

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে নানা অসুস্থ্যতার কারণে সর্বশেষ ২০১০ সাল থেকে আওয়ামী লীগের রাজনীতি থেকে অবসরে যাওয়ার পরও বৈষম্য বিরোধী হত্যা মামলায় গ্রেফতারের ভয় দেখিয়ে মোঃ ইসহাক মিয়ার (৭৩) কাছ থেকে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগ উঠেছে পুলিশের সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মো: জহিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে।
পুলিশের সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) জহিরুল ইসলাম সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় কর্মরত অবস্থায় গত (৩ নভেম্বর) দুপুরে নাসিক ১০ নং ওয়ার্ডের গোদনাইল রসুলবাগ এলাকায় এ ঘটনাটি ঘটে। বর্তমানে সেই পুলিশ সদস্য ফতুল্লা থানায় কর্মরত রয়েছেন।
বয়জেষ্ঠ ইসহাক মিয়া ২ বার হার্ট স্ট্রোক, ১ বার ব্রেইন স্ট্রোক ছাড়াও তিনি কিডনি জনিত রোগে আক্রান্ত বলে পরিবার সূত্রে জানা গেছে।
সূত্রে জানা যায়, গত ৩ নভেম্বর দুপুর দুইটার সময় সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় কর্মরত অবস্থায় পুলিশের সরকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মোঃ জহিরুল ইসলাম ও তার সঙ্গে থাকা অজ্ঞাত চাকরীচ্যুত পুলিশ সদস্য পরিচয়দানকারী (যার নাম শিমুল বলে জানা যায়) ব্যক্তিকে নিয়ে ভুক্তভোগী মোঃ ইসহাক মিয়ার বাসায় প্রবেশ করেন। বাসায় প্রবেশ করে পুলিশের উপস্থিতে বিএনপি নেতা হালিম তৎকালীন সময়ের আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী অঙ্গ সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা কর্মীদের সাথে মোঃ ইসহাক মিয়ার বিভিন্ন ছবি, ভিডিও ফুটেজ দেখিয়ে ভয়ভীতি দেখান পরিবারের সদস্যদের।
সূত্রে আরও জানা যায়, সিদ্ধিরগঞ্জ থানার সাবেক ওসি মোহাম্মদ শাহিনুর আলমের কথা বলে পুলিশের পক্ষ থেকে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করা হয় ভুক্তভোগীর পরিবারের কাছ থেকে। পুলিশ সদস্যরা পাঁচ লাখ টাকা দাবি করলে ভুক্তভোগীর পরিবার দিতে অস্বীকৃতি জানালে (এএসআই) জহিরুল ইসলাম ভুক্তভোগী মোঃ ইসহাক মিয়াকে হ্যান্ডকাপ পরিয়ে একপ্রকার ভীতিকর পরিস্থিতি তৈরি করেন। পরে ভুক্তভোগীর ছেলে পিতার অসুস্থতার কথা চিন্তা করে বিষয়টি এক লাখ টাকায় রফাদফা করেন। সর্বশেষ বিষয়টি রফাদফা হলে নগদ এক লাখ টাকা নিয়ে (এএসআই) জহিরুল ইসলাম তার নিজস্ব ব্যাগে ঢুকিয়ে বের হওয়ার পূর্বে ঘরে লাগানো সিসিটিভি ক্যামেরা তার চোখে পড়ে। পরে ঘরের সিসিটিভি ক্যামেরা এবং ডিভিআর সহ ডিভাইসের তার ছিড়ে ব্যাগে ঢুকিয়ে দ্রুতই ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন পুলিশ সদস্য জহিরুল ইসলাম ও বিএনপি নেতা হালিম। এমনকি আগামী দুই থেকে তিন দিনের মধ্যে ৩০-৩৫ হাজার টাকার মধ্যে একটি ম্পার্ট মোবাইল ফোন কিনে দিতে বলেন ভুক্তভোগীর ছেলে সাইফুল ইসলামকে।
তবে এ ঘটনার নেপথ্যে রয়েছেন একই এলাকার নাসিক ৮নং ওয়ার্ড বিএনপি'র সদস্য মোঃ হালিম। মূলত গত পাঁচ আগস্টের পর থেকে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় দায়ের হওয়া বৈষম্য বিরোধী হত্যা মামলার ভয় দেখিয়ে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে বিএনপি নেতা মোঃ হালিমের বিরুদ্ধে।
অভিযোগ উঠেছে গ্রেফতারের ভয় দেখিয়ে এক লাখ টাকা নিয়েও ক্ষান্ত হয়নি পুলিশের এএসআই জহিরুল ইসলাম ও বিএনপি নেতা হালিম। টাকা নেওয়ার পরেও ভুক্তভোগীর পরিবারের কাছ থেকে দাবি করা হয় একটি স্মার্টফোন। সেই স্মার্টফোন পেতে ভুক্তভোগীর ছেলে সাইফুল ইসলামের সাথে দফায় দফায় যোগাযোগ করেন এএসআই জহিরুল ইসলাম। মোবাইল ফোন কিনে দিতে ভুক্তভোগীর পরিবারের পক্ষ থেকে অপারগতা জানালে ফের গ্রেফতারের ভয় দেখান জহিরুল ইসলাম। পরবর্তীতে বাধ্য হয়ে ভুক্তভোগীর ছেলে ব্যবসায়ী মোঃ সাইফুল ইসলাম নারায়ণগঞ্জের চাষাড়া বি.বি. রোড জাকির সুপার মার্কেট এর নিচতলাস্থ মোবাইলের দোকান থেকে ৩২ হাজার টাকা মূল্যের একটি মোবাইল ফোন কিনে দেন এএসআই জহিরুল ইসলামকে।
বিষয়টি জানতে মুঠোফোনে পুলিশের সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) জহিরুল ইসলাম সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান। ঘটনার বিস্তারিত জানতে চাইলে পুলিশের কর্মকর্তা এই প্রতিবেদকে সরাসরি কথা বলার জন্য বলেন এবং চায়ের দাওয়াত দেন।
এদিকে ভয়ভীতি দেখিয়ে মামলা বানিজ্যের বিষয়ে জানতে চাইলে নাসিক ৮ নং ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য মো: হালিমের মুঠো ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও (০১৯২....৫৩২) তিনি রিসিভ করেননি।
বিষয়টি সম্পর্কে জানতে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শাহিনুর আলম জানান, এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে এমন কোনো ঘটনা ঘটিয়ে থাকলে আমাদের উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা তদন্ত করে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবেন বলে জানান তিনি।
মন্তব্য করুন
