

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


লক্ষ্মীপুর শহরের অলিগলিতে সন্ধ্যা নামলেই দেখা যায় এক পরিচিত মানুষকে কাঁধে ব্যাগ, হাতে পুরোনো দাঁড়িপাল্লা, আর মুখে শান্ত হাসি। তিনি তোফায়েল হোসেন। বয়স ৬০ পেরিয়েছে, কিন্তু থামেনি তাঁর পথচলা।
পেশায় বাদাম বিক্রেতা তোফায়েল চার দশকের বেশি সময় ধরে হাঁটছেন শহরের রাস্তায় রাস্তায়। বিক্রি করছেন বাদাম, আর সাথে মানুষের কাছে পৌঁছে দিচ্ছেন এক পরিশ্রমী জীবনের গল্প।
সদর উপজেলার চুমচর ইউনিয়নের কালিচর গ্রামে তোফায়েলের বাড়ি। পাঁচ সন্তানের বাবা তিনি। বাদাম বিক্রির আয়েই চলে সংসার। কখনো আবার দিনের মজুরিও করতে হয়। প্রতিদিন আয় হয় প্রায় দুই হাজার টাকা।
তবে তার জীবনের সবচেয়ে বড় স্মৃতি লুকিয়ে আছে হাতে থাকা দাঁড়িপাল্লায়। টানা ৪৬ বছর ধরে এই এক পাল্লাই তাঁর সঙ্গী। এবার নতুন পাল্লা নেওয়ার ইচ্ছে আছে, কিন্তু পুরোনোটির সঙ্গে রয়েছে আলাদা টান। কাজের যন্ত্রের চেয়েও বেশি, এটা তার কাছে ইতিহাস, সংগ্রামের প্রতীক।
বাদাম বিক্রেতা এনপিবিকে তোফায়েল বলেন, ছোটবেলা থেকেই এই কাজ করি। কর্ম করে খাই, এটাই আমার গর্ব। স্বাবলম্বী হয়েছি নিজের পরিশ্রমে। কাজটা ছেড়ে দিতে মন চায় না।
দাঁড়িপাল্লার বিষয়ে তিনি জানান, ৪৬ বছর ধরে এই দাঁড়িপাল্লা আমার জীবন সঙ্গী তাই এটি আমার জন্য মায়া কাজ করে। নতুন পাল্লা নিবো, কিন্তু পুরোনোটা ছাড়তে মন সায় দেয় না। কারণ এটা আমার কাছে শুধু কাজের যন্ত্র নয় একটা স্মৃতি, একটা ইতিহাস।
লক্ষ্মীপুর শহরের স্থানীয় বাসিন্দা রাজু বলেন, তোফায়েল ভাইকে ছোটবেলা থেকে দেখি। তার এই দাঁড়িপাল্লা অনেক পুরোনো, এখনো এটি দিয়ে কাজ করছে। তিনি একজন সৎ, পরিশ্রমী মানুষ। তার মতো আন্তরিক বিক্রেতা এখন খুব কম পাওয়া যায়।
শহরের ব্যবসায়ী থেকে পথচারী, সবাই চেনেন তোফায়েলকে। তাঁর পরিশ্রম, সরলতা এবং আন্তরিকতার জন্য মানুষের মনে তাঁর প্রতি আলাদা সম্মান।
বয়স বাড়ছে, চুলে পাক ধরেছে, কিন্তু তোফায়েলের হাঁটা থামেনি। কারণ তাঁর কাছে পেশা শুধু জীবিকা নয়,জীবনেরই অংশ। আর এই পথচলাই বলে দেয়,পরিশ্রমী মানুষের গল্প কখনো থামে না।
মন্তব্য করুন
