

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


কেয়ামতের দিন মানুষ জান্নাতের প্রতি এবং জাহান্নামের প্রতি আলাদাভাবে দৃষ্টি দিতে সক্ষম হবে না; বরং মানুষ তার আমলনামার সামনে দেখবে, যা তার ডান হাতে বা বাম হাতে দেওয়া হবে এবং সেটি তার মুক্তি বা ধ্বংসের কারণ হবে। জান্নাত এবং জাহান্নামকে সরাসরি দেখার কথা নয়, বরং আমলনামা অনুযায়ী মানুষ তার চূড়ান্ত গন্তব্য সম্পর্কে নিশ্চিত হবে।
আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন
তারা তো শুধু সেই দিনের অপেক্ষায় আছে, যেদিন হঠাৎ করে কেয়ামত এসে যাবে। অথচ এর পূর্বলক্ষণ তো স্পষ্ট হয়ে গেছে। কেয়ামত উপস্থিত হলে তারা আর কেমন করে উপদেশ গ্রহণ করবে? (সুরা মুহাম্মদ, আয়াত ১৮)
শিঙ্গায় ফুঁ দেওয়ার পর আর কোনো আত্মীয়তা থাকবে না, কেউ কারো খোঁজও নেবে না। যাদের আমলের পাল্লা ভারী হবে তারা হবে সফলকাম। আর যাদের পাল্লা হালকা হবে, তারা নিজেরাই ক্ষতিগ্রস্ত—তাদের জন্য চিরস্থায়ী শাস্তি নির্ধারিত। (সুরা মুমিনূন, আয়াত ১০১-১০৩)
আল্লাহ বলেন, আমরা প্রত্যেক মানুষের সৎ-অসৎ কাজের রেকর্ড তার গলায় ঝুলিয়ে দেবো। কেয়ামতের দিন তার সামনে একটি খোলা বই উপস্থাপন করা হবে। তাকে বলা হবে ‘তুমি নিজেই তোমার আমলনামা পড়ে নাও। আজ তোমার নিজের হিসাবের জন্য তুমি নিজেই যথেষ্ট। (সুরা বনি ইসরাঈল, আয়াত ১৩-১৪)
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, কেয়ামত আসবে হঠাৎ করে। কেউ কাপড় কেনাবেচার জন্য সামনে মেলে ধরবে, কিন্তু দরদাম শেষ করার আগেই কেয়ামত এসে যাবে। কেউ দুধ দোহন করে ঘরে বসবে, কিন্তু পান করতে পারবে না। কেউ পানি সংগ্রহ করবে, কিন্তু তা খাওয়ার সুযোগ পাবে না। এমনকি কেউ লোকমা হাতে তুলে নেবে, মুখে নেওয়ার আগেই কেয়ামত সংঘটিত হবে। (সহিহ বুখারি: ৬৫০৬)
আদী ইবন হাতিম (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুল ( সা.) বলেছেন, কেয়ামতের দিন আল্লাহ প্রতিটি মানুষের সঙ্গে সরাসরি কথা বলবেন। তখন কারও পাশে অনুবাদক বা সুপারিশকারী থাকবে না। সে ডান দিকে তাকালে তার আমলই দেখতে পাবে। বাম দিকে তাকালে তার কর্মই দেখতে পাবে। সামনে তাকালে জাহান্নাম দেখতে পাবে। তাই যে সামান্য দান করেও নিজেকে আগুন থেকে রক্ষা করতে পারে, সে যেন তা অবশ্যই করে। (ইবন মাজাহ: ১৮৫)
এক হাদিসে ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে জানা যায়
রাসুল (সা.) একদিন উম্মুল মুমিনীন জুয়াইরিয়া (রা.)-কে দীর্ঘ সময় নামাজের স্থানে দেখতে পান। তিনি বললেন, আমি এখন পর্যন্ত কয়েকটি বাক্য তিনবার পড়েছি। এগুলোর ওজন তোমার এই সময়ের আমলের থেকেও ভারী হবে।
সেই দোয়া হলো, سُبْحَانَ اللهِ وَبِحَمْدِهِ عَدَدَ خَلْقِهِ، وَرِضَا نَفْسِهِ، وَزِنَةَ عَرْشِهِ، وَمِدَادَ كَلِمَاتِهِ
উচ্চারণ: সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি আদাদা খালকিহি, ওয়া রিদা নাফসিহি, ওয়াজিনাতা আরশিহি, ওয়া মিদাদা কালিমাতিহি।
অর্থ: আমি আল্লাহর পবিত্রতা ও প্রশংসা বর্ণনা করছি—তার সৃষ্টির সংখ্যা পরিমাণ, তাঁর সন্তুষ্টির সমান, তাঁর আরশের ভারসমান এবং তাঁর কালামগুলোর কালি সমপরিমাণ। (আবু দাউদ: ১৫০৩)
কেয়ামত হবে নিশ্চিত। সেদিন প্রতিটি মানুষ একা দাঁড়াবে আল্লাহর সামনে, নিজের আমলই হবে তার একমাত্র সঙ্গী। তাই এখনই প্রয়োজন নেক আমল জমা করা ও আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করা।
মন্তব্য করুন
