

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


ইউরোপীয় ইউনিয়নকে কঠোর সমালোচনা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। পলিটিকোকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি অভিযোগ করেন— দুর্বল নেতৃত্বের কারণে ইউরোপ একসময় শক্তিশালী অঞ্চল হলেও এখন তা ক্ষয়িষ্ণু অবস্থায় গেছে।
অভিবাসন নীতি, ইউক্রেন যুদ্ধ এবং নতুন মার্কিন নিরাপত্তা কৌশল সব মিলিয়ে ট্রাম্পের মন্তব্য ইউরোপ-আমেরিকা সম্পর্কে স্পষ্ট টানাপোড়েন তৈরি করেছে। ইউরোপীয় কাউন্সিলও যুক্তরাষ্ট্রকে ইউরোপের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার তাগাদা দিয়েছে।
হোয়াইট হাউসে ফিরে আসার পর থেকে ট্রাম্প রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধ থামাতে উদ্যোগী হন। পুতিন, জেলেনস্কি এবং ইউরোপের বিভিন্ন নেতাদের সঙ্গে কথা বলেন, কারণ পশ্চিমা দেশগুলো ইউক্রেনকে বড় অঙ্কের সামরিক সহায়তা দিচ্ছে।
গত নভেম্বরে যুদ্ধবিরতির জন্য ট্রাম্প ২৮ দফা পরিকল্পনা দেন। কিন্তু ইউরোপের বেশির ভাগ রাষ্ট্রপ্রধানের মতে, তার এই প্রস্তাব রাশিয়ার পক্ষে ঝুঁকে আছে বলে সম্পর্কের টানাপোড়েন আরও গভীর হয়।
ইউক্রেন বিষয়ে অবস্থান পরিষ্কার করতে ব্রিটেন, ফ্রান্স ও জার্মানির শীর্ষ নেতারা লন্ডনে বৈঠক করেন, যেখানে জেলেনস্কিও উপস্থিত ছিলেন। তারা জানান, রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ করতে মার্কিন প্রচেষ্টায় জটিলতা তৈরি হয়েছে। একইসঙ্গে রাশিয়ার ওপর আরও চাপ বৃদ্ধির পরামর্শ দেন।
এদিকে মার্কিন প্রতিনিধিরা ফ্লোরিডায় ইউক্রেনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে ট্রাম্পের প্রস্তাব বাস্তবায়নের চাপ দেয়। কিন্তু কিয়েভ তা প্রত্যাখ্যান করে। কারণ মার্কিন পরিকল্পনায় বলা হয়েছে ইউক্রেন পূর্বাঞ্চল থেকে সেনা ফিরিয়ে নেবে এবং এলাকা রাশিয়ার হাতে ছেড়ে দেবে। জেলেনস্কির মতে, এমন চুক্তি করলে ভবিষ্যতে রাশিয়ার হামলার ঝুঁকি আরও বাড়বে।
ইউরোপীয় নেতারা এমন যুদ্ধবিরতি চান যা ইউক্রেনের জন্য স্থায়ী নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে। তবে ট্রাম্প এখনো সে ধরনের কোনো নিশ্চয়তা দেননি। ফলে ইউক্রেন ইস্যুতে ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান ভিন্ন পথে এগোচ্ছে, আর রাশিয়ার হামলাও অব্যাহত রয়েছে।
এ পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্র ৩৩ পৃষ্ঠার নতুন জাতীয় নিরাপত্তা নথি প্রকাশ করেছে। এতে দাবি করা হয়েছে িইউরোপ সভ্যতার দিক থেকে সংকটে রয়েছে এবং রাশিয়াকে যুক্তরাষ্ট্রের সরাসরি হুমকি বলা হয়নি। নথির ভাষা নিয়ে ইউরোপীয় কর্মকর্তাদের অভিযোগ এটি ক্রেমলিনের বক্তব্যের সঙ্গে অনেকটাই সামঞ্জস্যপূর্ণ।
ইইউর বিভিন্ন কর্মকর্তা জানান, যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নথির ভাষা উদ্বেগজনক। ট্রাম্পও সাক্ষাৎকারে বলেন, ইউরোপীয় নেতৃত্ব দুর্বল এবং অভিবাসন নীতি তাদের আরও দুর্বল করে তুলছে। তবে তিনি হাঙ্গেরি ও পোল্যান্ডের অবস্থানকে সমর্থন করেন।
ইউরোপীয় কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট আন্তোনিও কস্তা বলেন, ওয়াশিংটন যদি ইউরোপের জাতীয়তাবাদী রাজনীতিকে উৎসাহ দেয়, তা ইউরোপের জন্য বিপজ্জনক হবে। জলবায়ু ইস্যুতেও তার সঙ্গে ট্রাম্পের মতবিরোধ রয়েছে। অন্যদিকে ইউরোপীয় নীতি বিশ্লেষক মিনা অ্যান্ডারের মন্তব্য ট্রাম্প প্রশাসন এখন প্রকাশ্যভাবেই ইউরোপবিরোধী মনোভাব দেখাচ্ছে।
মন্তব্য করুন

