

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


লালমনিরহাট-বুড়িমারী মহাসড়কের মিশনমোড় থেকে সাপ্টিবাড়ী অংশের তিন কিলোমিটার ৩৬০ মিটার সড়ক সংস্কার কাজের অংশ হিসেবে মহাসড়কের দুপাশের বিভিন্ন স্থানে নির্মাণাধীন ১৭০০ মিটার ফুটপাতের কাজে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। নির্মানাধীন ফুটপাতের উপর বসানো টাইলস উঠে যাচ্ছে দু-তিনের মাথায়।
স্থানীয়দের অভিযোগ, নিম্নমানের সামগ্রী ও বালুর মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহারের কারণেই এমন দশা। সড়ক ও জনপদ (সওজ) বিভাগ বলছে, অভিযোগ প্রমাণিত হলে ঠিকাদারের বিল আটকে দেওয়াসহ কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সওজ এর তথমতে লালমনিরহাট-বুড়িমারী মহাসড়কের মিশনমোড় থেকে সাপ্টিবাড়ী অংশের সড়ক সংস্কার ও ফুটপাত নির্মাণের কাজ পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ‘ডন এন্টারপ্রাইজ’। এ কাজটি সাব-ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে বাস্তবায়ন করছে মের্সাস হক এন্টারপ্রাইজ নামের একটি প্রতিষ্ঠান।
গতবছরের ৭ নভেম্বর প্রায় ১৩ কোটি ৫০ লাখ টাকা বরাদ্দে শুরু হওয়ায় এ প্রকল্পের আওতায় ১৭'শ মিটার ফুটপাত নির্মাণ করা হচ্ছে। যা শেষ হবার কথা ছিলো চলতি বছরের জুনে।
সরেজমিনে দেখা যায়, মহাসড়কের মিশনমোড়-সাপ্টিবাড়ী অংশের মিশনমোড় থেকে ক্যান্টিনমোড় পর্যন্ত ফুটপাত নির্মাণের অন্তত ২০ টি স্থানে টাইলস নড়বড়ে অবস্থায় রয়েছে। কোথাও কোথাও টাইলস উঠে গিয়ে নিচের বালু ও সিমেন্টের দুর্বল আস্তরণ স্পষ্ট হয়ে পড়েছে, আবার কোথায় ফেটে গেছে বসানো টাইলস।
সচেতন মহল ও স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, এখনই সঠিক তদন্ত ও তদারকি নিশ্চিত করা না হলে এই উন্নয়ন কাজ দীর্ঘস্থায়ী হবে না। মানহীন কাজের ফলে ফুটপাত দ্রুত ভেঙে পড়লে একদিকে যেমন ভোগান্তিতে পড়বে সাধারণ মানুষ, অন্যদিকে প্রশ্নবিদ্ধ হবে সরকারি উন্নয়ন কার্যক্রম।
স্থানীয় পান দোকানদার মজিবর রহমান অভিযোগ করে বলেন, কাজে নিম্নমানের সিমেন্ট ব্যবহার করা হচ্ছে এবং বালুর পরিমাণ অনেক বেশি। টাইলস বসানোর পরপরই তা উঠে যাচ্ছে। আমরা বারবার মানসম্মত কাজের অনুরোধ করলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তা কানে তুলছে না।
আরেক স্থানীয় বাসিন্দা টিটু বলেন, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান অধিক লাভের আশায় কাজে নয়-ছয় করছে। বালু দিয়ে দায়সারাভাবে ঢালাই দেওয়ায় কাজ শেষ হতে না হতেই টাইলস ভেঙে যাচ্ছে বা উঠে আসছে। যথাযথ কর্তৃপক্ষের নজরদারি না থাকলে সরকারি টাকার অপচয় ছাড়া আর কিছুই হবে না।
অনিয়মের অভিযোগ অস্বীকার করে সাব-ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স হক এন্টারপ্রাইজের প্রতিনিধি ইউসুফ আলী বলেন, কাজে বিন্দুমাত্র অনিয়ম হয়নি। টাইলস বসানোর পর ‘কিউরিং’ বা জমাট বাঁধার জন্য অন্তত দুই দিন সময় দিতে হয়। সেই সময় না দিলে সমস্যা হতে পারে।
প্রতিষ্ঠানটির হিসাবরক্ষক শামসুল আলম রাব্বি দাবি করেন, ফুটপাতের পাশে বিভিন্ন দোকান ও রেস্টুরেন্ট থাকায় টাইলস বসানোর পরপরই এর ওপর দিয়ে গাড়ি চলাচল করে। এ কারণেই কিছু জায়গায় টাইলস নড়ে গেছে। কাজের মান নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় নড়েচড়ে বসেছে লালমনিরহাট সড়ক ও জনপদ বিভাগ। নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ না হওয়ায় ঠিকাদারকে জরিমানার আওতায় আনার কথাও জানানো হয়েছে।
লালমনিরহাট সওজ-এর উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোজাম্মেল হক বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পরপরই আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করবো ।
টাইলস সেটিংয়ের জন্য যে সময় (সেটিং টাইম) পাওয়ার কথা ছিল, তা এখানে পাওয়া যায়নি। আমরা বিষয়টি নিবিড়ভাবে তদারকি করছি।
তিনি আরও বলেন, কাজের গুণগত মান নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত কোনো বিল দেওয়া হবে না। আমরা যতটুকু সঠিক কাজ বুঝে পাব, ঠিক ততটুকুরই বিল পরিশোধ করব। অনিয়ম বা দুর্বল কাজের কোনো বিল ভাউচার করা হবে না।
মন্তব্য করুন
