মঙ্গলবার
১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
মঙ্গলবার
১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ফেসবুক স্ট্যাটাসকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে নিহত ১, আহত শতাধিক

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৩:৪৩ পিএম
ফেসবুক স্ট্যাটাসকে কেন্দ্র করে দফায় দফায় উত্তেজনা
expand
ফেসবুক স্ট্যাটাসকে কেন্দ্র করে দফায় দফায় উত্তেজনা

হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জ উপজেলার কাকাইলছেও গ্রামে ফেসবুক স্ট্যাটাসকে কেন্দ্র করে দফায় দফায় উত্তেজনা, হামলা–ভাঙচুর ও রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।

সোমবার সকাল সাতটা থেকে প্রায় তিন ঘণ্টাব্যাপী চলা এই সংঘর্ষে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন উভয় পক্ষের শতাধিক মানুষ।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ও সেনাবাহিনী যৌথভাবে অভিযান পরিচালনা করে।

স্থানীয় সূত্র জানায়, কিশোরগঞ্জের ইটনা-মিঠামইন আসনে বিএনপির মনোনয়ন নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উত্তপ্ত পরিবেশ বিরাজ করছিল।

আসনে অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান মনোনয়ন পাওয়ার পর তাঁর সমর্থক কাকাইলছেও গ্রামের হান্নান মিয়া ফেসবুকে সক্রিয় প্রচার চালান। অন্যদিকে একই আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশী সাবেক ডিসি ও বিএনপি নেতা রহিম মোল্লার অনুসারী সওদাগর পরিবারের সঙ্গে তাঁর বিরোধ আরও গভীর হয়।

গত রোববার বিকেল ৫টার দিকে হান্নান মিয়া সওদাগর পরিবারের মৃত এক সদস্যকে নিয়ে অবমাননাকর ও আক্রমণাত্মক স্ট্যাটাস দিলে পরিস্থিতি চরম উত্তেজনায় রূপ নেয়।

বিষয়টি জানতে চাইতে গেলে হান্নান মিয়া ও আল কোরআন সওদাগরের মধ্যে তর্কাতর্কির সৃষ্টি হয়, যা পরদিন সকালে বড় ধরনের সংঘর্ষে পরিণত হয়।

অভিযোগ রয়েছে, সংঘর্ষের সময় হান্নান মিয়ার অনুসারীরা আল কোরআন সওদাগরের দোকানে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে এবং দোকানের ফ্রিজ, সাইকেল, বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মোবাইল ফোন, আসবাবপত্রসহ মূল্যবান জিনিসপত্র লুটপাট করে। এছাড়া কুহিন সওদাগরের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানেও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।

অন্যদিকে, বাবুল মিয়া অভিযোগ করেন সওদাগর পরিবারের লোকজনই প্রথমে তাঁদের ফার্নিচারের দোকানে হামলা চালিয়েছে। তিনি পুরো ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করেন।

সংঘর্ষের সময় হান্নান পক্ষের লোকজন রাসেল মিয়া (৪৫) নামে একজনকে আজমিরীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। তবে নিহতের শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন আজমিরীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকবর আলী।

তিনি আরও জানান, ফেসবুক পোস্টকে কেন্দ্র করেই সংঘর্ষ হয়েছে এবং উভয় পক্ষের অনেকেই আহত হয়েছেন। এলাকাজুড়ে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

আল কোরআন সওদাগর বলেন, “হান্নান মিয়া আগেও আমাদের পরিবারকে নিয়ে নানা মন্তব্য করতেন। এবার মৃত বাবাকে নিয়ে মিথ্যা তথ্য ছড়ানোয় বিষয়টি জানতে চাইতেই হামলার শিকার হতে হয়।”

এ ঘটনায় এলাকায় এখনো উত্তেজনা বিরাজ করছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর টহল জোরদার করা হয়েছে। স্থানীয়দের দাবি—ঘটনার নেপথ্যের সত্য উদঘাটনে নিরপেক্ষ তদন্ত প্রয়োজন।

google news সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

X