

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদিকে লক্ষ্য করে চালানো হামলাটি ছিল পূর্বপরিকল্পিত একটি অপারেশন এমন তথ্য উঠে এসেছে গোয়েন্দা তদন্তে। এই ঘটনার প্রধান অভিযুক্ত হিসেবে চিহ্নিত ফয়সাল করিম মাসুদকে ঘিরে একের পর এক নতুন ও চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে আসছে।
তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বিদেশ থেকে দেশে ফিরে ফয়সাল একটি ছোট শুটার গ্রুপ গড়ে তোলে। লক্ষ্য বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে প্রথমেই হাদির সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্ক তৈরি করা হয়। মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যেই সেই পরিকল্পনা বাস্তবে রূপ নেয়। হামলার পরপরই মূল অভিযুক্ত দেশ ত্যাগ করে এবং প্রমাণ নষ্ট করার চেষ্টাও করা হয়।
গোয়েন্দা সংস্থার তথ্যমতে, ইনকিলাব মঞ্চের কালচারাল সেন্টারেই হাদি ও ফয়সালের প্রথম পরিচয়। সিসিটিভি ফুটেজ ও অন্যান্য তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, কীভাবে ধাপে ধাপে হাদির আশপাশে নিজেকে যুক্ত করে ফয়সাল পুরো পরিকল্পনা এগিয়ে নেয়।
গত ৪ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় ফয়সাল তার এক সহযোগীকে নিয়ে কালচারাল সেন্টারে যান। সেখানে সংক্ষিপ্ত বৈঠকে তিনি হাদির সঙ্গে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেন। এটিকেই তদন্তকারীরা প্রাথমিক আস্থার ভিত্তি হিসেবে দেখছেন।
এর কয়েক দিন পর, ৯ ডিসেম্বর রাতে আবারও সেখানে উপস্থিত হন ফয়সাল, সঙ্গে ছিলেন আরেক সহযোগী। ওই বৈঠকে নির্বাচনী কার্যক্রম নিয়ে আলোচনা হয় এবং এরপর থেকেই ফয়সাল হাদির প্রচারণা টিমের সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়েন। ১০ ডিসেম্বর তিনি সরাসরি প্রচারণায় অংশ নেন।
তদন্তে বলা হয়েছে, প্রচারণায় যুক্ত হওয়ার পরই হামলার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এরপর নরসিংদী, সাভার ও মানিকগঞ্জসহ বিভিন্ন এলাকায় অবস্থান পর্যবেক্ষণ করা হয়। হামলার আগের রাতে ফয়সাল পশ্চিম আগারগাঁওয়ে অবস্থান নেন এবং পরদিন ভোরে একটি রিসোর্টে যান।
রিসোর্টের নিরাপত্তা ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়, ভোরের দিকে ফয়সাল সেখানে পৌঁছান এবং কয়েকজন ঘনিষ্ঠজনের সঙ্গে সময় কাটান। তদন্তকারীদের দাবি, সেখানেই তিনি তার পরিকল্পনার কথা প্রকাশ করেন এবং ঘটনার পর যোগাযোগ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন।
পরদিন সকালে তিনি সেগুনবাগিচায় হাদির নির্বাচনী কার্যক্রমে যোগ দেন। প্রচারণা শেষে হাদি মতিঝিলের দিকে গেলে ফয়সাল ও তার সহযোগীরা তাকে অনুসরণ করতে থাকেন। নামাজ শেষে পুনরায় যাত্রাকালে একটি নিরিবিলি স্থানে হামলা চালানো হয়।
গুরুতর আহত অবস্থায় হাদিকে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং পরে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য ১৫ ডিসেম্বর তাকে বিদেশে নেওয়া হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৮ ডিসেম্বর তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
পরবর্তীতে মরদেহ দেশে ফিরিয়ে এনে ঢাকায় দাফন সম্পন্ন করা হয়।
মন্তব্য করুন

