

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


সেন্টমার্টিনের দক্ষিণে বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরতে গিয়ে আবারও মিয়ানমারের সশস্ত্র বিদ্রোহী সংগঠন আরাকান আর্মির (এএ) হাতে অপহৃত হয়েছেন বাংলাদেশের ১৩ জেলে। বুধবার বিকেলে কক্সবাজারের টেকনাফ পৌরসভার কায়ুকখালী বোটমালিক সমিতির সভাপতি সাজেদ আহমেদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, তার ঘাটের দুটি ট্রলার সাগরে মাছ ধরতে যায়। এ সময় সেন্টমার্টিনের দক্ষিণে মিয়ানমারের জলসীমার কাছাকাছি অবস্থান করলে আরাকান আর্মির সদস্যরা ধাওয়া করে ট্রলার দুটি আটক করে এবং ১৩ জেলেকে ধরে নিয়ে যায়। একটি ট্রলারের মালিকের পরিচয় পাওয়া গেলেও অন্যটির মালিক সম্পর্কে এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
এ ঘটনার পর উপকূলজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে জেলেদের মাঝে। ট্রলার মালিক মো. সৈয়দ আলম বলেন, ‘আরাকান আর্মির ভয়ে এখন নাফনদী বা সাগরে মাছ শিকারে যাওয়া দুঃসাধ্য হয়ে পড়েছে। প্রায় প্রতিদিনই জেলেদের ধরে নিয়ে যাচ্ছে তারা। এবার একটি ট্রলারের ইঞ্জিন বিকল হয়ে গেলে সুযোগে আরাকান আর্মি সেটিসহ আরও একটি ট্রলার আটক করে। দুই ট্রলারে ১৩ জেলেকে ধরে নিয়ে গেছে। যদি এভাবে চলতে থাকে, তবে জেলে-ট্রলার মালিকদের জীবনে ভয়াবহ দুর্দিন নেমে আসবে। আমরা সরকারের দ্রুত হস্তক্ষেপ চাই।’
এদিকে মিয়ানমারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম গ্লোবাল আরাকান নেটওয়ার্ক জানিয়েছে, গত ২৮ অক্টোবর থেকে আরাকান আর্মির উপকূলীয় নিরাপত্তা ইউনিট সমুদ্রপথে টহল জোরদার করেছে। তাদের দাবি, আরাকান রাজ্যের জলসীমা অতিক্রম করে মাছ ধরার অভিযোগে বেশ কিছু বাংলাদেশি ট্রলার শনাক্ত করা হয়েছে। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ১৮ জুলাই পর্যন্ত তারা অন্তত ১৮৮ জন বাংলাদেশি জেলে ও ৩০টি নৌকা আটক করে পরে ছেড়ে দেয়। কিন্তু আইন অমান্য করার কারণে এবার পুনরায় ট্রলার আটক করা হচ্ছে বলে উল্লেখ করেছে গণমাধ্যমটি।
এ বিষয়ে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, ‘ট্রলারসহ কিছু জেলেকে ধরে নিয়ে যাওয়ার খবর ট্রলার মালিকদের কাছ থেকে পেয়েছি। বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অবহিত করা হয়েছে।’
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সূত্রে জানা গেছে, গত ১১ মাসে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে নাফ নদী ও সংলগ্ন সাগর এলাকা থেকে অন্তত ৩৫০ জন জেলেকে অপহরণ করেছে আরাকান আর্মি। বিজিবির সহায়তায় এর মধ্যে প্রায় ২০০ জনকে কয়েক দফায় ফেরত আনা সম্ভব হয়েছে। এখনো ১৫০ জনের বেশি জেলে তাদের কবজায় রয়েছে।
স্থানীয়দের মতে, আরাকান আর্মির তৎপরতা ও অপহরণ বেড়ে যাওয়ায় সাগরে নামতে ভয় পাচ্ছেন জেলেরা। ফলে উপকূলের হাজারো পরিবার জীবিকার অনিশ্চয়তায় পড়েছে।
মন্তব্য করুন