার
১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
মঙ্গলবার
১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

যুবলীগ নেতা দেলুর সাম্রাজ্যে দুদকের হানা, ৭ কোটি টাকার সম্পত্তি ক্রোক

নাজমুল হাসান, (নরসিংদী)
প্রকাশ : ০২ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১:২৮ এএম
যুবলীগ নেতার বাড়ি। ইনসেটে দেলোয়ার হোসেন দেলু ছবি
expand
যুবলীগ নেতার বাড়ি। ইনসেটে দেলোয়ার হোসেন দেলু ছবি

নরসিংদীর পলাশে যুবলীগ নেতা দেলোয়ার হোসেন দেলুর প্রায় ৭ কোটি টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ ক্রোক করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

আদালতের নির্দেশনায় সোমবার (১ ডিসেম্বর) দুপুরে দুদকের একটি দল অভিযান চালিয়ে উপজেলার ডাঙ্গা ইউনিয়নের কাজিরচর এলাকায় দেলুর দুটি ভবন ক্রোক করে সরকারের হেফাজতে নেয়।

দুদক, সম্মিলিত জেলা কার্যালয় গাজীপুর-এর সহকারী পরিচালক মো. এনামুল হকের নেতৃত্বে পরিচালিত অভিযানে পলাশ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আবুবক্কর সিদ্দিকী রিসিভার হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন।

দুদক সূত্র জানায়, যুবলীগ নেতা দেলোয়ার হোসেন দেলুর বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত ৮ কোটি ৯৫ লাখ টাকার সম্পদের অভিযোগে সহকারী পরিচালক মো. এনামুল হক মামলা করেন।

তদন্ত শেষে তার ৬ কোটি ৮১ লাখ টাকার সম্পদকে অবৈধ হিসেবে চিহ্নিত করে ক্রোকের আবেদন জানানো হয়। পরে নরসিংদীর সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ শেখ হুমায়ুন কবীর সম্পদ ক্রোক ও রিসিভার নিয়োগের আদেশ দেন।

আদালতের নির্দেশনায় যে সম্পদ ক্রোক করা হয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে-

২৭ শতাংশ জমির ওপর নির্মিত ২ হাজার ৩০৪ বর্গফুটের তিনতলা ডুপ্লেক্স বাড়ি, যার মূল্য ৩ কোটি ১৩ লাখ ২৭ হাজার ৪৪ টাকা।

৬ শতাংশ জমিতে নির্মিত ৩ হাজার ৬৫০ বর্গফুটের পাঁচতলা ভবন, যার মূল্য ৩ কোটি ৬৮ লাখ ৮ হাজার ২৫৭ টাকা।

মোট ক্রোককৃত সম্পদের মূল্য ৬ কোটি ৮১ লাখ ৩৫ হাজার ৩০১ টাকা।

অভিযানে দুদকের সহকারী পরিচালক মো. মশিউর রহমান, নরসিংদী জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সিনিয়র সদস্য হলধর দাসসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।

স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা জানান, ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর দেলোয়ার ছাত্রলীগ ও পরবর্তীতে যুবলীগের নেতৃত্বে আসেন। এরপর শীতলক্ষা নদী ও আশপাশের এলাকায় বালু উত্তোলন, চাঁদাবাজি ও নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে প্রভাব বিস্তার করেন বলে তাদের অভিযোগ।

তারা বলেন, দেলুর বিরুদ্ধে হত্যাসহ একাধিক মামলা রয়েছে। চলমান পরিস্থিতিতে তিনি এলাকা ছেড়ে পালিয়ে গেছেন বলেও স্থানীয়দের দাবি।

অভিযানের নেতৃত্বদানকারী পলাশ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আবুবক্কর সিদ্দিকী বলেন, আদালতের নির্দেশে ভবন দুটি ক্রোক করে রিসিভার হিসেবে তিনি দায়িত্ব নিয়েছেন।

মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত সম্পদ যাতে বেহাত বা বিক্রি না হয়, তা নিশ্চিত করতে প্রশাসনের লোকবল দিয়ে পর্যবেক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ভবনে থাকা ভাড়াটিয়াদের দ্রুত সরে যেতে বলা হয়েছে বলেও তিনি জানান।

google news সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

X