

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


রাজপদচ্যুত প্রিন্স অ্যান্ড্রু ২০০০ সালের শুরুর দিকে 'মধ্যবয়সী সংকট'-এর সময় সরকারি অর্থে বিদেশ সফরের আড়ালে একাধিক বিলাসবহুল ছুটি কাটিয়েছিলেন বলে গুরুতর অভিযোগ তুলেছেন ব্রিটিশ রাজপরিবারের ইতিহাসবিদ অ্যান্ড্রু লাউনি। এই বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের জের ধরে শুক্রবার সকালে তাঁকে যুক্তরাজ্যের ‘অফিশিয়াল রোল অব দ্য পিয়ারেজ’ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
ডেইলি মেইলের পডকাস্ট ‘ডিপ ডাইভ, দ্য ফল অব দ্য হাউস অব ইয়র্ক’-এ ইতিহাসবিদ অ্যান্ড্রু লাউনি দাবি করেন: ২০০১ সালে অ্যান্ড্রুর বয়স ছিল ৪১ বছর। মধ্যবয়সী সঙ্কটে তিনি তখন প্রচুর নারীর পেছনে ছুটতে শুরু করেন। তিনি করদাতার অর্থে অর্থায়িত ট্রেড এনভয় হিসেবে বিদেশ সফরের সুযোগ নিয়ে এসব সফরকে নিজের ছুটি হিসেবে ব্যবহার করতেন।
লাউনি জানান, প্রতিটি সরকারি সফরে অ্যান্ড্রু দুই সপ্তাহের ‘ব্যক্তিগত সময়’ রাখতেন, যার বিলাসবহুল খরচ বহন করতেন করদাতারা।
ইতিহাসবিদ লাউনি একটি নির্দিষ্ট সফরের উল্লেখ করে আরও গুরুতর অভিযোগ আনেন, একবার থাইল্যান্ড সফরে রাজার জন্মদিন উদ্যাপন উপলক্ষে তিনি যুক্তরাজ্যের প্রতিনিধি হিসেবে যান। কিন্তু দূতাবাসে না থেকে নিজের পছন্দমতো পাঁচ তারকা হোটেলে ওঠেন। চার দিনে ওই হোটেলে ৪০ জন যৌনকর্মী আনা হয়েছিল, যা কূটনীতিক ও অন্যদের সহায়তায় ঘটেছিল।"
লাউনির দাবি, এই তথ্যটি একাধিক সূত্র, এমনকি থাইল্যান্ডের রাজপরিবারের এক সদস্যের মাধ্যমেও যাচাই করা হয়েছে।
সাবেক ব্রিটিশ কূটনীতিক ইয়ান প্রাউড, যিনি থাইল্যান্ডে যুক্তরাজ্য দূতাবাসের রাজনৈতিক শাখার প্রধান ছিলেন, নিশ্চিত করেন যে অ্যান্ড্রুর নারীসঙ্গের বিষয়টি তখন দূতাবাসের অভ্যন্তরে ‘খোলামেলাভাবে জানা’ ছিল।
তিনি জানান, অ্যান্ড্রু ব্যাংককের একটি নির্দিষ্ট বিলাসবহুল হোটেলেই থাকতেন, কারণ সেখানে তাঁর পছন্দের নাইটক্লাব ছিল।
এই সব বিতর্কের ধারাবাহিকতায় শুক্রবার সকালে প্রিন্স অ্যান্ড্রুকে ‘অফিশিয়াল রোল অব দ্য পিয়ারেজ’ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে, যেখানে দেশটির সব ডিউক ও অভিজাতদের আনুষ্ঠানিক তালিকা সংরক্ষিত থাকে। এটি তাঁর রাজকীয় উপাধি ও মর্যাদা আনুষ্ঠানিকভাবে প্রত্যাহারের একটি বড় পদক্ষেপ।
রাজপ্রাসাদের এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, রাজা আজ আনুষ্ঠানিকভাবে প্রিন্স অ্যান্ড্রুর স্টাইল, উপাধি ও সম্মান প্রত্যাহারের প্রক্রিয়া শুরু করেছেন। এখন থেকে তিনি অ্যান্ড্রু মাউন্টব্যাটেন উইনডসর নামে পরিচিত হবেন।
জেফ্রি এপস্টিন কেলেঙ্কারির সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে বিতর্কের পর বাকিংহাম প্যালেস নিশ্চিত করেছে যে অ্যান্ড্রু উইনডসর আবাস ছাড়তে সম্মত হয়েছেন। যদিও তিনি অভিযোগ অস্বীকার করেছেন, তবুও প্যালেস এটিকে ‘গুরুতর বিচারগত ভুল’ বলে আখ্যা দিয়েছে।
বর্তমানে ডিউক অব ইয়র্ক উপাধিধারী অ্যান্ড্রু এখনও সিংহাসনের উত্তরাধিকার ক্রমে অষ্টম স্থানে রয়েছেন। তাঁকে ওই তালিকা থেকে সম্পূর্ণ সরাতে হলে সংসদে আইন পাসের পাশাপাশি কমনওয়েলথভুক্ত সব দেশের সম্মতি প্রয়োজন।
মন্তব্য করুন
