

সম্পাদকঃ মোঃ আল হাদী
৪১৬ তোপখানা রোড, শিশু কল্যাণ পরিষদ, ঢাকা, বাংলাদেশ
টেলিফোনঃ +৮৮(০২) ৫৮৩১২৯৫৮, ৫৮৩১২৮২২ফেক্সঃ ৫৮৩১২৯৮১[email protected]


রংপুরের পীরগাছা উপজেলা-তে মানুষের শরীরে অ্যানথ্রাক্সের জীবাণু পাওয়া গেছে বলে নিশ্চিত করেছে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর)। উপজেলা ও জেলা প্রশাসন দ্রুত ব্যবস্থা নিয়ে আক্রান্তদের চিকিৎসা করছেন এবং গবাদি পশুর মধ্যে রোগ নিয়ন্ত্রণে তৎপরতা চালাচ্ছেন।
পীরগাছার কিছু বাড়ির ফ্রিজে রাখা গরুর মাংসেও অ্যানথ্রাক্স জীবাণু পাওয়া গেছে। জেলার ডেপুটি সিভিল সার্জন মোঃ রুহুল আমিন জানান, আরও দুটি উপজেলার সন্দেহভাজন রোগীর নমুনা আইইডিসিআরকে পাঠানো হয়েছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা জানিয়েছেন, গত দেড় মাসে কয়েকটি ইউনিয়নের অন্তত ৩০ জন অ্যানথ্রাক্স উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন এবং বর্তমানে সুস্থ আছেন। তবে দুজনের মৃত্যুর খবর ভিত্তিহীন।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মোঃ একরামুল হক মন্ডল বলেন, গত দেড় মাসে অন্তত পাঁচটি অসুস্থ গরু জবাই হয়েছে। এর মধ্যে দুটি গরুর মাংস স্থানীয়দের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছিল। আক্রান্তদের অনেকেই সেই মাংসের সংস্পর্শে এসেছিলেন।
আইইডিসিআরের পরিচালক তাহমিনা শিরীন জানিয়েছেন, ১৩ ও ১৪ সেপ্টেম্বর এলাকার ১২ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়, যাদের মধ্যে ৮ জনের শরীরে অ্যানথ্রাক্স জীবাণু শনাক্ত হয়েছে।
অ্যানথ্রাক্স সাধারণত গরু, ছাগল, মহিষের মধ্যে দেখা যায়। আক্রান্ত প্রাণীর মাংস, রক্ত, লালা, হাড় বা নাড়িভুঁড়ির সংস্পর্শে মানুষও সংক্রমিত হতে পারে, তবে মানুষ থেকে মানুষে রোগ ছড়ায় না। প্রধান উপসর্গগুলো হলো চামড়ায় ক্ষত, ফোঁড়া, জ্বর এবং গলা ও মাংসপেশিতে ব্যথা।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ মুশতাক হোসেন বলেন, অ্যানথ্রাক্সের উপযুক্ত চিকিৎসা আছে। অসুস্থ গরু মারা গেলে মাটির গভীরে পুঁতে ফেলতে হবে। পশুকে নিয়মিত টিকা দিতে হবে এবং সংক্রমণ ধরা পড়লে দ্রুত চিকিৎসা নিতে হবে।
স্থানীয় স্বাস্থ্য বিভাগের তৎপরতায় পীরগাছাসহ জেলার কয়েকটি উপজেলায় দেড় লাখের বেশি গবাদি পশুকে অ্যানথ্রাক্স ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে। প্রশাসন কসাইখানা ও গরুচাষীদের অসুস্থ গরু বা ছাগল জবাই বন্ধ রাখার ব্যবস্থা নিয়েছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মুহাম্মদ তানভীর হাসনাত রবিন জানান, “আগস্টের শেষ দিক থেকে পীরগাছায় অ্যানথ্রাক্স উপসর্গ নিয়ে রোগীরা আসা শুরু করেছেন। যারা আক্রান্ত হয়েছেন, তাদের অনেকেই এখন সুস্থ। সদর ও পারুল ইউনিয়নের বাইরে নতুন আক্রান্তের খবর পাওয়া যায়নি।”
চিকিৎসক ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, কাঁচা মাংসের সংস্পর্শে যারা আসেন, তারা অ্যানথ্রাক্সে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে থাকেন। তবে সঠিক স্বাস্থ্যবিধি মেনে রান্না করলে জীবাণু ধ্বংস হয় এবং সাধারণ মানুষের জন্য ঝুঁকি খুব কম।
সূত্র: বিবিসি।
 সর্বশেষ খবর পেতে  Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
    
    
    সর্বশেষ খবর পেতে  Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
    
মন্তব্য করুন
 
 
                    