শনিবার
২০ ডিসেম্বর ২০২৫, ৫ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শনিবার
২০ ডিসেম্বর ২০২৫, ৫ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ওসমান হাদির শোকে কাঁদছে নলছিটি গ্রাম

এনপিবি ডেস্ক
প্রকাশ : ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ০১:১৭ পিএম
ওসমান হাদির নিজের এলাকা
expand
ওসমান হাদির নিজের এলাকা

ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার খাসমহল পৌর এলাকায় আজ নেমে এসেছে গভীর নীরবতা। এক সময়ের টিনে ঘেরা ছোট্ট ঘরটি এখন শুধুই স্মৃতির প্রতীক—যেখান থেকে শুরু হয়েছিল তরুণ নেতা সৈয়দ শরীফ ওসমান হাদির জীবন। তার মৃত্যুর খবরে শোকে আচ্ছন্ন পুরো গ্রাম।

সকাল থেকেই হাদির গ্রামের বাড়িতে ভিড় জমাচ্ছেন অসংখ্য মানুষ। পরিচিত-অপরিচিত সবাই এসেছেন শেষ শ্রদ্ধা জানাতে। কেউ নির্বাক হয়ে দাঁড়িয়ে আছেন, আবার কারও চোখের পানি থামছে না। প্রিয় মানুষটির শেষ দেখা পাওয়ার অপেক্ষায় সময় গুনছেন স্বজন ও এলাকাবাসী।

পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, হাদির ইচ্ছা ছিল তাকে তার বাবার কবরের পাশে সমাহিত করার। তবে দাফনের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত পারিবারিক আলোচনার মাধ্যমেই নেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে।

১৯৯৩ সালে জন্ম নেওয়া ওসমান হাদি ছিলেন মাওলানা আবদুল হাদি ও তাসলিমা হাদির ছয় সন্তানের মধ্যে কনিষ্ঠ। সাধারণ একটি পরিবারে বেড়ে ওঠা এই তরুণ ছোটবেলা থেকেই ছিলেন দৃঢ় মনোবল ও প্রতিবাদী চেতনায় বিশ্বাসী। নেছারাবাদ এনএস কামিল মাদরাসা থেকে দাখিল ও আলিম শেষ করে তিনি পরবর্তীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করেন।

স্থানীয়দের মতে, হাদি কেবল একজন ব্যক্তি নন—চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানে সাহসী নেতৃত্ব দেওয়া এক শক্ত কণ্ঠস্বর ছিলেন তিনি। তার আকস্মিক মৃত্যু কেউ সহজে মেনে নিতে পারছেন না। কেউ কান্নায় ভেঙে পড়ছেন, কেউ ক্ষোভের সঙ্গে বলছেন—এমন মৃত্যু কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।

শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) সকাল থেকে হাদির জরাজীর্ণ বাড়ির সামনে মানুষের ঢল নামে। বাড়িতে অবস্থানরত তার বোনসহ পরিবারের সদস্যদের সান্ত্বনা দিতে গিয়ে অনেকেই আবেগ ধরে রাখতে পারছেন না। কেউ স্মৃতিচারণ করছেন, আবার অনেকের কণ্ঠে একটাই দাবি—এই হত্যার সঠিক বিচার চাই।

এদিকে বরিশালের বাবুগঞ্জে হাদির শ্বশুরবাড়িতেও চলছে শোকের পরিবেশ। অল্প বয়সে স্বামীহারা স্ত্রী ও একমাত্র সন্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন স্বজনরা। তাদের আকুতি—আর কোনো পরিবার যেন এমন বেদনার মুখে না পড়ে।

উল্লেখ্য, গত ১২ ডিসেম্বর রাজধানীর পুরানা পল্টনে নির্বাচনী প্রচারণাকালে সন্ত্রাসীদের গুলিতে গুরুতর আহত হন ওসমান হাদি। প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং পরে এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয় তাকে। উন্নত চিকিৎসার আশায় ১৫ ডিসেম্বর সিঙ্গাপুর নেওয়া হলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাতে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

google news সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

X