শুক্রবার
৩১ অক্টোবর ২০২৫, ১৫ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শুক্রবার
৩১ অক্টোবর ২০২৫, ১৫ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ত্রিপক্ষীয় উষ্ণতা: বাংলাদেশের জন্য সুযোগ নাকি চ্যালেঞ্জ?

এনপিবিনিউজ ডেস্ক
প্রকাশ : ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৯:২৬ এএম আপডেট : ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৯:২৯ এএম
চীনের তিয়ানজিনে সাম্প্রতিক বৈঠকে তিন দেশের প্রেসিডেন্ট
expand
চীনের তিয়ানজিনে সাম্প্রতিক বৈঠকে তিন দেশের প্রেসিডেন্ট

চীনের তিয়ানজিনে সাম্প্রতিক বৈঠকে দেশটির প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের আন্তরিক যোগাযোগ আন্তর্জাতিক পরিসরে বিশেষ দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।

বাংলাদেশ ‘সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশন’ (এসসিও)-এর সদস্য না হলেও এই মৈত্রীর ইতিবাচক প্রভাব পরোক্ষভাবে বাংলাদেশকেও ছুঁতে পারে বলে বিশ্লেষকদের মত। কারণ আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত হলে তার সুফল স্বাভাবিকভাবেই বাংলাদেশের অর্থনীতি ও নিরাপত্তায় প্রতিফলিত হবে।

চীন-ভারত সম্পর্ক: স্থায়িত্ব নিয়ে প্রশ্ন

চীন ও ভারতের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক দীর্ঘদিন ধরেই অস্থির। সীমান্তে সংঘর্ষ, অরুণাচলকে ঘিরে বিরোধ, দালাইলামা ইস্যু কিংবা গ্যালভান উপত্যকার উত্তেজনা এখনো অমীমাংসিত। তাই তাদের মধ্যে সদ্য গড়ে ওঠা উষ্ণতা কতটা স্থায়ী হবে, তা নিয়ে সংশয় আছে। তবুও, যদি এই উত্তেজনা প্রশমিত হয়, তবে তা শুধু দুই দেশের জন্য নয়, বরং পুরো দক্ষিণ এশিয়ার জন্য শুভ সংবাদ হবে। ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে বাংলাদেশও এর সুফল পেতে পারে।

মার্কিন প্রশাসনের উচ্চশুল্ক নীতির ফলে ভারতের ওপর অর্থনৈতিক চাপ সৃষ্টি হয়েছে। অনেকে মনে করেন, এই পরিস্থিতি মোদিকে চীনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হওয়ার পথে ঠেলে দিয়েছে। তবে এটি কৌশলগত বার্গেনিংয়ের অংশ কিনা—এখনই নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। যুক্তরাষ্ট্রের চাপ কমলে ভারত আবার পূর্বের অবস্থানে ফিরে যাবে কি না, সেটাই দেখার বিষয়।

ভারতের সঙ্গে রাশিয়ার জ্বালানি ও অস্ত্রবাণিজ্য নতুন কিছু নয়। তবে সাম্প্রতিক সময়ে রাশিয়া থেকে অশোধিত তেল আমদানি করে ভারত উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক সুবিধা পেয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র এর প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করলেও ভারত তার অবস্থান বদলায়নি। এতে রাশিয়া-ভারত সম্পর্কের গভীরতা আরও স্পষ্ট হয়েছে।

চীন ও ভারতের মধ্যে সমঝোতা তৈরি হলে মিয়ানমারের চলমান অস্থিরতা নিয়ন্ত্রণে সহায়ক হতে পারে। এতে বাংলাদেশও পরোক্ষভাবে উপকৃত হবে, কারণ মিয়ানমারের সংকট বারবার এই অঞ্চলের নিরাপত্তা ও মানবিক পরিস্থিতিকে নাজুক করেছে। দুই প্রতিবেশী শক্তি যদি ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে, তবে পশ্চিমা প্রভাবশালী রাষ্ট্রগুলোর হস্তক্ষেপও কমতে পারে।

এসসিওতে বাংলাদেশ এখনো যোগ দেয়নি, যদিও আগ্রহ প্রকাশ করেছে। একসময় চীনের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা হলেও পাকিস্তানের আপত্তির কারণে প্রক্রিয়া এগোয়নি। বর্তমানে বাংলাদেশে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার থাকায় নতুন কোনো পররাষ্ট্রনীতিগত বড় সিদ্ধান্ত তাৎক্ষণিকভাবে নেওয়ার সম্ভাবনা নেই। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, চীন-ভারত সম্পর্ক যতটা সুদৃঢ় হবে, বাংলাদেশের অর্থনীতি বিশেষ করে আমদানি বাণিজ্য ততটা সহজ হবে।

google news সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন